মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (৬ বছর, ৬ মাস) ধর্ষণের চেষ্টাকালে হাতেনাতে ধরা পড়েছে বিল্লাল মিয়া (৫০) নামের এক ব্যক্তি। ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে গত ৩০ মে সরাইল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে (জোর পূর্বক ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে) ৫ সন্তানের জনক বিল্লাল মিয়ার বিরূদ্ধে মামলা করেছেন। আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে ওই ছাত্রী। গত ২৮ মে রবিবার দুপুরের দিকে উপজেলার অরূয়াইল ইউনিয়নের রানীদিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পরই পালিয়ে গেছে বিল্লাল। লম্পট বিল্লালের হুমকি ধমকি ও ঝাঁপটে ধরার তান্ডবে এখনো ভীত সন্ত্রস্থ ওই শিশুটি। মামলা, ছাত্রীর পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, ৪ ছেলে ও ১ কন্যা সন্তানের পিতা বিল্লাল মিয়া কর্মহীন। সারাদিন গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। লাম্পট্য ও বেহায়াপনা তার পুরাতন অভ্যাস। রানীদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ও বিল্লালের বসতঘর পাশাপাশি। ওই ছাত্রী বিল্লালকে বড় আব্বা ও চাচা বলে ডাকতো। গত রবিবার দুপুরে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর আম দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটিকে তার বসত ঘরে নেয়। শিশুটি ঘরে প্রবেশ করার পরই ভেতরের দিক থেকে দরজা লাগিয়ে দেয় বিল্লাল। হুমকি ধমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে শিশুটিকে বিবস্ত্র করে দেহের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শিশুটির আর্তচিৎকারে দৌঁড়ে আসে শিশুর মা। দরজা বন্ধ দেখে তিনিও চিৎকার চেঁচামেচি শুরূ করেন। তখন অন্যান্য প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। সকলের চাপাচাপিতে বিল্লাল দরজা খুলে দেয়। ভেতরে গিয়ে কান্নারত ও বিবস্ত্র অবস্থায় থাকা শিশুটিকে উদ্ধার করেন তারা। আর দ্রূত শার্ট ও লুঙ্গি পড়তে শুরূ করেন বিল্লাল। উপস্থিত লোকজন এই অপকর্ম সম্পর্কে বিল্লালকে জিজ্ঞাসা করলে উত্তেজিত হয়ে শিশুর পিতা মাতাকে হত্যার হুমকি দেয় সে। ঘটনার পর থেকে আতঙ্ক আর শঙ্কায় সময় পার করছেন শিশুর পিতা মাতা। ওই এলাকার একাধিক ব্যক্তি বলেন, ঘরে স্ত্রী ও পাঁচ সন্তান রেখে এমন জঘন্য কাজ কিভাবে করতে পারে? আব্বা ডাকে মেয়েটার দিকে তার কুনজর গেল কিভাবে? সে আগেও এমন অনেক ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা তার বিচার চাই। ছাত্রীর বাবা বলেন, বেকার বিল্লাল গ্রামে ঘুরে ফিরে মেয়েদের ডিস্টার্ব করার চেষ্টা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। সে চরিত্রহীন লম্পট প্রকৃতির লোক। আমার শিশু বাচ্চাটা তাকে সবসময় বড় আব্বা বলে ডাকে। নিজের মেয়ের মত শিশু বাচ্চাটাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা কিভাবে করতে পারে? আমি জঘন্য এই অপকর্মের জন্য বিল্লালের দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ বিচার দাবী করছি। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, শিশুটি আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে। বিল্লাল শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টাকালেই লোকজন হাজির হয়ে গেছে। এর আগেও এমন একাধিক ঘটনা ঘটিয়েছে বিল্লাল। আমরা তাকে দ্রূত গ্রেপ্তার করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করব।