Dhaka 11:25 am, Sunday, 13 October 2024
News Title :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডায়াবেটিক সমিতির কমিটি গঠন ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইন কলেজের পক্ষ থেকে সাবেক মন্ত্রী হারুন আল রশিদকে ফুলেল শুভেচ্ছা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশ্ব শিশু দিবসে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নারী ও যুব অধিকার অর্জনে সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় সেবা প্রদানকারীদের সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভূয়া সাংবাদিক ও অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধে কমিটি গঠন প্রাইম বাংলা নিউজ: জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল লিখিত চুক্তি করেও ধার নেয়া টাকা নেয়নি মর্মে অস্বীকার, সরাইলে ভুক্তভোগীর আদালতে মামলা দায়ের ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস পালিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রফেসর ডাঃ ইব্রাহিম এর ৩৫ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত

সৌদীতে নিহত আরফিনের লাশ ৪ মাস পর পৌঁছে স্বজনদের আহাজারি

  • Reporter Name
  • Update Time : 07:49:50 pm, Wednesday, 5 October 2022
  • 411 Time View

সৌদীতে নিহত আরফিন

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ

সৌদী আরবে নিহতের ৪ মাস পর গতকাল বুধবার বিকেলে আরফিনের (৩২) লাশ পৌঁছে নিজ গ্রাম সরাইলের শাহজাদাপুরে । এর আগে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে একই গ্রামের ৮ জনের বিরূদ্ধে মামলা থাকায় সকালে সরাইল থানা থেকে ময়না তদন্তের জন্য লাশটি প্রেরণ করা হয়েছিল জেলা সদর হাসপাতালে। তরতাজা ছেলেকে পাঠিয়ে সাড়ে চার বছর পর কফিনে কুচকুচে কাল অবস্থায় দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মা বাবা। পরিবার ও স্বজনদের বুকফাঁটা আর্তনাদে কেঁপে ওঠে সেখানকার পরিবেশ। জানাযায় অংশ গ্রহন করেন সহস্রাধিক মানুষ। গোটা গ্রাম জুড়ে চলছে শোকের মাতম। আরফিনের মরদেহ এক নজর দেখার জন্য সহস্রাধিক মানুষের ভীড় জমে। মামলা ও পারিবারিক সূত্র জানায়, আরফিন শাহাজাদাপুর গ্রামের মো. আলমগীর খাঁনের ছেলে। প্রায় সাড়ে চার বছর আগে গ্রামের ফখরূল ইসলাম প্রকাশ ফরূখ মিয়াসহ (৪৮) ও জিতু রহমান (৫৫) কিছু দিন অবস্থানের পর ইটালিতে পাঠিয়ে দেওয়ার শর্তে আরফিনের পরিবারের কাছ থেকে ৬ লাখ গ্রহন করে। টাকা পেয়ে ফরূখরা নিজেরাই কাগজপত্র তৈরী করে। সৌদী নিয়ে দুলাল খানের তত্বাবধানের রাখেন। সেখানে দিনরাত আরফিনকে অমানুষিক পরিশ্রম করায়। তারা প্রতারণা ও ভয়ভীতি দেখাইয়া আরফিনের উপার্জিত অর্থ হাতিয়ে নেয়। এক সময় আরফিন তার কয়েক বছরের উপার্জিত অর্থ ফেরৎ চায়। ইটালিতে পাঠানোর দাবীও করেন। ফরূখ জিতু গংরা নীল নকশা তৈরী করেন। তারা আরেফিনকে ইটালি পাঠানোর আশ্বাস দিয়ে সেখানকার রাফা শহরের পার্শ্ববর্তী একটি মরূভূমির নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে আটক রেখে আরফিনের উপার্জিত ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে। এরপরও থামেনি তারা। আরফিনের পিতা আলমগীরের কাছে মুক্তিপণ দাবী করে। ছেলের প্রাণ রক্ষার্থে আলমগীর তাদেরকে আরো ৫ লাখ টাকা দেন। আটক আরফিনের পরিবারের কাছে পর্যায়ক্রমে টাকা চাইতে থাকে আসামীরা। ওদিকে পরিবারের লোকজন মুঠোফোনে ও অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমে আরফিনের সন্ধান পাচ্ছিলেন না। এক সময় সৌদী প্রবাসী গ্রামের এক নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে তারা জানতে পারেন পাচারের উদ্যেশ্যে আরফিনকে মরূভূমিতে আটক রেখে মোটা অংকের মুক্তিপণের দাবীতে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে। সৌদী আরবে অবস্থানরত আরফিনের বেশ কয়েকজন স্বজন বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। তারা জানিয়েছেন অভিযুক্তদের কথা বার্তা আচার আচরণ সন্দেহজনক। তাদের দেয়া তথ্যে রাফা সেন্ট্রাল হাসপাতালে আরফিনের লাশ পাওয়া গেছে। আরেফিনের মৃত্যু হয়েছে ২রা জুন। পরিবার মৃত্যুর খবর পেয়েছে এক মাস পর। এরপর গত ৩০ জুলাই ডিজিটাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডট কমে ‘সরাইলের আরেফিনকে সৌদীতে হত্যার অভিযোগ‘ছেলের লাশ দেখতে মায়ের আকুতি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এই সংবাদ লাশ আনার কাজে সহায়ক হয়েছে বলে জানিয়েছেন আরফিনের স্বজনরা। আর নিহতের ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর শনিবার আরফিনের ছোট ভাই মো. আশিক খাঁন বাদী হয়ে ফরূখ মিয়াকে প্রধান আসামী করে ৮ জনের বিরূদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। আজ বাদ আছর শাহজাদাপুর পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। নিহত আরফিনের পিতা আলমগীর খাঁন বলেন, আমার ছেলেকে ইটালি নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা পয়সা আত্মসাৎ করে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছে ওই চক্রটি। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। প্রসঙ্গত: এই হত্যাকান্ডের পর সৌদী পুলিশ সন্দেহজনক কারণে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছিল। পরে তারা ছাড়া পেয়ে গেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডায়াবেটিক সমিতির কমিটি গঠন

fapjunk
© All rights reserved ©
Theme Developed BY XYZ IT SOLUTION

সৌদীতে নিহত আরফিনের লাশ ৪ মাস পর পৌঁছে স্বজনদের আহাজারি

Update Time : 07:49:50 pm, Wednesday, 5 October 2022

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ

সৌদী আরবে নিহতের ৪ মাস পর গতকাল বুধবার বিকেলে আরফিনের (৩২) লাশ পৌঁছে নিজ গ্রাম সরাইলের শাহজাদাপুরে । এর আগে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে একই গ্রামের ৮ জনের বিরূদ্ধে মামলা থাকায় সকালে সরাইল থানা থেকে ময়না তদন্তের জন্য লাশটি প্রেরণ করা হয়েছিল জেলা সদর হাসপাতালে। তরতাজা ছেলেকে পাঠিয়ে সাড়ে চার বছর পর কফিনে কুচকুচে কাল অবস্থায় দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মা বাবা। পরিবার ও স্বজনদের বুকফাঁটা আর্তনাদে কেঁপে ওঠে সেখানকার পরিবেশ। জানাযায় অংশ গ্রহন করেন সহস্রাধিক মানুষ। গোটা গ্রাম জুড়ে চলছে শোকের মাতম। আরফিনের মরদেহ এক নজর দেখার জন্য সহস্রাধিক মানুষের ভীড় জমে। মামলা ও পারিবারিক সূত্র জানায়, আরফিন শাহাজাদাপুর গ্রামের মো. আলমগীর খাঁনের ছেলে। প্রায় সাড়ে চার বছর আগে গ্রামের ফখরূল ইসলাম প্রকাশ ফরূখ মিয়াসহ (৪৮) ও জিতু রহমান (৫৫) কিছু দিন অবস্থানের পর ইটালিতে পাঠিয়ে দেওয়ার শর্তে আরফিনের পরিবারের কাছ থেকে ৬ লাখ গ্রহন করে। টাকা পেয়ে ফরূখরা নিজেরাই কাগজপত্র তৈরী করে। সৌদী নিয়ে দুলাল খানের তত্বাবধানের রাখেন। সেখানে দিনরাত আরফিনকে অমানুষিক পরিশ্রম করায়। তারা প্রতারণা ও ভয়ভীতি দেখাইয়া আরফিনের উপার্জিত অর্থ হাতিয়ে নেয়। এক সময় আরফিন তার কয়েক বছরের উপার্জিত অর্থ ফেরৎ চায়। ইটালিতে পাঠানোর দাবীও করেন। ফরূখ জিতু গংরা নীল নকশা তৈরী করেন। তারা আরেফিনকে ইটালি পাঠানোর আশ্বাস দিয়ে সেখানকার রাফা শহরের পার্শ্ববর্তী একটি মরূভূমির নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে আটক রেখে আরফিনের উপার্জিত ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে। এরপরও থামেনি তারা। আরফিনের পিতা আলমগীরের কাছে মুক্তিপণ দাবী করে। ছেলের প্রাণ রক্ষার্থে আলমগীর তাদেরকে আরো ৫ লাখ টাকা দেন। আটক আরফিনের পরিবারের কাছে পর্যায়ক্রমে টাকা চাইতে থাকে আসামীরা। ওদিকে পরিবারের লোকজন মুঠোফোনে ও অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমে আরফিনের সন্ধান পাচ্ছিলেন না। এক সময় সৌদী প্রবাসী গ্রামের এক নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে তারা জানতে পারেন পাচারের উদ্যেশ্যে আরফিনকে মরূভূমিতে আটক রেখে মোটা অংকের মুক্তিপণের দাবীতে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে। সৌদী আরবে অবস্থানরত আরফিনের বেশ কয়েকজন স্বজন বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। তারা জানিয়েছেন অভিযুক্তদের কথা বার্তা আচার আচরণ সন্দেহজনক। তাদের দেয়া তথ্যে রাফা সেন্ট্রাল হাসপাতালে আরফিনের লাশ পাওয়া গেছে। আরেফিনের মৃত্যু হয়েছে ২রা জুন। পরিবার মৃত্যুর খবর পেয়েছে এক মাস পর। এরপর গত ৩০ জুলাই ডিজিটাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডট কমে ‘সরাইলের আরেফিনকে সৌদীতে হত্যার অভিযোগ‘ছেলের লাশ দেখতে মায়ের আকুতি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এই সংবাদ লাশ আনার কাজে সহায়ক হয়েছে বলে জানিয়েছেন আরফিনের স্বজনরা। আর নিহতের ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর শনিবার আরফিনের ছোট ভাই মো. আশিক খাঁন বাদী হয়ে ফরূখ মিয়াকে প্রধান আসামী করে ৮ জনের বিরূদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। আজ বাদ আছর শাহজাদাপুর পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। নিহত আরফিনের পিতা আলমগীর খাঁন বলেন, আমার ছেলেকে ইটালি নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা পয়সা আত্মসাৎ করে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছে ওই চক্রটি। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। প্রসঙ্গত: এই হত্যাকান্ডের পর সৌদী পুলিশ সন্দেহজনক কারণে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছিল। পরে তারা ছাড়া পেয়ে গেছেন।