সরাইলে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলার প্রধান আসামী কানাই’র ফাঁসির আদেশ
- আপডেট সময় : ০৭:০০:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩ ১৫৪ বার পড়া হয়েছে
মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ১০ বছর বয়সের শিশু শিক্ষার্থী জয়নবকে (১০) ধর্ষণের পর হত্যা মামলার প্রধান আসামী কানাইয়ের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘ তিন বছরেরও অধিক সময় পর আজ ২০ জুলাই বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর বিচারিক হাকিম মো. রেজাউল করিম এই রায় দিয়েছেন। সেই সাথে ধর্ষকের এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। দন্ডপ্রাপ্ত কানাই মিয়া সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম কুট্রাপাড়া গ্রামের প্রয়াত নিবু মিয়ার ছেলে। আজ দিনভর ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালত পাড়ার প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে ধর্ষক ও খুনি কানাইয়ের ফাঁসির আদেশ। আদালতের এই আদেশে সন্তোষ্ট শিশুটির মা বাবা সহ পরিবারের সদস্যরা। এই রায় দ্রূত কার্যকর ও বাস্তবায়ন দেখতে চান তারা।
মামলা সূত্র জানায়, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে ফিরে আসার সময় নিখোঁজ হয় পশ্চিম কুট্রাপাড়া গ্রামের মো. হাফিজ মিয়ার কন্যা শিশু জয়নব আক্তার (১০)। জয়নব তখন পশ্চিম কুট্রাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। পরের দিন ১৭ ডিসেম্বর সকালে আশপাশের বাড়ি ঘরে ও স্বজনদের বাড়িতে খুঁজে ছাত্রীর সন্ধান মিলেনি। ছাত্রীর সন্ধান পেতে পরিবারের লোকজন গোটা এলাকায় মাইকিং করেন। এরপরও ছাত্রীটির কোন সন্ধান মিলছিল না। পরন্ত বিকেলে বজলু মিয়ার স্ত্রী নির্জন স্থানের একটি বাঁশঝাঁড়ে গিয়ে দেখেন শিশুটির লাশ পড়ে আছে। লাশের উপর দিয়ে পোকা মাকড় হাঁটছে। পড়নে জামা রয়েছে। কিন্তু সেলুয়ারটি না থাকায় বিবস্র। পরে লোকজন কাল রংয়ের একটি কাপড় দিয়ে শিশুর শরীর ঢেকে দেন। পুলিশ জয়নবের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় জয়নবের মা ফেরদৌসি বেগম বাদী হয়ে সরাইল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে পুলিশ কানাইকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। কানাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আয়েশা আক্তারের আদালতে এই ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। কানাই জানায়, চকলেট দিয়া জয়নবকে লোভ দেখাইয়া নিজের ঘরে নিয়ে মারধর করে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষষের পর শিশুটিকে গলা টিপে হত্যা করে। রাতের বেলা শিশুর লাশটি শাড়ি কাপড় দিয়া পেছাইয়া কানাই একাই কাঁধে করে নিয়ে বাড়ির পাশের বাঁশ ঝাড়ে জয়নবের লাশ ফেলে দিয়ে আসে। আদালতের আদেশে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে ফেরদৌসি বেগম বলেন, আমার নিস্পাপ কন্যা শিশুর খুনির বিচার পেয়েছি। এখন দ্রূত রায় কার্যকর হলে আমার মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে। মামলার কৌশলী এডভোকেট সৈয়দ মেরাজুল ইসলাম বলেন, শিশ জয়নবকে ধর্ষণ ও নৃশংসভাবে হত্যাকান্ডের ঘটনায় আসামী কানাইয়ের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর প্রেক্ষিতে আদালত তাকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। এই রায়ে বাদী পক্ষ সন্তুষ্ট। ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের পরিদর্শক দিদারূল আলম জানান, শিশু ধর্ষণের ঘটনায় আদালত একজনকে ফাঁসির রায় দিয়েছেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামীকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।