Dhaka 12:39 pm, Saturday, 27 July 2024
News Title :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল মুগ্ধতা ছড়িয়েছে ভারতের আবৃত্তি সংস্থা শ্রুতির শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা নবীনগরে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান তিন শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ তরী বাংলাদেশ বিজয়নগর উপজেলা আহবায়ক কমিটি গঠন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির ১৮ সদস্যকে সংবর্ধণা প্রদান মেসার্স সরকার কনস্ট্রাকশনে একজনকে নিয়োগ দেয়া হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত সরাইলে ৭০ লক্ষাধিক টাকা কর আদায় ৩ কর্মকর্তাকে অভিনন্দন স্মারক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ল্যাপটপ প্রদান গুজবরোধে সাইবার আইন কাজে লাগানো বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার কথা জানালেন নেদারল্যান্ডের উপ-রাষ্ট্রদূত

হট্রগোল বিশৃঙ্খলায় ভন্ডুল সরাইলে আওয়ামীলীগের সম্মেলন কমিটির সিদ্ধান্ত দিবে জেলা আ’লীগ

  • Reporter Name
  • Update Time : 09:27:32 pm, Friday, 22 July 2022
  • 255 Time View

তৃণমূলের ভোটের দাবীতে একাট্রা পদপ্রার্থী দুই নেতা ও তাদের অনুসারীরা । তালিকার সমস্যা থাকায় জেলা উপজেলা নেতৃবৃন্দের ‘না’। একাংশের সম্মতিতে ভোট ছাড়াই কমিটির নাম ঘোষণার চেষ্টা। প্রতিবাদে ফেঁটে পড়েন উপসি’ত কিছু লোক। ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। তীব্র হট্রগোল। মিছিল। বিশৃঙ্খলা। ‘ভোট চাই’,‘ভোট ছাড়া কমিটি মানি না’,‘মানব না’,‘নীল নকশা মানি না’,- এমন স্লোগান। চারিদিকে চিৎকার চেচামেচি। মঞ্চে ওঠে নেতৃবৃন্দকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা। পুরো প্যান্ডেল ও এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনার পারদ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের আখিঁতারা নুরূর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে গত বৃহস্পতিবার রাতে নোয়াগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে এসব ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে জেলা থেকে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলে সম্মেলন স্থগিত করে রাত সাড়ে ১০ টার পর পুলিশ পাহারায় সভাস’ল ত্যাগ করেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি মুজিবুর রহমান বাবুল সহ জেলা ও উপজেলার আ’লীগ নেতৃবৃন্দ। গত বুধবার হট্রগোল বিশৃঙ্খলার জন্য পন্ডু হয়ে গেছে একই উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়ন সম্মেলন। তবে সাবেক সভাপতি হামিদুল হক রাত ১১টায় তাকে সভাপতি ও শেখ মুসলেহ উদ্দিন কে সম্পাদক করে সুন্দর ভাবে কমিটি ঘোষণা হয়েছে বলে দাবী করেন। অথচ জেলার নেতৃবৃন্দ বলছেন কমিটি ঘোষণার বিষয়টি মিথ্যা। দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি এ কে এম ইকবাল আজাদ খুনের পর হামলা মামলায় স’বির হয়ে পড়ে এখানকার আ’লীগ। এখন ৩/৪টি গ্রূপে বিভক্ত সরাইল আ’লীগ। এরই প্রভাব পড়ছে সরাইল আ’লীগের সকল সম্মেলনে। উপর থেকে নিচ পর্যন্ত সকলেই পদ ঠিকিয়ে রাখার লড়াই করছেন। কৌশলের পাশাপাশি অনিয়মের আশ্রয় নেয়ার অভিযোগও আছে। নিজের ভোট নিশ্চিত করতে বিএনপি জাপা ও আওয়ামী বিরোধী লোকজনকে ওয়ার্ড কমিটির দায়িত্বশীল পদ দিয়ে অনিয়ম শুরূ করেছেন স’ানীয় নেতৃবৃন্দ। নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য সরকারি চাকরি জীবিকে বসিয়ে রেখেছেন ইউপি আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের চেয়ারে। বাদ পড়ছেন দলের ত্যাগীরা। আর এ সবের ঘানি টানছেন তৃণমূল আ’লীগের নেতা কর্মীরা। প্রতিবাদে গ্রামে গঞ্জে হয়েছে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন। সব কিছুর রেশ পড়ছে এখন ইউনিয়ন আ’লীগের সম্মেলন গুলোতে। পানিশ্বরে তৃণমূলের ভোটে কমিটি গঠন হয়েছে নি:শব্দে। এরপর আর স্বসি’ নেই কোন সম্মেলনে। গত শুক্রবার ছিল নোয়াগাঁও ইউনিয়নের সম্মেলন। বিকাল ৩টায় হামিদুল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান বাবুল। প্রধান বক্তা ছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম। উদ্বোধন করেন সরাইল উপজেলা আ’লীগের আহবায়ক এডভোকেট নাজমুল হোসেন। বক্তব্য রাখেন-জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মহিউদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক টিমের সদস্য এডভোকেট তাসলিমা খানম নিশাত, সরাইল আ’লীগের যুগ্ম আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আব্দুর রাশেদ, খায়রূল হুদা চৌধুরী বাদল, সদস্য এডভোকেট জয়নাল উদ্দিন জয় ও মো. কায়কোবাদ। সভা শেষে আহবায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা দিয়ে সন্ধ্যা ৭ টায় নাজমুল হোসেনের সভাপতিত্বে শুরূ দ্বিতীয় অধিবেশন। সভাপতি পদে প্রার্থী ১১ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৪ জন। শুরূতেই ভোটের দাবী করেন মো. শফিকুল ইসলাম মুন্সী। আর ভোটার তালিকায় ক্রটির অভিযোগ থাকায় সকলের সিদ্ধান্তে কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেন নেতৃবৃন্দ। ভোট নিলে তালিকা সংশোধন করতে হবে। অধিকাংশ প্রার্থী ভোট ছাড়া নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্ত মানলেও বেকেঁ বসেন শফিক ও গিয়াস উদ্দিন। জেলা উপজেলার নেতৃবৃন্দ এক ঘন্টা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত বা কমিটি ঘোষণার প্রস’তি নিলে শুরূ হয় হট্রগোল মিছিল। ‘ভোট চাই’,‘ভোট ছাড়া কমিটি ঘোষণা মানি না’-এমন সব স্লোগান দিতে থাকেন কিছু লোক। ছিল কিছু অশ্লীল স্লোগানও। মঞ্চের কাছে গিয়ে উচ্চ বাচ্য করে নেতৃবৃন্দকে মৌখিক ভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগও করেছেন কেউ কেউ। অনেক চেষ্টার পর ভন্ডুল হয়ে যায় সম্মেলন। কমিটির বিষয়ে পরবর্তীতে জেলা থেকে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ঘোষণা দিয়ে রাত ১০টার পর পুলিশ পাহারায় সম্মেলন স’ল ত্যাগ করেন জেলা উপজেলার নেতৃবৃন্দ। ইউপি আ’লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. সামছুল আলম মাষ্টার বলেন, ৩ মাস ধরে উনারা ঘুরাচ্ছেন। সম্মেলনের তারিখ দিলেন। ১৫ জুলাই আমাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে জেলার ও সাংগঠনিক টিমের জনৈক নেতা বলেন,‘আমাকে একটি পদ দেন। আর আপনারা একটা পদ নেন।’ তখনই বুঝেছিলাম কি হতে পারে। অতিথি কি বক্তৃতায় কোন প্রার্থীর প্রশংসা করতে পারেন? এসবের অর্থ কী? জেলার নির্দেশে এখানে নতুন প্রার্থী করা হয়েছে। উনারাই ঘুরে ফিরে ওয়ার্ড কমিটি করলেন। আবার উনারাই বলছেন ভোটার তালিকায় সমস্যা আছে। মাঠের ও ত্যাগী কর্মী ৪ জন পদপ্রার্থী হয়েছেন। বাকিরা দলের কোন কাজে আসে না। বাহিরে থাকে। এরা হাইব্রিড। অতিথিরা বক্তব্য দিয়েই রাত করে ফেলেন। পরে ভোট ছাড়া কমিটি গঠনের জন্য তাড়াহুড়া করেন। এটাও একটা কৌশল। নিজেদের পছন্দের লোকজনের নাম ঘোষণা করতে চেয়েছেন। ফলে স’ানীয় লোকজন প্রতিবাদে ফেঁটে পড়েছেন। সভাস’ল ঘেরাও করে স্লোগান দিয়েছেন। কমিটি আর ঘোষণা হয়নি। সভাপতি পদ প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলাম মুন্সী বলেন, তারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট ছাড়া ঘোষণা দিতে চাইছিল। উনারা ভোটার করে এখন বলছেন সমস্যা আছে। আমি ভোটের দাবীতে লোকজন নিয়ে প্রতিবাদ করেছি। অশ্লীল বা খারাপ আচরণ করিনি। তাদের কর্মকান্ডে মনে হয়েছে ম্যানেজ হয়ে এসেছিলেন। স্থানীয়দের চাপে কমিটি ঘোষণা দিতে পারেননি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সাংগঠনিক টিমের অন্যতম সদস্য এডভোকেট তাসলিমা সুলতানা নিশাত বলেন, সকল অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্যেশ্য প্রণোদিত। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে চমৎকার একটি সম্মেলন ছিল। শুরূতেই সেখানকার ভোটার তালিকা নিয়ে অভিযোগ ছিল। সকল প্রার্থীর মতামতের ভিত্তিতে এক ঘন্টা বৈঠকে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ভোটে যেতে হলে তালিকা সংশোধন করতে হবে। কিন’ শফিক ভোট ছাড়া মানেননি। তিনি স্বাক্ষরও দেননি। শফিক নেতৃবৃন্দের সাথে খুই অশ্লীল আচরণ করেছেন। দল করতে হলে জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দকে মানতে হবে। তাকে দল থেকে বহিস্কার করা উচিত। সেখানে কমিটি ঘোষণা দেয়ার কথাটি সঠিক নয়। এ বিষয়ে পরবর্তীতে জেলা থেকে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে। প্রসঙ্গত: অরূয়াইলে ভোট না নিয়ে কমিটি গঠন করায় ক্ষুদ্ধ হয়েছেন স্থানীয় আ’লীগ ও যুবলীগের একাংশের নেতা কর্মীরা। ভোট ছাড়া হেফাজতের আন্দোলনের অগ্রণী ভূমিকায় থাকা দুই ছেলের পিতাকে সভাপতি করে পুরস্কৃত করেছেন আ’লীগের দায়িত্বশীলরা। দাওয়াতপত্রে মহিলা এমপির নাম না থাকায় গত বুধবার রাতে হট্রগোল বাকবিতন্ডায় পন্ডু হয়ে গেছে সরাইলের কালীকচ্ছ ইউনিয়ন শাখার ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। উত্তপ্ত পরিবেশে রাত পৌনে ৮টার দিকে জেলা ও উপজেলার নেতারা পুলিশ পাহারায় সভাস’ল ত্যাগ করেন। এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে উপজেলার বাকি ইউনিয়ন গুলোতে। পাকশিমুলেও ভোট ছাড়া কমিটি করায় বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল নেতৃবৃন্দের মধ্যে।

মাহবুব খান বাবুল

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় খবর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল

fapjunk
© All rights reserved ©
Theme Developed BY XYZ IT SOLUTION

হট্রগোল বিশৃঙ্খলায় ভন্ডুল সরাইলে আওয়ামীলীগের সম্মেলন কমিটির সিদ্ধান্ত দিবে জেলা আ’লীগ

Update Time : 09:27:32 pm, Friday, 22 July 2022

তৃণমূলের ভোটের দাবীতে একাট্রা পদপ্রার্থী দুই নেতা ও তাদের অনুসারীরা । তালিকার সমস্যা থাকায় জেলা উপজেলা নেতৃবৃন্দের ‘না’। একাংশের সম্মতিতে ভোট ছাড়াই কমিটির নাম ঘোষণার চেষ্টা। প্রতিবাদে ফেঁটে পড়েন উপসি’ত কিছু লোক। ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। তীব্র হট্রগোল। মিছিল। বিশৃঙ্খলা। ‘ভোট চাই’,‘ভোট ছাড়া কমিটি মানি না’,‘মানব না’,‘নীল নকশা মানি না’,- এমন স্লোগান। চারিদিকে চিৎকার চেচামেচি। মঞ্চে ওঠে নেতৃবৃন্দকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা। পুরো প্যান্ডেল ও এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনার পারদ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের আখিঁতারা নুরূর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে গত বৃহস্পতিবার রাতে নোয়াগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে এসব ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে জেলা থেকে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলে সম্মেলন স্থগিত করে রাত সাড়ে ১০ টার পর পুলিশ পাহারায় সভাস’ল ত্যাগ করেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি মুজিবুর রহমান বাবুল সহ জেলা ও উপজেলার আ’লীগ নেতৃবৃন্দ। গত বুধবার হট্রগোল বিশৃঙ্খলার জন্য পন্ডু হয়ে গেছে একই উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়ন সম্মেলন। তবে সাবেক সভাপতি হামিদুল হক রাত ১১টায় তাকে সভাপতি ও শেখ মুসলেহ উদ্দিন কে সম্পাদক করে সুন্দর ভাবে কমিটি ঘোষণা হয়েছে বলে দাবী করেন। অথচ জেলার নেতৃবৃন্দ বলছেন কমিটি ঘোষণার বিষয়টি মিথ্যা। দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি এ কে এম ইকবাল আজাদ খুনের পর হামলা মামলায় স’বির হয়ে পড়ে এখানকার আ’লীগ। এখন ৩/৪টি গ্রূপে বিভক্ত সরাইল আ’লীগ। এরই প্রভাব পড়ছে সরাইল আ’লীগের সকল সম্মেলনে। উপর থেকে নিচ পর্যন্ত সকলেই পদ ঠিকিয়ে রাখার লড়াই করছেন। কৌশলের পাশাপাশি অনিয়মের আশ্রয় নেয়ার অভিযোগও আছে। নিজের ভোট নিশ্চিত করতে বিএনপি জাপা ও আওয়ামী বিরোধী লোকজনকে ওয়ার্ড কমিটির দায়িত্বশীল পদ দিয়ে অনিয়ম শুরূ করেছেন স’ানীয় নেতৃবৃন্দ। নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য সরকারি চাকরি জীবিকে বসিয়ে রেখেছেন ইউপি আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের চেয়ারে। বাদ পড়ছেন দলের ত্যাগীরা। আর এ সবের ঘানি টানছেন তৃণমূল আ’লীগের নেতা কর্মীরা। প্রতিবাদে গ্রামে গঞ্জে হয়েছে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন। সব কিছুর রেশ পড়ছে এখন ইউনিয়ন আ’লীগের সম্মেলন গুলোতে। পানিশ্বরে তৃণমূলের ভোটে কমিটি গঠন হয়েছে নি:শব্দে। এরপর আর স্বসি’ নেই কোন সম্মেলনে। গত শুক্রবার ছিল নোয়াগাঁও ইউনিয়নের সম্মেলন। বিকাল ৩টায় হামিদুল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান বাবুল। প্রধান বক্তা ছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম। উদ্বোধন করেন সরাইল উপজেলা আ’লীগের আহবায়ক এডভোকেট নাজমুল হোসেন। বক্তব্য রাখেন-জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মহিউদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক টিমের সদস্য এডভোকেট তাসলিমা খানম নিশাত, সরাইল আ’লীগের যুগ্ম আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আব্দুর রাশেদ, খায়রূল হুদা চৌধুরী বাদল, সদস্য এডভোকেট জয়নাল উদ্দিন জয় ও মো. কায়কোবাদ। সভা শেষে আহবায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা দিয়ে সন্ধ্যা ৭ টায় নাজমুল হোসেনের সভাপতিত্বে শুরূ দ্বিতীয় অধিবেশন। সভাপতি পদে প্রার্থী ১১ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৪ জন। শুরূতেই ভোটের দাবী করেন মো. শফিকুল ইসলাম মুন্সী। আর ভোটার তালিকায় ক্রটির অভিযোগ থাকায় সকলের সিদ্ধান্তে কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেন নেতৃবৃন্দ। ভোট নিলে তালিকা সংশোধন করতে হবে। অধিকাংশ প্রার্থী ভোট ছাড়া নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্ত মানলেও বেকেঁ বসেন শফিক ও গিয়াস উদ্দিন। জেলা উপজেলার নেতৃবৃন্দ এক ঘন্টা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত বা কমিটি ঘোষণার প্রস’তি নিলে শুরূ হয় হট্রগোল মিছিল। ‘ভোট চাই’,‘ভোট ছাড়া কমিটি ঘোষণা মানি না’-এমন সব স্লোগান দিতে থাকেন কিছু লোক। ছিল কিছু অশ্লীল স্লোগানও। মঞ্চের কাছে গিয়ে উচ্চ বাচ্য করে নেতৃবৃন্দকে মৌখিক ভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগও করেছেন কেউ কেউ। অনেক চেষ্টার পর ভন্ডুল হয়ে যায় সম্মেলন। কমিটির বিষয়ে পরবর্তীতে জেলা থেকে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ঘোষণা দিয়ে রাত ১০টার পর পুলিশ পাহারায় সম্মেলন স’ল ত্যাগ করেন জেলা উপজেলার নেতৃবৃন্দ। ইউপি আ’লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. সামছুল আলম মাষ্টার বলেন, ৩ মাস ধরে উনারা ঘুরাচ্ছেন। সম্মেলনের তারিখ দিলেন। ১৫ জুলাই আমাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে জেলার ও সাংগঠনিক টিমের জনৈক নেতা বলেন,‘আমাকে একটি পদ দেন। আর আপনারা একটা পদ নেন।’ তখনই বুঝেছিলাম কি হতে পারে। অতিথি কি বক্তৃতায় কোন প্রার্থীর প্রশংসা করতে পারেন? এসবের অর্থ কী? জেলার নির্দেশে এখানে নতুন প্রার্থী করা হয়েছে। উনারাই ঘুরে ফিরে ওয়ার্ড কমিটি করলেন। আবার উনারাই বলছেন ভোটার তালিকায় সমস্যা আছে। মাঠের ও ত্যাগী কর্মী ৪ জন পদপ্রার্থী হয়েছেন। বাকিরা দলের কোন কাজে আসে না। বাহিরে থাকে। এরা হাইব্রিড। অতিথিরা বক্তব্য দিয়েই রাত করে ফেলেন। পরে ভোট ছাড়া কমিটি গঠনের জন্য তাড়াহুড়া করেন। এটাও একটা কৌশল। নিজেদের পছন্দের লোকজনের নাম ঘোষণা করতে চেয়েছেন। ফলে স’ানীয় লোকজন প্রতিবাদে ফেঁটে পড়েছেন। সভাস’ল ঘেরাও করে স্লোগান দিয়েছেন। কমিটি আর ঘোষণা হয়নি। সভাপতি পদ প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলাম মুন্সী বলেন, তারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট ছাড়া ঘোষণা দিতে চাইছিল। উনারা ভোটার করে এখন বলছেন সমস্যা আছে। আমি ভোটের দাবীতে লোকজন নিয়ে প্রতিবাদ করেছি। অশ্লীল বা খারাপ আচরণ করিনি। তাদের কর্মকান্ডে মনে হয়েছে ম্যানেজ হয়ে এসেছিলেন। স্থানীয়দের চাপে কমিটি ঘোষণা দিতে পারেননি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সাংগঠনিক টিমের অন্যতম সদস্য এডভোকেট তাসলিমা সুলতানা নিশাত বলেন, সকল অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্যেশ্য প্রণোদিত। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে চমৎকার একটি সম্মেলন ছিল। শুরূতেই সেখানকার ভোটার তালিকা নিয়ে অভিযোগ ছিল। সকল প্রার্থীর মতামতের ভিত্তিতে এক ঘন্টা বৈঠকে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ভোটে যেতে হলে তালিকা সংশোধন করতে হবে। কিন’ শফিক ভোট ছাড়া মানেননি। তিনি স্বাক্ষরও দেননি। শফিক নেতৃবৃন্দের সাথে খুই অশ্লীল আচরণ করেছেন। দল করতে হলে জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দকে মানতে হবে। তাকে দল থেকে বহিস্কার করা উচিত। সেখানে কমিটি ঘোষণা দেয়ার কথাটি সঠিক নয়। এ বিষয়ে পরবর্তীতে জেলা থেকে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে। প্রসঙ্গত: অরূয়াইলে ভোট না নিয়ে কমিটি গঠন করায় ক্ষুদ্ধ হয়েছেন স্থানীয় আ’লীগ ও যুবলীগের একাংশের নেতা কর্মীরা। ভোট ছাড়া হেফাজতের আন্দোলনের অগ্রণী ভূমিকায় থাকা দুই ছেলের পিতাকে সভাপতি করে পুরস্কৃত করেছেন আ’লীগের দায়িত্বশীলরা। দাওয়াতপত্রে মহিলা এমপির নাম না থাকায় গত বুধবার রাতে হট্রগোল বাকবিতন্ডায় পন্ডু হয়ে গেছে সরাইলের কালীকচ্ছ ইউনিয়ন শাখার ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। উত্তপ্ত পরিবেশে রাত পৌনে ৮টার দিকে জেলা ও উপজেলার নেতারা পুলিশ পাহারায় সভাস’ল ত্যাগ করেন। এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে উপজেলার বাকি ইউনিয়ন গুলোতে। পাকশিমুলেও ভোট ছাড়া কমিটি করায় বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল নেতৃবৃন্দের মধ্যে।

মাহবুব খান বাবুল