ঢাকা ০৩:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক দূর্ঘটনায় পথচারী নিহত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদক বিরোধী অভিযানে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ৩ জন গ্রেফতার “আবেশ” এর উদ্যোগে দিনব্যাপী “গেট টুগেদার এন্ড পিকনিক ২০২৫অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ছেলের হাতে মা খুন অবৈধভাবে শটগানের কার্তুজসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার তারুণ্যের উৎসবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে পিঠা উৎসব ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোটরসাইকেল সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে এক নারী নিহত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমিন এসোসিয়েশনের জরুরি সভায় সার্ভেয়ার এমরানকে বয়কটের সিদ্ধান্ত আশুগঞ্জ উপজেলা হেফাজতে ইসলামের নতুন কমিটি গঠন সদর হাসপাতালে রোগীদের কম্বল দিলেন ওসি মোজাফ্ফর

সরাইলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বন্ধুকে খুন, গ্রেপ্তার ২

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:১২:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪ ২৩৭ বার পড়া হয়েছে

সরাইলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বন্ধুকে খুন, গ্রেপ্তার ২

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মাহবুব খান বাবুল, সরাইল থেকেঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পাওনা টাকার জন্য বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে লাল খাঁ ওরফে সারোয়ার নামের যুবককে ছুরিকাঘাতে খুন করেছে তারই বন্ধু আল আমিন। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টা ২০ মিনিটে উপজেলা সদরের নাথপাড়া কামার হাটি এলাকায় খুনের ঘটনাটি ঘটিয়েছে। স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে ছুরাসহ জসিম (৩৭) নামের এক খুনিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। রাতেই অভিযান চালিয়ে ঘটনার মূল নায়ক আল আমিনকে (৩৩) গ্রেপ্তার করেছেন সরাইল থানা পুলিশ। পুলিশ, নিহতের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানায়, সারোয়ার বিশ্বরোড মোড়ের পাশের খাঁটিহাতা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। সারোয়ার পেশায় মোটরবাইক মেকানিক। কখনো গ্যারেজে আবার ঘুরে ফিরে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতো। পেশার কারণেই অটোরিকশা চালক আল আমিন ও জসিমের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে সারোয়ারের। আল আমিন বিজয়নগর উপজেলার সেজামুড়ার প্রয়াত শফিক মিয়ার ছেলে। বর্তমানে সরাইল সদরের বড্ডাপাড়ায় হাফিজ উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকে। আরেক অটোরিকশা চালক জসিম ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নরসিংসার গ্রামের নুরূ মিয়ার ছেলে।

বর্তমানে সরাইল সদরের সৈয়দটুলা গ্রামের হাফিজটুলায় বসবাস করছে। এক সময় সারোয়ারের সাথে আল আমিনের টাকা লেনদেন হয়। সারোয়ার আল আমিনের পাওনা টাকা পরিশোধ করতে পারছিল না। ফলে আল আমিন সারোয়ারের উপর ক্ষুদ্ধ হতে থাকে। কথা বার্তায় ও আচার আচরণে তা বুঝতে দিত না। গত শুক্রবার বাদ এশা আল আমিন সারোয়ারকে বাড়ি থেকে ডেকে আনে। বড্ডাপাড়ায় বাসায় আসার কথা বলে জসিমসহ অটোরিকশায় ওঠে তিনজন। তারা হেঁসে খেলে বড্ডাপাড়ার উদ্যেশ্যে রওনা দেয়। আল আমিন অটোরিকশাটিকে নাথপাড়ার কামার হাটি এলাকায় নির্জনস্থানে নিয়ে যায়। সেখানে লাল খাঁ ওরফে সারোয়ারের বুকে, পেছনের দিকে ও বাম হাতে উপর্যৃপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে লাল খাঁ। খুনিরা সারোয়ার মুঠোফোন (০১৭৮২-৭৬৯৫৭৫) সেটটিও ছিনিয়ে নেয়। সহযোগি জসিমের কাছে ছুরাটি দিয়ে দ্রূত সটকে পড়ে খুনি আল আমিন। ঘটনাস্থলেই সারোয়ার মৃত্যু হয়।

চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে দৌঁড়ে আসেন। তারা ধাওয়া করে খুনি জসিমকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। সারোয়ারকে সরাইল হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জসিমের দেয়া তথ্য অনুসারে রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ হত্যাকান্ডের মূল নায়ক আল আমিনকে সৈয়দটুলা থেকে গ্রেপ্তার করেছেন। পুলিশ দুই শিশু সন্তানের জনক সারোয়ারে লাশ ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। নিহতের স্ত্রী নাছিমা বেগম বাদী হয়ে সরাইল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র বলছেন, আল আমিন ও জসিম অটোরিকশা ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। সারোয়ারের সাথে ছিনতাইকৃত রিকশা বিক্রির টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়েই লেনদেন ছিল। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করেই এই হত্যাকান্ড ঘটেছে। কিসের লেনদেন? সেই বিষয় নিয়েই আমরা কাজ করছি। আমরা ঘটনার পরই দুই খুনিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। আল আমিন ও জসিমকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। লাশের ময়না তদন্তও চলছে। মামলাও হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সরাইলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বন্ধুকে খুন, গ্রেপ্তার ২

আপডেট সময় : ০৯:১২:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪

মাহবুব খান বাবুল, সরাইল থেকেঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পাওনা টাকার জন্য বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে লাল খাঁ ওরফে সারোয়ার নামের যুবককে ছুরিকাঘাতে খুন করেছে তারই বন্ধু আল আমিন। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টা ২০ মিনিটে উপজেলা সদরের নাথপাড়া কামার হাটি এলাকায় খুনের ঘটনাটি ঘটিয়েছে। স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে ছুরাসহ জসিম (৩৭) নামের এক খুনিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। রাতেই অভিযান চালিয়ে ঘটনার মূল নায়ক আল আমিনকে (৩৩) গ্রেপ্তার করেছেন সরাইল থানা পুলিশ। পুলিশ, নিহতের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানায়, সারোয়ার বিশ্বরোড মোড়ের পাশের খাঁটিহাতা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। সারোয়ার পেশায় মোটরবাইক মেকানিক। কখনো গ্যারেজে আবার ঘুরে ফিরে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতো। পেশার কারণেই অটোরিকশা চালক আল আমিন ও জসিমের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে সারোয়ারের। আল আমিন বিজয়নগর উপজেলার সেজামুড়ার প্রয়াত শফিক মিয়ার ছেলে। বর্তমানে সরাইল সদরের বড্ডাপাড়ায় হাফিজ উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকে। আরেক অটোরিকশা চালক জসিম ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নরসিংসার গ্রামের নুরূ মিয়ার ছেলে।

বর্তমানে সরাইল সদরের সৈয়দটুলা গ্রামের হাফিজটুলায় বসবাস করছে। এক সময় সারোয়ারের সাথে আল আমিনের টাকা লেনদেন হয়। সারোয়ার আল আমিনের পাওনা টাকা পরিশোধ করতে পারছিল না। ফলে আল আমিন সারোয়ারের উপর ক্ষুদ্ধ হতে থাকে। কথা বার্তায় ও আচার আচরণে তা বুঝতে দিত না। গত শুক্রবার বাদ এশা আল আমিন সারোয়ারকে বাড়ি থেকে ডেকে আনে। বড্ডাপাড়ায় বাসায় আসার কথা বলে জসিমসহ অটোরিকশায় ওঠে তিনজন। তারা হেঁসে খেলে বড্ডাপাড়ার উদ্যেশ্যে রওনা দেয়। আল আমিন অটোরিকশাটিকে নাথপাড়ার কামার হাটি এলাকায় নির্জনস্থানে নিয়ে যায়। সেখানে লাল খাঁ ওরফে সারোয়ারের বুকে, পেছনের দিকে ও বাম হাতে উপর্যৃপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে লাল খাঁ। খুনিরা সারোয়ার মুঠোফোন (০১৭৮২-৭৬৯৫৭৫) সেটটিও ছিনিয়ে নেয়। সহযোগি জসিমের কাছে ছুরাটি দিয়ে দ্রূত সটকে পড়ে খুনি আল আমিন। ঘটনাস্থলেই সারোয়ার মৃত্যু হয়।

চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে দৌঁড়ে আসেন। তারা ধাওয়া করে খুনি জসিমকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। সারোয়ারকে সরাইল হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জসিমের দেয়া তথ্য অনুসারে রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ হত্যাকান্ডের মূল নায়ক আল আমিনকে সৈয়দটুলা থেকে গ্রেপ্তার করেছেন। পুলিশ দুই শিশু সন্তানের জনক সারোয়ারে লাশ ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। নিহতের স্ত্রী নাছিমা বেগম বাদী হয়ে সরাইল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র বলছেন, আল আমিন ও জসিম অটোরিকশা ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। সারোয়ারের সাথে ছিনতাইকৃত রিকশা বিক্রির টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়েই লেনদেন ছিল। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করেই এই হত্যাকান্ড ঘটেছে। কিসের লেনদেন? সেই বিষয় নিয়েই আমরা কাজ করছি। আমরা ঘটনার পরই দুই খুনিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। আল আমিন ও জসিমকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। লাশের ময়না তদন্তও চলছে। মামলাও হয়েছে।