ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ৩ ভূয়া ডিবি পুলিশকে আটক করেছে সরাইল থানা পুলিশ। নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে প্রথমে প্রাইভেটকার ভাড়া করে চক্রটি। পরে সড়কে যাত্রী ও চালকের কাছ থেকে মুঠোফোনসেট, নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়ার দায়ে রবিবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- জিল্লুর রহমান (৩৫), রাজন মিয়া (২৪) ও চালক সুমন মিয়া (২৬)। তাদের বিরূদ্ধে মো. শান্ত মিয়া বাদী হয়ে সরাইল থানায় মামলা করেছেন। গতকাল সোমবার আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অটোরিকশা চালক ও প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় লোকজন জানায়, রবিবার ভোরে কাউছার মিয়া (৩০) নামের একজন যাত্রীকে নিয়ে বিশ্বরোড মোড় থেকে অরূয়াইলের দিকে রওনা দেয় অটোরিকশা (নং-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-থ-১১-২৫৮৫) চালক মো. শান্ত মিয়া। কাউছার অরূয়াইল ইউনিয়নের রাণিদিয়া গ্রামের তজুল ইসলামের ছেলে। তার বিরূদ্ধে রয়েছে নানা অপরাধের মামলা। সরাইল-অরূয়াইল সড়কের কালীকচ্ছ বিষুতারা এলাকায় যাওয়ার পর পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা একটি প্রাইভেটকার ( নং-১১-৭৯৭২) তাদের পিছু নেয়। অটোরিকশাটি করাতকান্দী এলাকায় গেলে প্রাইভেটকারটি ওভারটেক করে সামনে চলে যায়। ভোর পাঁচটায় চুন্টার কালীবাড়ি বরাবর যাওয়ার পর প্রাইভেট কারটি অটোরিকশার সামনে আড়াআড়ি করে দাঁড়িয়ে পড়ে। দূর থেকে কয়েকজন মহিলাকেও দেখা যায়। নিরূপায় হয়ে গতিরোধ করে দাঁড়াতে বাধ্য হয় অটোরিকশাটি। এ সময় কার থেকে মুখোশধারী পাঁচজন লোক এক সাথে নেমে আসে। তারা প্রথমে নিজেদের ডিবি পরিচয় দিয়ে অটোরিকশার যাত্রী জনৈক যুবককে টেনে খিঁচড়ে নামিয়ে তাদের গাড়িতে ওঠিয়ে ফেলে। পরে অটোরিকশা চালক শান্তকে বেদরক মারধর করে তার কাছে থাকা নগদ ১৫ শত টাকা ছিনিয়ে নেয়। যাত্রী কাউছারের কাছ থেকে মুঠোফোন, নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ অন্যান্য মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে সরাইলের দিকে চলে আসে। চালক শান্ত আহত হয়ে ভয়ে দ্রূত স্থান ত্যাগ করে। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি দ্রূত পুলিশকে অবহিত করেন। অভিযানে নামে সরাইল থানা পুলিশ। অভিযানকালে গত রবিবার রাতে সরাইলের বিভিন্ন জায়গা থেকে দলনেতা ঘটনার মূল হোতা নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আখিঁতারা গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে জিল্লুর রহমান, সরাইল সদরের সৈয়দটুলা গ্রামের ইদন মিয়ার ছেলে রাজন মিয়া (২৪) ও কার চালক কালীকচ্ছ মনিরবাগ এলাকার আসাদ মিয়ার ছেলে সুমন মিয়াকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ হেফাজতে থাকা রাজন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমাদেরকে গাড়ি ভাড়া করে বিষয়টি বুঝিয়ে বিষুতারা এলাকায় পাঠিয়েছেন জিল্লুর। আমি চালক শান্তকে থাপ্পর দিয়েছি। জিল্লুর নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে অটোরিকশা থেকে কাউছারকে শার্টের কলারে ধরে টেনে নামিয়ে কারটিতে ওঠিয়েছেন। আমি চেক করেছি। আর জিল্লুর কাউছারের সবকিছু লুটে নিয়েছেন। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, বড় মাপের প্রতারক মলম পার্টির হোতা জিল্লুর দলনেতা। তার বিরূদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, প্রতারণা, মলমপার্টিসহ নানা অভিযোগে ঢাকার রামপুরা, মিরপুর ও সরাইল থানায় বেশ কয়েকটি মামলা আছে। জজ কোর্টের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে। মেডিসিনের সাহায্যে মহিলাদের অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগও রয়েছে জিল্লুর বিরূদ্ধে।
মাহবুব খান বাবুল