ঢাকা ০৯:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সরাইল উপজেলা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ইফতার  ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডেলটা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানীর মেয়াদ পুর্তির চেক প্রদান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান, চারটি ইউনিট সিলগালা অপসংবাদিকতা রোধে ও অপসংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান বিজয়নগরে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদে মানববন্ধন অপসাংবাদিকতা রোধে সকলকে সোচ্চার থাকার আহবান জানিয়েছে বিটিজেএ এআরডি’র উদ্যেগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রতারক গ্রেপ্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রয়াত সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন জামির ২য় মৃত্যু বার্ষিকী

সরাইলের শাহজাদাপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে টাকা ছাড়া মিলে না ঔষধ!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৪১:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪ ৯৭ বার পড়া হয়েছে

সরাইলের শাহজাদাপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে টাকা ছাড়া মিলে না ঔষধ!

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মাহবুব খান বাবুল, সরাইল থেকেঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের শাহজাদাপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাগজেপত্রে স্বাস্থ্য বিভাগ ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ রয়েছে। তবে বাস্তবে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে নেই কোন মেডিকেল অফিসার, চাকমো, ফার্মাসিস্ট ও এমএলএসএস। সপ্তাহে ২-৩ দিন সেখানে বসে ঔষধ বিতরণ করেন অফিস সহায়ক প্রণেষ কুমার। পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা (এফডব্লিউভি) দিলরূবা আক্তার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। রোগীদের অভিযোগ চিকিৎসক তো নেই-ই সেখানে টাকা ছাড়া মিলে না কোন সরকারি ঔষধ। আগে দিতে হতো ২০ টাকা। এরপর ৩০ এখন দিতে হচ্ছে ৪০ টাকা। তবে দায়িত্বে নিয়োজিতরা সরকারি ঔষধ দিয়ে টাকা নেয়ার বিষয়টি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন, সরকারি ঔষধ ফ্রি। টাকা নেয়ার প্রশ্নই আসে না। প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নিব।

সরজমিনে দেখা যায়, গত রোববার ঘড়ির কাটায় সকাল ১০টা ৫ মিনিট। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে আশপাশের গ্রামের থেকে শিশুদের নিয়ে ২০-২৫ জন মহিলা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। একজন একজন করে ভেতরে যাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর হাতে করে সিরাপ ও ট্যাবলেট নিয়ে বেড়িয়ে আসছেন। কেমন চিকিৎসা চলছে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৩-৪ জন মহিলা বলতে থাকেন, আমরা অনেক কষ্ট করে এখানে আসি। শিশু ও আমাদের সমস্যার চিকিৎসার উদ্যেশ্যে আসা। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এখানে কোন মেডিকেল অফিসার নেই । ঔষধ দিতেন একজন ফার্মাসিস্ট তিনিও আসেন না। চাকমো নেই। নেই এমএলএসএসও। বলতে গেলে স্বাস্থ্য বিভাগের কোন লোকই নেই। প্রাণেষ নামের একজন লোক আসেন মাঝে মধ্যে। কয়েকটা টাকা নিয়ে তিনি কিছু ঔষধ দেন। আর ওদিকে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের একজন মহিলা বসেন। মা ও শিশুদের দেখে তিনি সিরাপ আর ট্যাবলেট দেন। এর জন্য তিনি আগে আমাদের কাছ থেকে নিতেন ২০ টাকা।

ইদানিং তিনি ৪০ টাকার কম দিলে ঔষধ দেন না। সরকার নাকি আমাদেরকে বিনামূল্যে ঔষধ দিয়েছেন। তাহলে আবার টাকা কেন? জনৈক মহিলা বলেন, আমার দুই বাচ্চার ঔষধের জন্য ৮০ টাকা দিতে হয়েছে। কোথায় বলব? কার কাছে বলব? এদের ক্ষমতা অনেক। আমাদেরকে উল্টো বিপদে ফেলে দিবে। ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা (এফডব্লিউভি) দিলরূবা আক্তার বলেন, টাকা নেয়ার অভিযোগটি মিথ্যা। বেশ কিছু দিন ঔষধের সাপ্লাই ছিল না। গত কয়েকদিন আগে ঔষধ আসছে। আমি স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালন করছি। স্বাস্থ্য বিভাগের একজন মাঝেমধ্যে আসেন। শাহজাদাপুর ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মো. আকিজ উদ্দিন বলেন, এফডব্লিউভি মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকেন। সরকারি ঔষধ দিয়ে টাকা নেয়ার কোন বিধান নেই। এমনটা হয়ে থাকলে অপরাধ। সরাইল উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. তানজিদ তামান্না দিনা বলেন, সেখানে শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের ঔষধ আছে। ঔষধের বিনিময়ে টাকা নেয়া মোটেও বিধি সম্মত নয়। সরকারি ঔষধ ক্রয়-বিক্রয় দুটোই দন্ডনীয় অপরাধ। প্রমাণ পেলে আমি অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

সরাইলের শাহজাদাপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে টাকা ছাড়া মিলে না ঔষধ!

আপডেট সময় : ০৭:৪১:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪

মাহবুব খান বাবুল, সরাইল থেকেঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের শাহজাদাপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাগজেপত্রে স্বাস্থ্য বিভাগ ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ রয়েছে। তবে বাস্তবে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে নেই কোন মেডিকেল অফিসার, চাকমো, ফার্মাসিস্ট ও এমএলএসএস। সপ্তাহে ২-৩ দিন সেখানে বসে ঔষধ বিতরণ করেন অফিস সহায়ক প্রণেষ কুমার। পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা (এফডব্লিউভি) দিলরূবা আক্তার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। রোগীদের অভিযোগ চিকিৎসক তো নেই-ই সেখানে টাকা ছাড়া মিলে না কোন সরকারি ঔষধ। আগে দিতে হতো ২০ টাকা। এরপর ৩০ এখন দিতে হচ্ছে ৪০ টাকা। তবে দায়িত্বে নিয়োজিতরা সরকারি ঔষধ দিয়ে টাকা নেয়ার বিষয়টি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন, সরকারি ঔষধ ফ্রি। টাকা নেয়ার প্রশ্নই আসে না। প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নিব।

সরজমিনে দেখা যায়, গত রোববার ঘড়ির কাটায় সকাল ১০টা ৫ মিনিট। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে আশপাশের গ্রামের থেকে শিশুদের নিয়ে ২০-২৫ জন মহিলা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। একজন একজন করে ভেতরে যাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর হাতে করে সিরাপ ও ট্যাবলেট নিয়ে বেড়িয়ে আসছেন। কেমন চিকিৎসা চলছে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৩-৪ জন মহিলা বলতে থাকেন, আমরা অনেক কষ্ট করে এখানে আসি। শিশু ও আমাদের সমস্যার চিকিৎসার উদ্যেশ্যে আসা। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এখানে কোন মেডিকেল অফিসার নেই । ঔষধ দিতেন একজন ফার্মাসিস্ট তিনিও আসেন না। চাকমো নেই। নেই এমএলএসএসও। বলতে গেলে স্বাস্থ্য বিভাগের কোন লোকই নেই। প্রাণেষ নামের একজন লোক আসেন মাঝে মধ্যে। কয়েকটা টাকা নিয়ে তিনি কিছু ঔষধ দেন। আর ওদিকে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের একজন মহিলা বসেন। মা ও শিশুদের দেখে তিনি সিরাপ আর ট্যাবলেট দেন। এর জন্য তিনি আগে আমাদের কাছ থেকে নিতেন ২০ টাকা।

ইদানিং তিনি ৪০ টাকার কম দিলে ঔষধ দেন না। সরকার নাকি আমাদেরকে বিনামূল্যে ঔষধ দিয়েছেন। তাহলে আবার টাকা কেন? জনৈক মহিলা বলেন, আমার দুই বাচ্চার ঔষধের জন্য ৮০ টাকা দিতে হয়েছে। কোথায় বলব? কার কাছে বলব? এদের ক্ষমতা অনেক। আমাদেরকে উল্টো বিপদে ফেলে দিবে। ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা (এফডব্লিউভি) দিলরূবা আক্তার বলেন, টাকা নেয়ার অভিযোগটি মিথ্যা। বেশ কিছু দিন ঔষধের সাপ্লাই ছিল না। গত কয়েকদিন আগে ঔষধ আসছে। আমি স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালন করছি। স্বাস্থ্য বিভাগের একজন মাঝেমধ্যে আসেন। শাহজাদাপুর ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মো. আকিজ উদ্দিন বলেন, এফডব্লিউভি মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকেন। সরকারি ঔষধ দিয়ে টাকা নেয়ার কোন বিধান নেই। এমনটা হয়ে থাকলে অপরাধ। সরাইল উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. তানজিদ তামান্না দিনা বলেন, সেখানে শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের ঔষধ আছে। ঔষধের বিনিময়ে টাকা নেয়া মোটেও বিধি সম্মত নয়। সরকারি ঔষধ ক্রয়-বিক্রয় দুটোই দন্ডনীয় অপরাধ। প্রমাণ পেলে আমি অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।