Dhaka 12:34 pm, Friday, 8 November 2024

সরাইলে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যের বিরূদ্ধে জমি নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ

  • Reporter Name
  • Update Time : 06:27:55 pm, Monday, 16 October 2023
  • 141 Time View

সরাইলে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যের বিরূদ্ধে জমি নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আছমা আক্তার ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আজহার মিয়ার বিরুদ্ধে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির ওয়ারিশনামা প্রদানে জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি কেন্দ্র করে পারিবারিক ও গ্রাম্য দাঙ্গা হাঙ্গামার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভুক্তভোগি ব্যক্তি প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। রাখেশ চন্দ্র সরকার নামের এক আইনজীবী গত ১২ অক্টোবর মন্ত্রীর বরাবর এবং ৮ অক্টোবর ইউএনওর কাছে এ আবেদন করেন। বিষয়টি এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শাহজাদাপুর ইউনিয়নের শাহজাদাপুর গ্রামের প্রয়াত পান্ডব চন্দ্র ভৌমিকের বর্তমানে এক স্ত্রী ও এক পুত্রসহ দশজন ওয়ারিশ রয়েছেন। এর মধ্যে পান্ডব চন্দ্র ভৌমিকের একমাত্র পুত্র হচ্ছে স্বপন লাল ভৌমিক।

হিন্দু আইনের দায়ভাগ মতবাদ অনুসারে স্বপন লাল ভৌমিক পান্ডব চন্দ্র ভৌমিকের সম্পদের উত্তরাধিকারী। আর রাখেশ চন্দ্র সরকার হচ্ছে স্বপন লাল ভৌমিকের ভগ্নিপতি। স্বপন লাল ভৌমিক প্রবাসে থাকায় তিনি রাখেশ চন্দ্র সরকারের নামে তাঁর সম্পত্তি দেখভাল করার জন্য পাওয়ার অব এটর্নি দিয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান আছমা আক্তার গত বছরের ১৬ জুলাই প্রথমে চারজনের নামে একটি ওয়ারিশনামার সনদ প্রদান করেন। এরপর ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর প্রথমে চারজনের নামে দেওয়া ওয়ারিশনামা বাতিল করে আবার ১০ জনের নামে ওয়ারিশনামা সনদ প্রদান করেন। কিন্তু গত ২৩ সেপ্টম্বর ১০ জনের পরিবর্তে পুনরায় চারজনের নামে ওয়ারিশনামা সনদ প্রদান করেন। এতে পান্ডব চন্দ্র ভৌমিকের রেখে যাওয়া সম্পদ নিয়ে ওয়ারিশগণের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। যাকে কেন্দ্র করে ওই পরিবারের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ও আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটার সম্ভাবনা দেখা দেয়। গোপনে গ্রাম্য দাঙ্গা হাঙ্গামারও একটি নমুনা তৈরী হয়। ইউপি সদস্য আজহার মিয়া বলেন,‘ কখন কোথায় ওয়ারিশনামায় স্বাক্ষর করেছি মনে নেই।

তবে আমরা নানান কাজে বিভিন্ন জায়গায় ব্যস্ত থাকি। তখন লোকজন এসে নানা কথা বলে আমাদের কাছ থেকে ওয়ারিশনামার সনদ নিয়ে থাকেন। এখন কেউ যদি পরিবারের তথ্য গোপন করে তবে আমাদের কী করার থাকে।’ অভিযুক্ত শাহজাদাপুর ইউপির চেয়ারম্যান আছমা আক্তার বলেন,‘ একই ব্যক্তির ভিন্ন ভিন্ন ওয়ারিশনামায় স্বাক্ষর করার বিষয়টি আমার জানা নেই। এমনটি যদি হয়ে থাকে তবে ভুলটি করেছে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। ওয়ারিশনামার সনদ পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে ইউপি সদস্যের স্বাক্ষর দেখে আমি স্বাক্ষর করে থাকি।’ রাখেশ চন্দ্র সরকার বলেন,‘ ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার যোগসাজসে ১০ জনের পরিবর্তে চারজনের নামে এই ভুয়া ওয়ারিশনামা সনদপত্র দিয়েছেন।

এতে আমার জিম্মায় থাকা সম্পত্তি অন্যজনের নামে নামজারি করে অবৈধভাবে হস্তান্তরের চেষ্টা চালিয়েছেন। এতে আমার ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গোটা পরিবারে বিরোধ ও অশান্তি দেখা দিয়েছে। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন বলেন,‘শাহজাদাপুর ইউপির চেয়ারম্যান ও সদস্যের বিরূদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় খবর
fapjunk
© All rights reserved ©
Theme Developed BY XYZ IT SOLUTION

সরাইলে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যের বিরূদ্ধে জমি নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ

Update Time : 06:27:55 pm, Monday, 16 October 2023

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আছমা আক্তার ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আজহার মিয়ার বিরুদ্ধে মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির ওয়ারিশনামা প্রদানে জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি কেন্দ্র করে পারিবারিক ও গ্রাম্য দাঙ্গা হাঙ্গামার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভুক্তভোগি ব্যক্তি প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। রাখেশ চন্দ্র সরকার নামের এক আইনজীবী গত ১২ অক্টোবর মন্ত্রীর বরাবর এবং ৮ অক্টোবর ইউএনওর কাছে এ আবেদন করেন। বিষয়টি এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শাহজাদাপুর ইউনিয়নের শাহজাদাপুর গ্রামের প্রয়াত পান্ডব চন্দ্র ভৌমিকের বর্তমানে এক স্ত্রী ও এক পুত্রসহ দশজন ওয়ারিশ রয়েছেন। এর মধ্যে পান্ডব চন্দ্র ভৌমিকের একমাত্র পুত্র হচ্ছে স্বপন লাল ভৌমিক।

হিন্দু আইনের দায়ভাগ মতবাদ অনুসারে স্বপন লাল ভৌমিক পান্ডব চন্দ্র ভৌমিকের সম্পদের উত্তরাধিকারী। আর রাখেশ চন্দ্র সরকার হচ্ছে স্বপন লাল ভৌমিকের ভগ্নিপতি। স্বপন লাল ভৌমিক প্রবাসে থাকায় তিনি রাখেশ চন্দ্র সরকারের নামে তাঁর সম্পত্তি দেখভাল করার জন্য পাওয়ার অব এটর্নি দিয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান আছমা আক্তার গত বছরের ১৬ জুলাই প্রথমে চারজনের নামে একটি ওয়ারিশনামার সনদ প্রদান করেন। এরপর ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর প্রথমে চারজনের নামে দেওয়া ওয়ারিশনামা বাতিল করে আবার ১০ জনের নামে ওয়ারিশনামা সনদ প্রদান করেন। কিন্তু গত ২৩ সেপ্টম্বর ১০ জনের পরিবর্তে পুনরায় চারজনের নামে ওয়ারিশনামা সনদ প্রদান করেন। এতে পান্ডব চন্দ্র ভৌমিকের রেখে যাওয়া সম্পদ নিয়ে ওয়ারিশগণের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। যাকে কেন্দ্র করে ওই পরিবারের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ও আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটার সম্ভাবনা দেখা দেয়। গোপনে গ্রাম্য দাঙ্গা হাঙ্গামারও একটি নমুনা তৈরী হয়। ইউপি সদস্য আজহার মিয়া বলেন,‘ কখন কোথায় ওয়ারিশনামায় স্বাক্ষর করেছি মনে নেই।

তবে আমরা নানান কাজে বিভিন্ন জায়গায় ব্যস্ত থাকি। তখন লোকজন এসে নানা কথা বলে আমাদের কাছ থেকে ওয়ারিশনামার সনদ নিয়ে থাকেন। এখন কেউ যদি পরিবারের তথ্য গোপন করে তবে আমাদের কী করার থাকে।’ অভিযুক্ত শাহজাদাপুর ইউপির চেয়ারম্যান আছমা আক্তার বলেন,‘ একই ব্যক্তির ভিন্ন ভিন্ন ওয়ারিশনামায় স্বাক্ষর করার বিষয়টি আমার জানা নেই। এমনটি যদি হয়ে থাকে তবে ভুলটি করেছে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। ওয়ারিশনামার সনদ পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে ইউপি সদস্যের স্বাক্ষর দেখে আমি স্বাক্ষর করে থাকি।’ রাখেশ চন্দ্র সরকার বলেন,‘ ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার যোগসাজসে ১০ জনের পরিবর্তে চারজনের নামে এই ভুয়া ওয়ারিশনামা সনদপত্র দিয়েছেন।

এতে আমার জিম্মায় থাকা সম্পত্তি অন্যজনের নামে নামজারি করে অবৈধভাবে হস্তান্তরের চেষ্টা চালিয়েছেন। এতে আমার ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গোটা পরিবারে বিরোধ ও অশান্তি দেখা দিয়েছে। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন বলেন,‘শাহজাদাপুর ইউপির চেয়ারম্যান ও সদস্যের বিরূদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’