দীর্ঘ ১০ বছর পর সরাইল উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি (একাংশ) অনুমোদন দিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগ। গত ২০ মে শুক্রবার রাতে মো. শরীফ উদ্দিনকে আহবায়ক ও ইসতিয়াক আহমেদ বাপ্পিকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য ৪১ সদস্যের এই কমিটির অনুমোদন পেয়েছে। পদ পদবীর জন্য এক যুগের কাছাকাছি সময় অপেক্ষায় থাকা ছেলেরা কমিটি ঘোষণার পর ভাসছে আনন্দে। আজ শনিবার বিকেলে তারা সরাইল সদরে বাধ্যযন্ত্র নিয়ে করেছেন আনন্দ মিছিল। তবে কমিটির কিছু সদস্য নিয়ে চাউর হচ্ছে নানা আলোচনা। দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, গত শুক্রবার রাতে সরাইল উপজেলা ছাত্রলীগের ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল আলম রূবেল ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন। এর আগে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ২১ অক্টোবর দলীয় কোন্দলে খুন হন সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি এ কে এম ইকবাল আজাদ। সাথে সাথে স্থগিত করে দেওয়া হয় তৎকালীন ছাত্রলীগ কমিটির কার্যক্রম। মামলা ও দলীয় গ্রপিং লবিং-এ আর হয়নি কমিটি। এর ৬ বছর পর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৪ জানুয়ারি সরাইল উপজেলা ছাত্রলীগের ৪৯ সদস্যের একটি আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দিয়েছিলেন জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি মাসুম বিল্লাহ ও সম্পাদক মো. রাসেল মিয়া। ওই কমিটিতে আহবায়ক করা হয়েছিল মো. জসিম খানকে। আর সদস্য সচিব হয়েছিলেন মো. আবছার উদ্দিন। গ্রূপিং দ্বন্ধে ওই কমিটি ঘোষণার পরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছিল সরাইল আ’লীগের রাজনীতির মাঠ। এক গ্রূপ অপর গ্রূপকে করে চ্যালেঞ্জ। কমিটিকে সরাইল সদরে ওঠতে না দেওয়ার ঘোষণা। সব মিলিয়ে সরাইল সদরের সর্বত্রই টানটান উত্তেজনা। নড়েচড়ে বসেছিলেন সিভিল ও পুলিশ প্রশাসন। এক সময় জারি করা হয়েছিল ১৪৪ ধারা। সেই ১৪৪ ধারা ভেঙ্গেই সরাইল সদরে প্রবেশ করেছিল ওই সময়কার ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটি। পথে হয়েছে সংঘাত সংঘর্ষ। এরপরই আরেক চমকে বিস্মিত হয়েছিলেন এখানকার ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। ১৪৪ ধারা জারির কারণে কমিটি ঘোষণার মাত্র ২০ দিন পর ওই বছরের ২৪ জানুয়ারি জসিম আবছারের আহবায়ক কমিটিকে স’গিত করে দেন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। দীর্ঘ ৪ বছরেরও অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও সেই স’গিতাদেশ আর প্রত্যাহার হয়নি। সব মিলিয়ে গত দশ বছর ধরে সরাইল উপজেলা ছাত্রলীগ ছিল কমিটি শুন্য। সর্বশেষ গতকাল ২১ মে শনিবার তাদের দলীয় প্যাডে ভাইরাল হতে দেখা যায় ছাত্রলীগের ৪১ সদস্যের কমিটি। ওই প্যাডে লেখা প্রথমে জসিম আবছারের স’গিতকৃত আহবায়ক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। পরে এই কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ কমিটির মেয়াদ এক বছর। সদ্য অনুমোদন পাওয়া ছাত্রলীগ কমিটির সভাপতি মো. শরীফ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ বাপ্পি বলেন, দল ক্ষমতায়। অথচ দলীয় কোন্দলের কারণে সরাইলে দীর্ঘ সময় ধরে ছাত্রলীগের কোন ধরণের কোন কর্মকান্ড নেই। দলকে গতিশীল করতে ও প্রধান উন্নয়নকে মানুষের দূঢ়গোড়ায় পৌঁছে দিতে লীগের কোন বিকল্প নেই। দায়িত্ব পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। সকলের সহযোগিতায় আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালনের চেষ্টা করব।
মাহবুব খান বাবুল