ঢাকা ০৭:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোঃ ইসলাম, অগ্নিসংযোগ মামলায় গ্রেফতার টেকসই ভবিষ্যৎ গড়তে ইউপিজি’র অগ্রণী ভূমিকা ২০২৫-এ গোল্ড প্রেসিডেন্ট’ সম্মাননা পেলেন রোটারিয়ান ইঞ্জিনিয়ার কামাল উদ্দীন কারাগারে টাকা ছাড়া মেলেনা বন্দিদের সাক্ষাত পেশাগত অধিকার আদায়ে কাজ করার অঙ্গীকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত কমিটির বিজয়নগরে নিজ বাসা থেকে নিখোঁজ তানভীর জনগুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি প্রদান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিখোঁজ শাফওয়ান হোসেনকে পাওয়া গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ‌উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র শাফওয়ান হোসেন(শাওন) নিখোঁজ বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় ইঞ্জিনিয়ার শ্যামলকে ফুলেল শুভেচ্ছা

১৪ বছরের শিশু যখন ২৪ বছরের যুবক! গ্রেপ্তারের পর ফের শিশু

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৫৪:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২ ২৫৯ বার পড়া হয়েছে

sarail pic(child arrst) 15.11=1=2

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ

সরাইলের চুন্টায় মারধর ও চুরির মামলায় বাবুল মিয়া (১৪) নামের এক শিশুকে গ্রেপ্তার করেছেন সরাইল থানা পুলিশ। জায়গার বিরোধে আপন দুই ভাই মতর মিয়া (৬০) ও সৈয়দ মিয়ার (৫৫) ছেলেদের মধ্যে গত ২২ অক্টোবর সন্ধ্যায় সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ১০-১২ জন আহত হয়। উভয় পক্ষ মামলা করলেও সৈয়দ মিয়ার মামলা আলোর মুখ দেখেনি আদৌ। এনায়েত উল্লাহর দায়ের করা এজহার ও এফ.আই.আর-এ ৬ নম্বর আসামীর নাম বাবলু মিয়া (২৪)। ২৪ বছর মানেই যুবক। গত ৮ নভেম্বর সকালে যুবক বাবলুকে ঘাগড়াজোর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন পুলিশ। কিছুক্ষণ পরই মা-এর দেখানো জন্ম নিবন্ধন সনদ পুলিশের হাতে আসার পর যুবক বাবলু হয়ে যায় শিশু। কারণ নিবন্ধনে (২০০৯১২১৯৪১৯১০৬৯৪৯) তার জন্ম তারিখ ১লা জানুয়ারি ২০০৯ খ্রি.। তাই প্রশ্ন ওঠেছে পুলিশের তদন্ত নিয়ে। তবে সরাইল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, শিশু জেলা কারাগারে যাবে কেন? ৯ বছরের উর্ধ্বে ১৮ বছরের নীচে কোন শিশুকে গ্রেপ্তার করলে সর্ব প্রথম পুলিশ স’ানীয় সমাজসেবা কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন। উনার দিক নির্দেশনায় পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করার কথা। চুন্টার শিশু বাবুল গ্রেপ্তারের বিষয়ে পুলিশ আমাকে কিছুই জানায়নি। মামলা ও স’ানীয় সূত্র জানায়, সংঘর্ষের পর দুই পক্ষ মামলা করেন। গত ২৩ অক্টোবর জমা দেয়া এনায়েত উল্লাহর মামলাটি নথিভুক্ত হয় ২৪ অক্টোবর। কারণ সৈয়দ মিয়ার আহত দুই ছেলে উজ্জ্বল মিয়া (২৬) ও জিল্লু মিয়াকে ওইদিন সকালে গ্রেপ্তার করা হয়। আর ৮ নভেম্বর সকালে গ্রেপ্তার করেন শিশু বাবুল মিয়াকে (১৩ বছর ১০ মাস ৮ দিন)। বাদীর এজহারে ৬ নম্বর আসামীর নাম বাবলু মিয়া (২৪)। একই নামে ও বয়স উল্লেখ করে মামলা নথিভুক্ত করেছেন পুলিশ। মায়ের দেখানো জন্ম নিবন্ধন সনদ ভাবিয়ে তুলে পুলিশকে। ওইদিন পুলিশ বাবলু নামটি ঠিক রেখে (জন্ম নিবন্ধনে নাম বাবুল মিয়া) বয়স ২৪ থেকে ১০ বছর কমিয়ে ১৪ বছর লিখে কিশোর অপরাধী উল্লহ করে আদালতে প্রেরণ করেন। জেলা কারাগারে তিন দিন থাকার পর গত ১১ নভেম্বর ওই শিশুকে গাজীপুরের কিশোর অপরাধ সংশোধনাগারে পাঠিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। শিশুর মা মাসুদা বেগম (৪০) বলেন, নিরপরাধ শিশুর বয়স ১০ বছর বেশী লিখে যুবক সাজিয়ে আসামী করল। পুলিশ তদন্ত না করেই শিশুকে ২৪ বছর লিখে মামলা নথিভুক্ত করে ফেললেন? আবার ওই শিশুকে দ্রূত গ্রেপ্তার করে চালানও দিলেন। শিশুটির নাম তো বাবলু নয়। তার নাম বাবুল মিয়া। এত তাড়াহুড়া করে একটা শিশুকে জেলে পাঠানোর কারণ বুঝলাম না। জীবনের প্রথম আমার শিশু সন্তানটি ৯ দিন ধরে কারাগারে আছে। যারা সরাসরি সংঘর্ষ করেছিল তারা বুক ফুলিয়ে ঘুরছেন। আসলে টাকা ও শক্তির কাছে সবকিছুই হার মানে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মো. জসিম উদ্দিন শিশুটির বয়স ২৪ বছর উল্লেক করে মামলা এফ আই আর হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, তদন্তকালে বাদীর কাছে বয়স জানতে চেয়েছি। তারা বলতে পারেননি। গ্রেপ্তারের পর শিশুর মায়ের দেয়া জন্ম নিবন্ধন থেকে প্রকৃত বয়স (১৪ বছর) পেয়েছি। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হিসেবেই চালান দিয়েছি। সনদ থেকে বয়স জেনে শিশু লিখলেন। কিন’ সনদে তার নাম বাবুল মিয়া। মামলায় বাবলু মিয়া সেটা সংশোধন করলেন না কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, বাবলু আর বাবুল একই কথা। এখনই তো মামলা শেষ হয়ে যায়নি। আরো কত কাজ বাকি রয়েছে! সরাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শেহাবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিশুকে বাদী আসামী করলে তো কিছু করার থাকে না। আমরা শিশু লিখেই আদালতে পাঠিয়েছি। পরবর্তী ব্যবস’া আদালতই গ্রহন করবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

১৪ বছরের শিশু যখন ২৪ বছরের যুবক! গ্রেপ্তারের পর ফের শিশু

আপডেট সময় : ১২:৫৪:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ

সরাইলের চুন্টায় মারধর ও চুরির মামলায় বাবুল মিয়া (১৪) নামের এক শিশুকে গ্রেপ্তার করেছেন সরাইল থানা পুলিশ। জায়গার বিরোধে আপন দুই ভাই মতর মিয়া (৬০) ও সৈয়দ মিয়ার (৫৫) ছেলেদের মধ্যে গত ২২ অক্টোবর সন্ধ্যায় সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ১০-১২ জন আহত হয়। উভয় পক্ষ মামলা করলেও সৈয়দ মিয়ার মামলা আলোর মুখ দেখেনি আদৌ। এনায়েত উল্লাহর দায়ের করা এজহার ও এফ.আই.আর-এ ৬ নম্বর আসামীর নাম বাবলু মিয়া (২৪)। ২৪ বছর মানেই যুবক। গত ৮ নভেম্বর সকালে যুবক বাবলুকে ঘাগড়াজোর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন পুলিশ। কিছুক্ষণ পরই মা-এর দেখানো জন্ম নিবন্ধন সনদ পুলিশের হাতে আসার পর যুবক বাবলু হয়ে যায় শিশু। কারণ নিবন্ধনে (২০০৯১২১৯৪১৯১০৬৯৪৯) তার জন্ম তারিখ ১লা জানুয়ারি ২০০৯ খ্রি.। তাই প্রশ্ন ওঠেছে পুলিশের তদন্ত নিয়ে। তবে সরাইল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, শিশু জেলা কারাগারে যাবে কেন? ৯ বছরের উর্ধ্বে ১৮ বছরের নীচে কোন শিশুকে গ্রেপ্তার করলে সর্ব প্রথম পুলিশ স’ানীয় সমাজসেবা কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন। উনার দিক নির্দেশনায় পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করার কথা। চুন্টার শিশু বাবুল গ্রেপ্তারের বিষয়ে পুলিশ আমাকে কিছুই জানায়নি। মামলা ও স’ানীয় সূত্র জানায়, সংঘর্ষের পর দুই পক্ষ মামলা করেন। গত ২৩ অক্টোবর জমা দেয়া এনায়েত উল্লাহর মামলাটি নথিভুক্ত হয় ২৪ অক্টোবর। কারণ সৈয়দ মিয়ার আহত দুই ছেলে উজ্জ্বল মিয়া (২৬) ও জিল্লু মিয়াকে ওইদিন সকালে গ্রেপ্তার করা হয়। আর ৮ নভেম্বর সকালে গ্রেপ্তার করেন শিশু বাবুল মিয়াকে (১৩ বছর ১০ মাস ৮ দিন)। বাদীর এজহারে ৬ নম্বর আসামীর নাম বাবলু মিয়া (২৪)। একই নামে ও বয়স উল্লেখ করে মামলা নথিভুক্ত করেছেন পুলিশ। মায়ের দেখানো জন্ম নিবন্ধন সনদ ভাবিয়ে তুলে পুলিশকে। ওইদিন পুলিশ বাবলু নামটি ঠিক রেখে (জন্ম নিবন্ধনে নাম বাবুল মিয়া) বয়স ২৪ থেকে ১০ বছর কমিয়ে ১৪ বছর লিখে কিশোর অপরাধী উল্লহ করে আদালতে প্রেরণ করেন। জেলা কারাগারে তিন দিন থাকার পর গত ১১ নভেম্বর ওই শিশুকে গাজীপুরের কিশোর অপরাধ সংশোধনাগারে পাঠিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। শিশুর মা মাসুদা বেগম (৪০) বলেন, নিরপরাধ শিশুর বয়স ১০ বছর বেশী লিখে যুবক সাজিয়ে আসামী করল। পুলিশ তদন্ত না করেই শিশুকে ২৪ বছর লিখে মামলা নথিভুক্ত করে ফেললেন? আবার ওই শিশুকে দ্রূত গ্রেপ্তার করে চালানও দিলেন। শিশুটির নাম তো বাবলু নয়। তার নাম বাবুল মিয়া। এত তাড়াহুড়া করে একটা শিশুকে জেলে পাঠানোর কারণ বুঝলাম না। জীবনের প্রথম আমার শিশু সন্তানটি ৯ দিন ধরে কারাগারে আছে। যারা সরাসরি সংঘর্ষ করেছিল তারা বুক ফুলিয়ে ঘুরছেন। আসলে টাকা ও শক্তির কাছে সবকিছুই হার মানে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মো. জসিম উদ্দিন শিশুটির বয়স ২৪ বছর উল্লেক করে মামলা এফ আই আর হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, তদন্তকালে বাদীর কাছে বয়স জানতে চেয়েছি। তারা বলতে পারেননি। গ্রেপ্তারের পর শিশুর মায়ের দেয়া জন্ম নিবন্ধন থেকে প্রকৃত বয়স (১৪ বছর) পেয়েছি। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হিসেবেই চালান দিয়েছি। সনদ থেকে বয়স জেনে শিশু লিখলেন। কিন’ সনদে তার নাম বাবুল মিয়া। মামলায় বাবলু মিয়া সেটা সংশোধন করলেন না কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, বাবলু আর বাবুল একই কথা। এখনই তো মামলা শেষ হয়ে যায়নি। আরো কত কাজ বাকি রয়েছে! সরাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শেহাবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিশুকে বাদী আসামী করলে তো কিছু করার থাকে না। আমরা শিশু লিখেই আদালতে পাঠিয়েছি। পরবর্তী ব্যবস’া আদালতই গ্রহন করবেন।