Dhaka 10:50 am, Sunday, 19 May 2024
News Title :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে দুর্নীতি বিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ম্যারাথন প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত বিএনপির আমলে ঋণ খেলাপির তালিকা সবচেয়ে বেশি ছিল : আইনমন্ত্রী দাঙ্গা ভুলে শান্তির দাবীতে সরাইলে শিশু শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন সরাইলে আ’লীগ নেতাসহ ৩০ নদী দখলদার চিহ্নিত ১৫ দিনের মধ্যে উচ্ছেদের নোটিশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত সরাইলে শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহণে স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক কর্মশালা বিজয়নগরে ভূমিদস্যু ইউনুসের অত্যাচারে টিকতে না পেরে থানায় অভিযোগ আশুগঞ্জে দুর্নীতি বিরোধী রচনা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত সরাইলে অগ্নিকান্ডে ১৫ দোকান পুড়ে ছাঁই দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

আওয়ামীলীগের সম্মেলন সভাপতি পদপ্রার্থীর খরচ ৪ লক্ষাধিক টাকা গণতন্ত্রের কবর রচনার অভিযোগ যুবলীগ নেতার

  • Reporter Name
  • Update Time : 10:34:15 pm, Sunday, 17 July 2022
  • 711 Time View

সরাইল উপজেলার অরূয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে গতকাল শনিবার রাতে। এ সম্মেলনকে ঘিরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ওই ইউনিয়নের আনাচ কানাচে চলছিল আলোচনা সমালোচনা। ভোটের জন্য ওয়ার্ড কমিটি গুলোতে এক ঘরের ৫-৬ জন ও অধিকাংশ বিএনপি দলীয় লোকজনকে অন্তর্র্ভূক্ত করার অভিযোগ করছেন আ’লীগ দলের লোকজনই। তাই সম্মেলনকে নিয়ে আতঙ্কগ্রস’ও ছিলেন অনেকে। পুলিশ প্রশাসনও ছিল খুবই সতর্ক অবস্থানে। ওই সম্মেলনের পুরো ব্যয়ভার বহন করেছেন সভাপতি পদপ্রার্থী আবু তালেব। মোট ৪ লক্ষাধিক টাকা খরচের কথা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। পানিশ্বর ইউনিয়নে ভোট হলেও এখানে হয়নি ভোট। নেতৃবৃন্দের যৌথ সিদ্ধান্তে আবারও সভাপতি হয়েছেন আবু তালেব। আর সাধারণ সম্পাদক করেছেন এড. মো. শফিকুর রহমানকে। এর আগে তিন বছর মেয়াদের কমিটি ৭ বছর চলেছে এ দুইজনের নেতৃত্বেই। যুবলীগ নেতা বোরহান উদ্দিন সহ অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে সম্মেলনের নামে গণতন্ত্রের কবর রচনার অভিযোগও করেছেন। দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, কয়েকবার তারিখ পরিবর্তন হয়ে অবশেষে গত ১৬ জুলাই শনিবার অরূয়াইল ইউনিয়ন আ’লীগের সম্মেলন হয়েছে। আলোচনা সভা ও কমিটি গঠন দুটি ভাগে বিভক্ত ছিল সম্মেলন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে জেলা উপজেলা ও স’ানীয় নেতৃবৃন্দের আলোচনা। শেষের দিকে ইউনিয়ন আ’লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। নতুন করে কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সন্ধ্যায় দ্বিতীয় অধিবেশনে উপজেলা আ’লীগের আহবায়ক এডভোকেট নাজমুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আ’লীগের সহসভাপতি মো. মজিবুর রহমান বাবুল, প্রধান বক্তা ছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের (৩১২) এমপি ও উপজেলা আ’লীগের সদস্য সচিব উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম। বক্তব্য রাখেন- জেলা আ’লীগ নেতা মো. শাহ আলম, সরাইল আ’লীগের যুগ্ম আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মো. আব্দুর রাশেদ প্রমূখ। কমিটি গঠন পক্রিয়ায় শুরূ হলে সভাপতি পদে প্রার্থী হন মো. আবু তালেব ও মুক্তিযোদ্ধা শাহের উদ্দিন। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হন ৬ জন। শাহের উদ্দিনকে বসে যাওয়ার আহবান করেন জেলার জনৈক নেতা। শাহের উদ্দিন ওই প্রস্তাবে রাজি হননি। তিনি তৃণমুলের ভোটারদের সমর্থনের ভিত্তিতে অর্থাৎ ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের প্রস্তাব দেন। জেলা উপজেলার নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। নেতৃবৃন্দ মিলে জুড়িবোর্ড গঠন করে দ্রূত সিদ্ধান্ত নিয়ে সভাপতি পদে আবু তালেব ও সম্পাদক পদে এড. মো. শফিকুল ইসলামের নাম ঘোষণা করেন। এতে সন্তোষ্ট হতে পারেননি অনেকেই। ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, আওয়ামীলীগের গণতন্ত্র কি এমন শিক্ষা দেয়? সভাপতি প্রার্থী শুধু ভোটের জন্য ৪ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলার করেছেন বিএনপির ১২ জনকে। সম্পাদক প্রার্থী নিজের ঘরেই ৮-৯ জনকে ভোটার করেছেন। ৯ ওয়ার্ডের ১৭১ জন ভোটারের মধ্যে ১৩০ জনই বিএনপি’র। অনেক ভোটার চিৎকার করে বলছেন, আমি বিএনপি করি। কোন ফোতে আমাকে আ’লীগের কমিটিতে ভোটার বানাইছে? সব মন গড়া। আর দলবাজি। আওয়ামীলীগের মত দলের কমিটি গঠনে এত অনিয়ম দূর্নীতি কল্পনাও করা যায় না।সভাপতি পদপ্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহের উদ্দিন বলেন, যারা কমিটি গঠন করতে এসেছেন। তারা কি কোন প্রার্থীকে বলতে পারেন? ‘আপনি বসে যান’। আমাকে জেলার নেতারা এমনটি বলেছেন। আমি বলেছি, এর আগেও হুমায়ুন কবিরের আমলে আমাকে দুইবার বসিয়ে দিয়েছেন। এইবার তৃণমূলের নেতাদের মতামত অর্থাৎ আমি ভোট চাই। ভোটে হেরে গেলেও আমার কোন আপসোস থাকবে না। আমার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন। গণতন্ত্রের কবর রচনা করে নিজেদের সমন্বয়ে জুড়িবোর্ড করে ভেতরে গেলেন। আধা ঘন্টা পরে এসে নিজেদের পছন্দের লোকদের নাম ঘোষণা করলেন। এটি দলের জন্য দায়িত্বশীল লোক বাচাইয়ের সঠিক ও গ্রহণযোগ্য পক্রিয়া হতে পারে না। আবু তালেব বলেন, সুন্দর সম্মেলন হয়েছে। অভিযোগ গুলো সঠিক নয়। এ গুলো দলের বিদ্রোহীদের কাজ। আমি ১২ শত লোকের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করেছি কলেজ শিক্ষক মিলনায়তনে। শুধু খাবারেই আমার খরচ হয়েছে আড়াই লক্ষাধিক টাকা। নেতৃবৃন্দ আসবেন। রাস্তায় কাজ করিয়েছি। ইউনিয়নের প্রত্যেক গ্রামে একটি করে নৌকা পাঠিয়ে লোক এনেছি। প্রতি নৌকার ভাড়া ১ হাজার টাকা দিয়েছি। বিশাল প্যান্ডেলের খরচ আমিই দিয়েছি। আমার খরচ ৪ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। সদস্য সচিব উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ভোটে নয়, কনভেনার কমিটির আলোচনার মাধ্যমে কমিটি ঘোষণার কথা স্বীকার করে বলেন, ভোট কেন নয়? এটা আমারও জিজ্ঞাসা। তবে কনভেনার কমিটির সিদ্ধান্তে যা হয়ে গেছে। আমি তার বাহিরে নয় ।

মাহবুব খান বাবুল

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় খবর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে দুর্নীতি বিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

আওয়ামীলীগের সম্মেলন সভাপতি পদপ্রার্থীর খরচ ৪ লক্ষাধিক টাকা গণতন্ত্রের কবর রচনার অভিযোগ যুবলীগ নেতার

Update Time : 10:34:15 pm, Sunday, 17 July 2022

সরাইল উপজেলার অরূয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে গতকাল শনিবার রাতে। এ সম্মেলনকে ঘিরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ওই ইউনিয়নের আনাচ কানাচে চলছিল আলোচনা সমালোচনা। ভোটের জন্য ওয়ার্ড কমিটি গুলোতে এক ঘরের ৫-৬ জন ও অধিকাংশ বিএনপি দলীয় লোকজনকে অন্তর্র্ভূক্ত করার অভিযোগ করছেন আ’লীগ দলের লোকজনই। তাই সম্মেলনকে নিয়ে আতঙ্কগ্রস’ও ছিলেন অনেকে। পুলিশ প্রশাসনও ছিল খুবই সতর্ক অবস্থানে। ওই সম্মেলনের পুরো ব্যয়ভার বহন করেছেন সভাপতি পদপ্রার্থী আবু তালেব। মোট ৪ লক্ষাধিক টাকা খরচের কথা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। পানিশ্বর ইউনিয়নে ভোট হলেও এখানে হয়নি ভোট। নেতৃবৃন্দের যৌথ সিদ্ধান্তে আবারও সভাপতি হয়েছেন আবু তালেব। আর সাধারণ সম্পাদক করেছেন এড. মো. শফিকুর রহমানকে। এর আগে তিন বছর মেয়াদের কমিটি ৭ বছর চলেছে এ দুইজনের নেতৃত্বেই। যুবলীগ নেতা বোরহান উদ্দিন সহ অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে সম্মেলনের নামে গণতন্ত্রের কবর রচনার অভিযোগও করেছেন। দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, কয়েকবার তারিখ পরিবর্তন হয়ে অবশেষে গত ১৬ জুলাই শনিবার অরূয়াইল ইউনিয়ন আ’লীগের সম্মেলন হয়েছে। আলোচনা সভা ও কমিটি গঠন দুটি ভাগে বিভক্ত ছিল সম্মেলন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে জেলা উপজেলা ও স’ানীয় নেতৃবৃন্দের আলোচনা। শেষের দিকে ইউনিয়ন আ’লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। নতুন করে কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সন্ধ্যায় দ্বিতীয় অধিবেশনে উপজেলা আ’লীগের আহবায়ক এডভোকেট নাজমুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আ’লীগের সহসভাপতি মো. মজিবুর রহমান বাবুল, প্রধান বক্তা ছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের (৩১২) এমপি ও উপজেলা আ’লীগের সদস্য সচিব উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম। বক্তব্য রাখেন- জেলা আ’লীগ নেতা মো. শাহ আলম, সরাইল আ’লীগের যুগ্ম আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মো. আব্দুর রাশেদ প্রমূখ। কমিটি গঠন পক্রিয়ায় শুরূ হলে সভাপতি পদে প্রার্থী হন মো. আবু তালেব ও মুক্তিযোদ্ধা শাহের উদ্দিন। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হন ৬ জন। শাহের উদ্দিনকে বসে যাওয়ার আহবান করেন জেলার জনৈক নেতা। শাহের উদ্দিন ওই প্রস্তাবে রাজি হননি। তিনি তৃণমুলের ভোটারদের সমর্থনের ভিত্তিতে অর্থাৎ ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের প্রস্তাব দেন। জেলা উপজেলার নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। নেতৃবৃন্দ মিলে জুড়িবোর্ড গঠন করে দ্রূত সিদ্ধান্ত নিয়ে সভাপতি পদে আবু তালেব ও সম্পাদক পদে এড. মো. শফিকুল ইসলামের নাম ঘোষণা করেন। এতে সন্তোষ্ট হতে পারেননি অনেকেই। ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, আওয়ামীলীগের গণতন্ত্র কি এমন শিক্ষা দেয়? সভাপতি প্রার্থী শুধু ভোটের জন্য ৪ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলার করেছেন বিএনপির ১২ জনকে। সম্পাদক প্রার্থী নিজের ঘরেই ৮-৯ জনকে ভোটার করেছেন। ৯ ওয়ার্ডের ১৭১ জন ভোটারের মধ্যে ১৩০ জনই বিএনপি’র। অনেক ভোটার চিৎকার করে বলছেন, আমি বিএনপি করি। কোন ফোতে আমাকে আ’লীগের কমিটিতে ভোটার বানাইছে? সব মন গড়া। আর দলবাজি। আওয়ামীলীগের মত দলের কমিটি গঠনে এত অনিয়ম দূর্নীতি কল্পনাও করা যায় না।সভাপতি পদপ্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহের উদ্দিন বলেন, যারা কমিটি গঠন করতে এসেছেন। তারা কি কোন প্রার্থীকে বলতে পারেন? ‘আপনি বসে যান’। আমাকে জেলার নেতারা এমনটি বলেছেন। আমি বলেছি, এর আগেও হুমায়ুন কবিরের আমলে আমাকে দুইবার বসিয়ে দিয়েছেন। এইবার তৃণমূলের নেতাদের মতামত অর্থাৎ আমি ভোট চাই। ভোটে হেরে গেলেও আমার কোন আপসোস থাকবে না। আমার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন। গণতন্ত্রের কবর রচনা করে নিজেদের সমন্বয়ে জুড়িবোর্ড করে ভেতরে গেলেন। আধা ঘন্টা পরে এসে নিজেদের পছন্দের লোকদের নাম ঘোষণা করলেন। এটি দলের জন্য দায়িত্বশীল লোক বাচাইয়ের সঠিক ও গ্রহণযোগ্য পক্রিয়া হতে পারে না। আবু তালেব বলেন, সুন্দর সম্মেলন হয়েছে। অভিযোগ গুলো সঠিক নয়। এ গুলো দলের বিদ্রোহীদের কাজ। আমি ১২ শত লোকের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করেছি কলেজ শিক্ষক মিলনায়তনে। শুধু খাবারেই আমার খরচ হয়েছে আড়াই লক্ষাধিক টাকা। নেতৃবৃন্দ আসবেন। রাস্তায় কাজ করিয়েছি। ইউনিয়নের প্রত্যেক গ্রামে একটি করে নৌকা পাঠিয়ে লোক এনেছি। প্রতি নৌকার ভাড়া ১ হাজার টাকা দিয়েছি। বিশাল প্যান্ডেলের খরচ আমিই দিয়েছি। আমার খরচ ৪ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। সদস্য সচিব উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ভোটে নয়, কনভেনার কমিটির আলোচনার মাধ্যমে কমিটি ঘোষণার কথা স্বীকার করে বলেন, ভোট কেন নয়? এটা আমারও জিজ্ঞাসা। তবে কনভেনার কমিটির সিদ্ধান্তে যা হয়ে গেছে। আমি তার বাহিরে নয় ।

মাহবুব খান বাবুল