ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফটকের তালা কেটে দূর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। উপজেলা সদরের সৈয়দটুলা উত্তর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত রোববার দিবাগত রাতে দেড় লক্ষাধিক টাকার মালামাল চুরি হয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছেন, নৈশ প্রহরী রাসেল মিয়া নিয়মিত দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে আসছেন। রাসেল বলছেন রাত ১২টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে বাড়িতে চলে যান। তার বদলা ঝাঁড়ু দেন সামছু বেগম। প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, থানায় সাধারণ ডায়েরী করতে গেলে (মঙ্গলবারে) ঘটনাস্থল সরজমিনে তদন্ত করে শেষে জিডি গ্রহনের কথা জানিয়েছেন পুলিশ।
বিদ্যালয় সূত্র জানায়, অন্যান্য দিনের মত গত রোববারও পাঠদানসহ অন্যান্য কাজ শেষ করে দরজা জানালা বন্ধ করে প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন সকল শিক্ষক শিক্ষিকা। পরের দিন অর্থাৎ সোমবার সকালে যথা নিয়মে যথা সময়ে বিদ্যালয়ে হাজির হন শিক্ষকরা। তারা বিদ্যালয়ের নীচতলার তালা কাটা দেখতে পেলেও বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ বন্ধ পান। কিন্তু পাশের একটি কক্ষে রক্ষিত সোলারে ব্যবহৃত বড় ১টি ব্যাটারী ও একটি পানির পাম্প নেই। পরে দ্বিতীয়তলায় গিয়ে দেখেন ক্লাক্সিবল গেইটের তালা কাটা। সেখানে ১টি কক্ষে রক্ষিত বড় ব্যাটারিও নেই। অর্থাৎ ২টি ব্যাটারী সহ প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকা মূল্যের মালামাল নিয়ে গেছে চুরেরা। তবে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়ে নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগ পাওয়া রাসেল মিয়ার বিরূদ্ধে কর্তৃপক্ষের রয়েছে এন্তার অভিযোগ। কর্তৃপক্ষ বলছেন সঠিক সময়ে নিয়মিত ভাবে দায়িত্ব পালন করেন না।
দিনে রাতে যখন মন চায় বিদ্যালয়ে আসেন। ইচ্ছেমত আবার বাড়ি চলে যান। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কথা শুনেন না। নৈশ প্রহরী রাসেল নিজেই মুঠোফোনে বলেন, আমি রাত ১২টা কোন সময় ১টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে থাকি। এরপর বাড়িতে গিয়ে ঘুমায়। কারণ আবার মাঝে মধ্যে সকালে আসতে হয়। বিদ্যালয় ঝাঁড়ু মুছার কাজটি আমি বদলি দিয়ে রেখেছি সামছু আপাকে। আমি মাস শেষে ১৬ হাজার ১ শত টাকা পায়। সামছু আপাকে ২ হাজার টাকা দেয়। দায়িত্ব ঠিক মতই পালন করছি। কে বা কাহারা চুরি করেছে বলতে পারছি না। তবে খুঁজ খবর নিয়ে চুর ধরা পড়তে পারে। প্রধান শিক্ষক মাহবুবা আক্তার শাপলা চুরির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রায় ১১ বছর আগে বিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত নৈশ প্রহরী মো. রাসেল মিয়া দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা করে আসছেন। তার অবহেলার বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে একাধিকবার লিখিত ভাবে অবহিত করেছি। রোববারের চুরির বিষয়টি এসএমসিকে জানিয়েছি। জিডি করার জন্য সরাইল থানায় গিয়েছিলাম। পুলিশ বলেছেন মঙ্গলবারে (আজ) সরজমিনে ঘটনাস্থল তদন্ত করে জিডি নথিভুক্ত করবেন। বিষয়টি দেখার দায়িত্বপ্রাপ্ত এস আই মো. রহমান খান পাঠান বলেন, আগামীকাল (মঙ্গলবার) এসে জিডিতে স্বাক্ষর করে জমা দিতে বলেছি। তারপর চেষ্টা করে দেখি বের করতে পারি কিনা।