স্বাধীনতার ৫১ বছর পর সরাইলে দেওয়ান মাহবুব আলীর স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন
- আপডেট সময় : ০৭:৩৭:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩ ৬৩ বার পড়া হয়েছে
মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ
স্বাধীনতার ৫১ বছর পর সরাইলে ন্যাপের কেন্দ্রীয় নেতা প্রয়াত দেওয়ান মাহবুব আলী ওরফে কুতুব মিয়া’র নামে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজের উদ্বাধন হয়েছে। আজ শুক্রবার বাদ জুমআ সরাইল সদরের কৃষি অফিস সংলগ্ন খালি জায়গায় কাজটির উদ্বোধন করেছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর। স্থানীয় ‘দেওয়ান মাহবুব আলী স্মৃতি পরিষদ’ এর দীর্ঘদিনের দাবী পূরণ করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সংঘঠনের সকল সদস্য। অপর দিকে সরাইলবাসীর প্রাণ প্রিয় এই নেতার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক কর্মকান্ড ও ত্যাগের ঋণ কিছুটা হলেও পরিশোধ হতে যাচ্ছে। উদ্বোধন কালে উপস্থিত ছিলেন স্মৃতি পরিষদের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. আব্দুর রাশেদ, সদস্য সরাইল কলেজের অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুল কামাল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদরে সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইসমত আলী, ন্যাপ নেতা আব্দুল জব্বার, ত্রিতাল সংগীত নিকেতনের অধ্যক্ষ সঞ্জীব কুমার দেবনাথ, সরাইল সদরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার, আওয়ামী লীগ নেতা মো. মোস্তাফিজুর রহমান, দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম কানু, সরাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. আইয়ুব খান, সহ-সভাপতি এম.এ মুসা, সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খান, সাবেক সম্পাদক মো. তারিকুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ কামরূজ্জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মো. ইব্রাহিম, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ মাসুদ, উদীচীর সম্পাদক মো. সুমন পারভেজ, যুবলীগ নেতা হাফিজুল আসাদ সিজার, সাংবাদিক শাহগীর মৃধা, দীপক কুমার দেবনাথ, কবি আশিক জুনাঈদ প্রমূখ। রফিক উদ্দিন ঠাকুর বলেন, নিজ জন্মভূমি ও দেশের মানুষের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করেছেন তিনি। তিনি ছিলেন অত্যন্ত বড় মনের রাজনীতিবিদ। তিনি নির্বাচনে দাঁড়িয়ে নিজের ভোট চাইতে গিয়ে বলেছিলেন ‘আমাকে যদি আপনারা ভোট না দেন, তবে দেশ ও জাতির স্বার্থে নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন।’ রাজনৈতিক ভাবে মহান ও উদার এই নেতা ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে এমএলএ হয়েছিলেন। সরাইলের ঐতিহাসিক দেওয়ান পরিবারে জন্ম নেয়া মাহবুব আলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র থাকাকালে ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। সেই সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে কারাবরণ করেছেন। সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশার পাশাপাশি এশিয়ার বৃহত্তম আদমজী জুটমিল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মহান মুক্তিযুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের পক্ষে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেষ্টে আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনে ভাষণ দেন। ওই বছরের ৪ জুন মস্কো হয়ে দেশে ফেরার পথে দিল্লি বিমান বন্দরে হৃদরোগে আক্রান্ত তিনি মারা যান। দিল্লি শাহী কবরস্থানে রাজকীয় মর্যাদায় তাঁর লাশ দাফন করা হয়। সরাইলের প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে মাহবুব আলীর কর্মকান্ড, দেশ প্রেম ও ত্যাগের ইতিহাস জানানোর জন্যই স্মৃতিস্তম্ভটি খুবই প্রয়োজন। স্মৃতি সংসদের দাবীর প্রেক্ষিতে সরাইলবাসীর আরো একটি ভাল কাজের সূচনা হয়েছে। সকলের সহযোগিতায় কাজটি শেষ করতে চাই। সবশেষে প্রয়াত এই নেতা ও দেশের জন্য লড়াই করে শহিদ হওয়া সকল বীরদের জন্য দোয়া করেন মাওলানা আবুল বাশার সরাইলী।