সরাইলে নদী শাসন আইন অমান্য করে বেকু দিয়ে কাটা হচ্ছে নদীর পাড়। কেটে গভীর করা হচ্ছে ফসলি জমি। ওই মাটি গুলি বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটায়। ব্যবসা চাঙ্গা স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর। আর দিনে রাতে ট্রাক্টর বোঝাই করে টানছে মাটি। উড়ছে ধূঁলো। নষ্ট হচ্ছে ইরি জমি। অনেক ইটভাটায় বেকু রেখে আশপাশের ফসলি জমি থেকে কেটে আনছেন মাটি। সরাইল-নাসিরনগর-আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশে আকাশী হাওরের নোয়াগাঁও ও কালীকচ্ছ মৌজা এলাকায় এমন অনিয়ম চললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব। সরজমিনে দেখা যায়, ওই মহাসড়কের সরাইল এলাকায় ফসলি জমির মাঝখানে ও বসতবাড়ি ঘেষা স্থানে গড়ে ওঠেছে ১৩ টি ইটভাটা। স্থানীয় একধিক কৃষক বলেন, আইনও বুঝি না। আমরা তো জানি ফসলি জমির মাঝখানে ও বসতবাড়ির কাছে ইটভাটা চালানোর কোন বিধান নেই। তারপরও পরিবেশ অধিদপ্তর কিভাবে ছাড়পত্র দেয়। আসলে সর্বত্রই আইন গিলে খাচ্ছে রসদে। সেখানে মাটি কাটার কাজে ব্যবহার হচ্ছে ৭টি বেকু। ইট তৈরীর জন্য ভাটার মালিকরা মাটি ক্রয় করে থাকেন। এই ব্যবসার সুযোগ নিয়েছে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। কেউ বেকু দিয়ে কাটছেন ফসলি জমির মাটি। অনেকেই পুটিয়া নদীর পাড় নিজেদের দাবী করে মাটি কেটে বিক্রয় করছেন। নদী শাসন আইনে বর্ষাকালে নদীর পানি থেকে ৫০ ফুট দূরবর্তী স্থান পর্যন্ত সীমানা ধরা হয়। অথচ নোয়াগাঁও মৌজায় পুটিয়া নদীর পানি ঘেষা পাড় বেকু দিয়ে কাটা হচ্ছে। মাটি যাচ্ছে সেখানকারই আজম ব্রীকস্ নামের একটি ইটভাটায়। বিক্রয়কারীরা নদীর পাড়কে কাগজে কলমে নিজেদের দাবী করে বলছেন, আমরা এ জায়গার বৈধ মালিক। উঁচু জায়গায় ফসল হচ্ছে না। তাই মাটি কেটে নীচু করছি। মাটি ইটভাটায় বিক্রি করছি। ওই হাওরে ব্যক্তি মালিকানা ফসলি জমি ও সরকারি কিছু গোচারণ ভূমির মাটিও এক শ্রেণির লোকের সহায়তায় বিক্রি হচ্ছে ইটভাটায়। সড়কের ভূঁইয়ার ঘাট সংলগ্ন ব্রীজের পশ্চিম পাশে সরাইলের সীমানার দুটি খালও দখলে নিয়ে গেছেন ইটভাটার মালিকরা। তারা দুটি খালই ইটভাটার মাটি ফেলে ভরাট করে ফেলেছেন। ফলে পানি নিস্কাশনে ব্যাঘাত ঘটছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুল হক মৃদুল বলেন, নদী আইনে বর্ষাকালে নদীর পানি যেখানে থাকে সেখান থেকে ৫০ ফুট পর্যন্ত নদীর। ফসলি জমির মাটি কাটা ও বিক্রি করার কোন বিধান নেই। এরপরও নিজ জমির মাটি যদি গোপনে বিক্রি করে ফেলে কি করার আছে।
মাহবুব খান বাবুল