সরাইলের পানিশ্বর ইউনিয়নের বিটঘর গ্রামে গত শুক্রবার বিকালে পানিতে ডুবে মারা গেছে মাহিদুল ইসলাম ইয়াছিন নামের ১৮ মাস বয়সের এক শিশু। ইয়াছিনের মৃত্যুকে ঘিরে নানা রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুকুর থেকে ভাসমান লাশটি উদ্ধারের পর ইয়াছিনের দাদা টিঘর গ্রামের মোহাম্মদ আলী তদন্ত করে মৃত্যুর পেছনের কারণ বের করার দাবী করেন পুলিশের কাছে। পুলিশ শুক্রবার রাতে ময়না তদন্তের জন্য শিশুর লাশটি পাঠিয়ে দেন জেলা সদর হাসপাতালে। আজ শনিবার বিকেলে ইয়াছিনের মরদেহ দাদার বাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। পুলিশ, নিহত শিশুর স্বজন ও এলাকাবাসী জানায়, টিঘর গ্রামের আহমদ আলীর ছেলে বশির আহমেদের সাথে আড়াই বছর আগে বিয়ে হয় বিটঘর গ্রামের নুর মিয়ার মেয়ে শিউলী আক্তারের। বিয়ের পর তাদের ঘরে জন্ম নেয়া শিশুটিই হচ্ছে ইয়াছিন। পারিবারিক জীবন ভাল যাচ্ছিল না বশির উদ্দিনের। কারণ শ্বশুর-শ্বাশুরি ও স্বামীর সাথে নিয়মিতই মনোমালণ্য চলে আসছিল শিউলী আক্তারের। স্বামী বশিরের সাথেও প্রায়ই বনিবনা হত না। ক্ষোভে দু:খে ৬ মাস আগে গা ঢাকা দিয়েছেন বশির। গত এপ্রিল মাসে শিশু ইয়াছিনকে নিয়ে বিটঘর বাবার বাড়িতে চলে যান শিউলী। শিউলী গত ৪ মাস ধরে আর স্বামীর বাড়িতে যাচ্ছিলেন না। ওদিকে নাতিকে বাড়িতে নেয়ার অনেক চেষ্টা করলেও পুত্রবধূ শিউলীর কারণে ব্যর্থ হন দাদা মোহাম্মদ আলী। ছেলে নাতি কাউকে কাছে না পাওয়ার বেদনা কূঁড়ে খাচ্ছিল তাকে। গত দুই মাস আগে ছেলে বশির নিখোঁজ হয়েছে মর্মে সরাইল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন মোহাম্মদ আলী। জিডির দুই মাস পর শিউলীদের বাড়িতে নাতির পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনায় সন্দেহ দানা বেধেঁছে মোহাম্মদ আলীর মনে। তাই তিনি শিশু ইয়াছিনের মৃত্যুর পেছনের কারণ জানতে লিখিত ভাবে পুলিশের সহায়তা চেয়েছেন। ওদিকে একমাত্র শিশু সন্তানকে হারিয়ে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন মা শিউলী। এ ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই পঙ্কজ দাশ বলেন, পরিবারের দেয়া তথ্যমতে শুক্রবার বিকাল ৪ টার দিকে পুকুরে ভাসমান শিশুর লাশটি উদ্ধার করে সূরতহাল রিপোর্ট করেছি। লাশের শরীরে আঘাতের কোন চিহ্ন নেই। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে পানিতে ডুবেই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন আসার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
মাহবুব খান বাবুল