ঢাকা ১২:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫৪ কেজি গাঁজাসহ ২ জন গ্রেফতার ব্রাহ্মণবাড়িয়া খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানায় ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠিত চলা চলের রাস্তায় বেড়া নির্মাণ, একসপ্তাহ ধরে অবরুদ্ধ বৃদ্ধ কাজল মিয়ার পরিবার রূপম ধরের তুলিতে তিতাস পাড়ের গল্প: তরী বাংলাদেশের নদী সম্মেলন সংবাদ সম্মেলনের মিথ্যা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সংবাদ প্রকাশে প্রতিবাদ: বেদে প্রেমিক যুগলের বিষপান, হাসপাতালে ভর্তি একটি পরিবারকে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ আ.লীগ নেতা ও এস.আই’র বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এনেসথেসিয়া সোসাইটির কমিটি গঠন, নেতৃত্বে ডা. মকবুল-ডা. আরিফ ৫০ কেজি গাঁজা ১টি পিকআপ ভ্যানসহ ১ জন গ্রেফতার জনগণের ভালবাসা নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে-খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল

সরাইল পিডিবি’র তেলেসমতি ভৌতিক বিলে দিশেহারা ১৯ সহস্রাধিক গ্রাহক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:২৪:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ৫৯ বার পড়া হয়েছে

সরাইল পিডিবি’র তেলেসমতি ভৌতিক বিলে দিশেহারা ১৯ সহস্রাধিক গ্রাহক

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে কোন ভাবেই পিছু ছাড়ছে না পিডিবি’র তেলেসমতি। এবারের তেলেসমতিতে ভৌতিক বিলে দিশেহারা এখানকার ১৯ সহস্রাধিক গ্রাহক। আর সভা করে গ্রাহকদের উপর এই বিল চাপিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই দফতরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এই সিদ্ধান্তের বিরূদ্ধে প্রতিবাদও করেছেন অনেক কর্মচারী। গত দুই মাসেরও অধিক সময় ধরে মিটারের রিডিং এর সাথে মিল নেই বিলের। গ্রাহকদের কাছ থেকে ২০০ থেকে ২৫০০ রিডিং পর্যন্ত অগ্রিম নিয়ে যাচ্ছেন। নিজেদের নানা অনিয়ম দূর্নীতির ঘাটতি পূরণ করতেই গ্রাহকদের চেপে ধরার বিষয়টি চাউর হচ্ছে গোটা সরাইলে।

অনুসন্ধানে অফিস ও গ্রাহক সূত্র জানায়, সরাইল পিডিবি’র গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৪৬৭১১ জন। এরমধ্যে ডিজিটাল ১৯৭৯০ জন ও প্রিপ্রেইড মিটারের গ্রাহক ২৬৯২১ জন। গত ৮-১০ বছর আগে আবাসিক প্রকৌশলীর কার্যালয় থাকতে ভৌতিক বিলের চাপে রাস্তায় নেমেছিল তখনকার ১৪-১৫ হাজার গ্রাহক। মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছিলেন তারা। স্বারকলিপি দিয়েছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে। ক্ষতির ঘানি গ্রাহকদের ঘাড়ে দিয়েই পিডিবিকে কোন রকমে রক্ষা করেছিলেন উপজেলা প্রশাসন। এরপর উন্নীত হয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় (বিক্রয় ও বিতরণ) হলো। আশায় বুক বেধেঁছিল গ্রাহকরা। সেই আশায় গুড়েবালি দিয়ে মিটার বাণিজ্যে মেতে আবারও বিরাট তেলেসমতি দেখিয়েছিল পিডিবি। পিডিবি’র কাছে গ্রাহকদের পাওনার রেকর্ড ধামাচাপা দিতে এনালগ মিটার গুলি বাতিলের নির্দেশ দিলেন। শুরূ করলেন ডিজিটাল মিটার বাণিজ্যে। বিলের ঝামেলা এড়ানোর আশ্বাস দিয়ে গ্রাহকদের ডিজিটাল মিটার ক্রয় করতে বাধ্য করলেন। বছর না পেরূতেই সরাইল পিডিবি’র আরেক তেলেসমতি।

ডিজিটাল মিটার বদল করে প্রিপ্রেইড মিটার লাগানোর ঘোষণা দিলেন। মিটিং মিছিল সভা সেমিনার করে গ্রাহকদের হাতে প্রিপ্রেইড মিটার তুলে দেয়ার কাজ শুরূ করেন সরাইল পিডিবি। অথচ সেই সময়ে জেলার অন্য কোন উপজেলায় প্রিপ্রেইড মিটার ছিল না। এখনো নেই। প্রিপেইড মিটার নিয়ে প্রথম দিকে হাজারো সমস্যার মধ্যে পড়েন গ্রাহকরা। সরাইলে বর্তমানে প্রিপ্রেইড মিটার গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ২৬ সহস্রাধিক। আর ডিজিটাল মিটারের গ্রাহক সংখ্যাও ১৯ সহস্রাধিক। গত কয়েক মাস ধরে আবার চেপে ধরেছেন ডিজিটাল মিটারের গ্রাহকদের। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শতকরা ১৫-২০ ভৌতিক বিল করার। একাধিক কর্মচারী এই সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করেছেন। অনেকে চাকরী ছেড়ে দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন। তারপরও কর্তাবাবুরা গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। যেই সিদ্ধান্ত সেই কাজ। গ্রাহকদের কাছে বিলের কাগজ যাওয়ার পরই চারিদিকে হৈ চৈ শুরূ হয়ে যায়। সরব হয়ে ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। কোন গ্রাহকের মিটার রিডিং এর সাথে বিলের কাগজে লেখা রিডিং এর মিল নেই। সরাইল সদরের ছোটদেওয়ান পাড়ার হারূর অর রশিদের মিটারে (হি. নং-এ ৩২৫) আছে ২০৪২৪ ইউনিট।

পিডিবি দেখিয়েছেন ২৩৩৮০ ইউনিট। ২৯৫৬ ইউনিট পিডিবি’র কাছে পাবেন গ্রাহক। মো. শামসুল হকের (হি. নং-এ ১৯৯০৩) মিটার রিডিং ৬৯৬৬ ইউনিট, বিল দেয়া হয়েছে ৭৭০০ ইউনিটের। ৭৩৪ ইউনিট বেশী। মো. হামিদ মিয়ার (হি.নং-এ ৪৭৮২) মিটারে গত ১৯ সেপ্টেম্বরের রিডিং ১৫২০৯ ইউনিট। বিলের কাগজে রিডিং ১৫৮১০ ইউনিট। ৬০১ ইউনিটের বিল গ্রাহককে অগ্রিম দিতে হবে। ফাতেমা বেগমের মিটার রিডিং ৩৫৭০ ইউনিট। অথচ বিলে দেখানো হয়েছে ৩৮২০ ইউনিট। ২২৫ ইউনিট বেশী। রওশন আলীর (হি.নং-এ১৭৬৯৫) গত আগষ্ট মাসে মিটার রিডিং ১৩৭৩৫ ইউনিট। আর বিলে দেখানো হয়েছে ১৩৯৬০ ইউনিট। ২২৫ ইউনিটই বেশী। বছর শেষে এর পরিমাণ দাঁড়াবে ৭৮৬০ ইউনিট। মো. আ. রাজ্জাকের মিটারের বর্তমান রিডিং ৫৬০৪ ইউনিট। বিলের কাগজে ৫৯০০ ইউনিট। গ্রাহকের ঘাড়ে ২৯৬ ইউনিট। মো. হারূন মিয়ার (হি.নং-এ২৬৩৮) মিটার রিডিং ১৩৮৮০ ইউনিট। এই মাসের বিলে দেখানো হয়েছে ১৪১৫০ ইউনিট। ২৭০ ইউনিট বেশী। মকবুল হোসেইনের মিটারে আছে ২০৫৩২ ইউনিট। পিডিবি বিল দিয়েছেন ২১৩২০ ইউনিটের। ৭৮৮ ইউনিটই বেশী। বড়দেওয়ান পাড়ার হোসনে আরা বেগমের মিটার রিডিং ৩১৩৯৪ ইউনিট। বিল করা হয়েছে ৩১৪৪০ ইউনিটের। ৪৬ ইউনিট বেশী। ডিজিটাল মিটারের সকল গ্রাহকেরই বিলের একই অবস্থা।

মোগলটোলা গ্রামের লিয়াকত আলী জানান মিটার অনুসারে পিডিবি’র কাছে তিনি দুই সহস্রাধিক ইউনিট পাবেন। মো. সালাহ উদ্দিনের মিটার ও বিলের পার্থক্য ৫০০ ইউনিট। মাসুদ রানা মন্তব্য করেন উনার মিটারে ৯৬০০ ইউনিট। কিন’ বিলের কাগজে ১১৭০০ ইউনিট। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অগণিত গ্রাহক তাদের মন্তব্য লিখেছেন। জহিরূল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, মীর সোহাগ, এস কে সজল শেখ, কামরূল আলম, সেলিম ইফরাত, জাকির হোসেন সহ অনেকেই লিখেছেন-সরাইলে পিডিব’র লোকদের কাছে গ্রাহকরা জিম্মি। তাই তারা ইচ্ছেমত লুটপাট করছে। মিটার না দেখে অফিসে বসে বিল করছেন। তাদের অনিয়ম দূর্নীতির ঘানি নিরীহ দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির গ্রাহকদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধিরা রহস্যজনক কারণে তাদের পক্ষেই থাকেন। অনেক গ্রাহকের অভিযোগ পিডিবি’র কাছে কোন গ্রাহকের রিডিং পাওনা থাকলে কৌশলে বুঝিয়ে ওই মিটারটিকে বিকল বা নষ্ট খেতাব দিয়ে পরিবর্তন করিয়ে পাওনা মাটি দেন। আর পিডিবি এক রিডিং পাওনা থাকলেও বিল দিতে হবে। নতুবা মামলা।

সরাইল পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) আব্দুর রউফ সকল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, সরাইল হচ্ছে গ্রাহকদের অনিয়মের স্বর্গরাজ্য। ইমপোর্ট বাড়লে বিল বাড়াতে হয়। তাই সামান্য বাড়িয়েছি। এক সময় ঠিক হয়ে যাবে। অন্য জায়গায় শাস্তি পাওয়া ষ্টাফদের সরাইলে দেয়া হয়। এরাই হলো গলার কাঁটা। এদেরকে না পারি রাখতে। না পারি দৌঁড়াতে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রাহকের কাছে একটি রিডিং পাওনা থাকলেও সেটার বিল পরিশোধ করতে হবে। আর গ্রাহক পিডিবি’র কাছে পাওনা থাকলে সেটা রিটার্ন বা পরিশোধের কোন সিস্টেম/ নিয়ম নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সরাইল পিডিবি’র তেলেসমতি ভৌতিক বিলে দিশেহারা ১৯ সহস্রাধিক গ্রাহক

আপডেট সময় : ১০:২৪:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে কোন ভাবেই পিছু ছাড়ছে না পিডিবি’র তেলেসমতি। এবারের তেলেসমতিতে ভৌতিক বিলে দিশেহারা এখানকার ১৯ সহস্রাধিক গ্রাহক। আর সভা করে গ্রাহকদের উপর এই বিল চাপিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই দফতরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এই সিদ্ধান্তের বিরূদ্ধে প্রতিবাদও করেছেন অনেক কর্মচারী। গত দুই মাসেরও অধিক সময় ধরে মিটারের রিডিং এর সাথে মিল নেই বিলের। গ্রাহকদের কাছ থেকে ২০০ থেকে ২৫০০ রিডিং পর্যন্ত অগ্রিম নিয়ে যাচ্ছেন। নিজেদের নানা অনিয়ম দূর্নীতির ঘাটতি পূরণ করতেই গ্রাহকদের চেপে ধরার বিষয়টি চাউর হচ্ছে গোটা সরাইলে।

অনুসন্ধানে অফিস ও গ্রাহক সূত্র জানায়, সরাইল পিডিবি’র গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৪৬৭১১ জন। এরমধ্যে ডিজিটাল ১৯৭৯০ জন ও প্রিপ্রেইড মিটারের গ্রাহক ২৬৯২১ জন। গত ৮-১০ বছর আগে আবাসিক প্রকৌশলীর কার্যালয় থাকতে ভৌতিক বিলের চাপে রাস্তায় নেমেছিল তখনকার ১৪-১৫ হাজার গ্রাহক। মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছিলেন তারা। স্বারকলিপি দিয়েছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে। ক্ষতির ঘানি গ্রাহকদের ঘাড়ে দিয়েই পিডিবিকে কোন রকমে রক্ষা করেছিলেন উপজেলা প্রশাসন। এরপর উন্নীত হয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় (বিক্রয় ও বিতরণ) হলো। আশায় বুক বেধেঁছিল গ্রাহকরা। সেই আশায় গুড়েবালি দিয়ে মিটার বাণিজ্যে মেতে আবারও বিরাট তেলেসমতি দেখিয়েছিল পিডিবি। পিডিবি’র কাছে গ্রাহকদের পাওনার রেকর্ড ধামাচাপা দিতে এনালগ মিটার গুলি বাতিলের নির্দেশ দিলেন। শুরূ করলেন ডিজিটাল মিটার বাণিজ্যে। বিলের ঝামেলা এড়ানোর আশ্বাস দিয়ে গ্রাহকদের ডিজিটাল মিটার ক্রয় করতে বাধ্য করলেন। বছর না পেরূতেই সরাইল পিডিবি’র আরেক তেলেসমতি।

ডিজিটাল মিটার বদল করে প্রিপ্রেইড মিটার লাগানোর ঘোষণা দিলেন। মিটিং মিছিল সভা সেমিনার করে গ্রাহকদের হাতে প্রিপ্রেইড মিটার তুলে দেয়ার কাজ শুরূ করেন সরাইল পিডিবি। অথচ সেই সময়ে জেলার অন্য কোন উপজেলায় প্রিপ্রেইড মিটার ছিল না। এখনো নেই। প্রিপেইড মিটার নিয়ে প্রথম দিকে হাজারো সমস্যার মধ্যে পড়েন গ্রাহকরা। সরাইলে বর্তমানে প্রিপ্রেইড মিটার গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ২৬ সহস্রাধিক। আর ডিজিটাল মিটারের গ্রাহক সংখ্যাও ১৯ সহস্রাধিক। গত কয়েক মাস ধরে আবার চেপে ধরেছেন ডিজিটাল মিটারের গ্রাহকদের। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শতকরা ১৫-২০ ভৌতিক বিল করার। একাধিক কর্মচারী এই সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করেছেন। অনেকে চাকরী ছেড়ে দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন। তারপরও কর্তাবাবুরা গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। যেই সিদ্ধান্ত সেই কাজ। গ্রাহকদের কাছে বিলের কাগজ যাওয়ার পরই চারিদিকে হৈ চৈ শুরূ হয়ে যায়। সরব হয়ে ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। কোন গ্রাহকের মিটার রিডিং এর সাথে বিলের কাগজে লেখা রিডিং এর মিল নেই। সরাইল সদরের ছোটদেওয়ান পাড়ার হারূর অর রশিদের মিটারে (হি. নং-এ ৩২৫) আছে ২০৪২৪ ইউনিট।

পিডিবি দেখিয়েছেন ২৩৩৮০ ইউনিট। ২৯৫৬ ইউনিট পিডিবি’র কাছে পাবেন গ্রাহক। মো. শামসুল হকের (হি. নং-এ ১৯৯০৩) মিটার রিডিং ৬৯৬৬ ইউনিট, বিল দেয়া হয়েছে ৭৭০০ ইউনিটের। ৭৩৪ ইউনিট বেশী। মো. হামিদ মিয়ার (হি.নং-এ ৪৭৮২) মিটারে গত ১৯ সেপ্টেম্বরের রিডিং ১৫২০৯ ইউনিট। বিলের কাগজে রিডিং ১৫৮১০ ইউনিট। ৬০১ ইউনিটের বিল গ্রাহককে অগ্রিম দিতে হবে। ফাতেমা বেগমের মিটার রিডিং ৩৫৭০ ইউনিট। অথচ বিলে দেখানো হয়েছে ৩৮২০ ইউনিট। ২২৫ ইউনিট বেশী। রওশন আলীর (হি.নং-এ১৭৬৯৫) গত আগষ্ট মাসে মিটার রিডিং ১৩৭৩৫ ইউনিট। আর বিলে দেখানো হয়েছে ১৩৯৬০ ইউনিট। ২২৫ ইউনিটই বেশী। বছর শেষে এর পরিমাণ দাঁড়াবে ৭৮৬০ ইউনিট। মো. আ. রাজ্জাকের মিটারের বর্তমান রিডিং ৫৬০৪ ইউনিট। বিলের কাগজে ৫৯০০ ইউনিট। গ্রাহকের ঘাড়ে ২৯৬ ইউনিট। মো. হারূন মিয়ার (হি.নং-এ২৬৩৮) মিটার রিডিং ১৩৮৮০ ইউনিট। এই মাসের বিলে দেখানো হয়েছে ১৪১৫০ ইউনিট। ২৭০ ইউনিট বেশী। মকবুল হোসেইনের মিটারে আছে ২০৫৩২ ইউনিট। পিডিবি বিল দিয়েছেন ২১৩২০ ইউনিটের। ৭৮৮ ইউনিটই বেশী। বড়দেওয়ান পাড়ার হোসনে আরা বেগমের মিটার রিডিং ৩১৩৯৪ ইউনিট। বিল করা হয়েছে ৩১৪৪০ ইউনিটের। ৪৬ ইউনিট বেশী। ডিজিটাল মিটারের সকল গ্রাহকেরই বিলের একই অবস্থা।

মোগলটোলা গ্রামের লিয়াকত আলী জানান মিটার অনুসারে পিডিবি’র কাছে তিনি দুই সহস্রাধিক ইউনিট পাবেন। মো. সালাহ উদ্দিনের মিটার ও বিলের পার্থক্য ৫০০ ইউনিট। মাসুদ রানা মন্তব্য করেন উনার মিটারে ৯৬০০ ইউনিট। কিন’ বিলের কাগজে ১১৭০০ ইউনিট। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অগণিত গ্রাহক তাদের মন্তব্য লিখেছেন। জহিরূল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, মীর সোহাগ, এস কে সজল শেখ, কামরূল আলম, সেলিম ইফরাত, জাকির হোসেন সহ অনেকেই লিখেছেন-সরাইলে পিডিব’র লোকদের কাছে গ্রাহকরা জিম্মি। তাই তারা ইচ্ছেমত লুটপাট করছে। মিটার না দেখে অফিসে বসে বিল করছেন। তাদের অনিয়ম দূর্নীতির ঘানি নিরীহ দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির গ্রাহকদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধিরা রহস্যজনক কারণে তাদের পক্ষেই থাকেন। অনেক গ্রাহকের অভিযোগ পিডিবি’র কাছে কোন গ্রাহকের রিডিং পাওনা থাকলে কৌশলে বুঝিয়ে ওই মিটারটিকে বিকল বা নষ্ট খেতাব দিয়ে পরিবর্তন করিয়ে পাওনা মাটি দেন। আর পিডিবি এক রিডিং পাওনা থাকলেও বিল দিতে হবে। নতুবা মামলা।

সরাইল পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ) আব্দুর রউফ সকল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, সরাইল হচ্ছে গ্রাহকদের অনিয়মের স্বর্গরাজ্য। ইমপোর্ট বাড়লে বিল বাড়াতে হয়। তাই সামান্য বাড়িয়েছি। এক সময় ঠিক হয়ে যাবে। অন্য জায়গায় শাস্তি পাওয়া ষ্টাফদের সরাইলে দেয়া হয়। এরাই হলো গলার কাঁটা। এদেরকে না পারি রাখতে। না পারি দৌঁড়াতে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রাহকের কাছে একটি রিডিং পাওনা থাকলেও সেটার বিল পরিশোধ করতে হবে। আর গ্রাহক পিডিবি’র কাছে পাওনা থাকলে সেটা রিটার্ন বা পরিশোধের কোন সিস্টেম/ নিয়ম নেই।