মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে চুরি করে চলে যাওয়ার সময় গরূ চোরকে ধরতে দৌঁড়ে গিয়েছিলেন পারভেজ (২২) নামের যুবক। ফলে চোরদের বল্লমের উপর্যুপরি আঘাতে খুন হয়েছেন পারভেজ। গত সোমবার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার অরূয়াইল ইউনিয়নের মেঘনার পাড় চরকাকরিয়া এলাকায় মর্মান্তিক এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। নিহত পারভেজ চরকাকরিয়া গ্রামের উবায়দুল্লাহর ছেলে। অবিবাহিত ওঠতি বয়সের যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যুতে স্বজন ও গ্রামবাসীদের মধ্যে চলছে আহাজারি। গ্রামবাসী সূত্র জানায়, গত সোমবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টা। মেঘনার পাড় চরকাকরিয়া গ্রামের অধিকাংশ লোকজন ঘুমে বিভোর। সংঘবদ্ধ এক দল চোর পারভেজদের বাড়িতে প্রবেশ করে। পারভেজের বড় ভাই হুমায়ুনের গোয়াল ঘরে ঢুকে। সেখান থেকে ২টি গরূ চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় মেঘনার পাড়ে জেলেদের নজরে পড়ে। জেলেরা চোরের কবল থেকে গরূ গুলো উদ্ধার করে হুমায়ুনদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়। বিষয়টি জেনে হুমায়ুন তার ছোট ভাই পারভেজকে সাথে নিয়ে গরূ চোরদের ধরতে পেছনের দিক থেকে ধাওয়া করে। গ্রাম থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে গিয়ে তারা দেখতে পায় চোরের দল বেশ কয়েকজন জেলেকে মারধরের পর বেঁধে ফেলে রেখেছে। চারিদিকে অন্ধকার। তারা দুই ভাই আর একটু সামনে যাওয়া মাত্র চোরের দলের কয়েকজন মিলে পারভেজকে ধরে টেনে খিঁচড়ে মেঘনা নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। চোরদের কবল থেকে ছোট ভাইকে রক্ষা করতে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে হুমায়ুন। এ সময় চোরেরা হুমায়ুনকে গুলি করে হত্যা করার হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। ওদিকে চোরের দল পারভেজকে মেঘনার পাড়ে বল্লম দিয়ে বুকে হাতে গলায় উপর্যুপরি আঘাত করে গুরূতর আহত করে নৌকাযোগে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্বজন ও গ্রামবাসী দ্রূত ঘটনাস্থলে গিয়ে পারভেজকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে মারা যায়। তরতাজা যুবক ছেলের এমন মৃত্যু কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না মা পরিবার ও স্বজনরা। নির্মম ভাবে সন্তান হারানোর বেদনায় বারবার বাকরূদ্ধ হয়ে পড়ছেন পারভেজের মা। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চুরি হওয়া গরূ ২টি উদ্ধার করে ফেলেছিল জেলেরা। তবে চোরদের ধরতে পেছন থেকে ধাওয়া করেছিলেন পারভেজ ও হুমায়ুন। অন্ধকারে একা পেয়ে চোরের দল পারভেজকে গলায় হাতে বুকে বল্লম দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। হাসপাতালে নেয়ার পথে পারভেজ মারা যায়। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছি। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।