রোমানিয়া নেয়ার কথা বলে ৯ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
- আপডেট সময় : ০৯:০৩:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৩ ১৬৭ বার পড়া হয়েছে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক সন্তানকে রোমানিয়া নেয়ার কথা বলে ৯ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অপর সন্তানের শ্বশুড়ের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ৭০ বছরের এক বৃদ্ধ। গত ২৭ আগস্ট রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কসবা আদালতে মামলাটি দায়ের করেন কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গুসাইপুর গ্রামের মৃত মজিদ পাঠানের ছেলে হাজি মো.হারেছ পাঠান। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। আসামী হচ্ছেন আখাউড়া পৌরসভার রাধানগর বেলাতলী গ্রামের মৃত আবদুল গফুর ভূঞার ছেলে মো.টিটু ভূঞা। মামলার বাদী হাজি হারেছ পাঠানের ছেলে গিয়াস উদ্দিনের শ্বশুর। তিনি এলাকায় পীর হিসাবে পরিচিত।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মো.টিটু ভূঞা হাজি মো.হারেছ পাঠানের ছেলের শ্বশুর হওয়ার সুবাদে তাদের বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া ছিলো। এক পর্যায়ে টিটু ভূঞা জানান,তার এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ইউরোপের রোমানিয়ায় থাকেন। সেখান থেকে তার আত্মীয় হোম ডেলিভারী কাজের একটা ভালো ভিসা এনেছেন। মাসিক একলক্ষ টাকা বেতনে সেখানে চাকুরী দেয়া যাবে। হারেছ পাঠান চাইলে তার অপর ছেলে মো.আনোয়ার পাঠান (৩০) কে সেখানে পাঠাতে পারেন। সেজন্য টিটু ভূঞাকে ৯ লক্ষ টাকা দিতে হবে। মামলার বাদী হারেছ পাঠানের ঘনিষ্ঠতম আত্মীয় হওয়ায় তিনি সরল বিশ্বাসে টিটু ভূঞার প্রস্তাবে রাজি হন। গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৫ তারিখ কয়েকজন সাক্ষীর উপসি’তিতে টিটু ভূঞা হারেছ পাঠানের বাড়িতে গিয়ে ৯ টি বান্ডেলে ৯ লক্ষ টাকা বুঝিয়ে গ্রহণ করেন। সেইসাথে বাদীর ছেলে আয়োর পাঠানের পাসপোর্ট নিয়ে আগামী ৩ মাসের মধ্যে তাকে রোমানিয়া পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ৩ মাসের মধ্যেও আনোয়ার পাঠানকে রোমানিয়া না পাঠানোয় হারেছ পাঠান তার দেয়া ৯ লক্ষ টাকা ফেরত চেয়ে বারবার তাগাদা দিলেও টিটু ভূঞা কর্ণপাত করেন নি। গত ১৭ আগষ্ট বাদী কয়েকজন সাক্ষী নিয়ে আসামীর বাড়িতে গিয়ে ৯ লক্ষ টাকা দাবী করলে আসামী বাদী ও তার পরিবারের লোকদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলখানায় পঁচাইয়া মারবেন বলে হুমকি দেন। এমনকি এসময় টাকা-পয়সা লেনদেনের ঘটনা বেমালুম অস্বীকার করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয় টিটু ভূঞা একজন ভন্ড পীর। খরমপুর সহ বিভিন্ন স্থানে তার আস্তানা রয়েছে।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী হাজি মো.হারেছ পাঠান জানান,নিকট আত্মীয় হওয়ায় সরল বিশ্বাসে টিটু ভূঞাকে ৯ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম আনোয়ারকে রোমানিয়া পাঠানোর জন্য। কিন্তু তিনি আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। আমার ছেলেকে রোমানিয়া তো পাঠালোনা এমনকি এখন টাকার কথা অস্বীকার করছেন। আমাদেরকে মিথ্যা মামলায় শেষ করে দেয়া সহ মৃত্যুভয় দেখাচ্ছেন।
বাদীর আইনজীবি এড.ইসমত আরা জানান,হাজি মো.হারেছ পাঠানের অভিযোগ আমলে নিয়ে বিজ্ঞ আদালত কসবা থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কসবা থানার ওসি মো.মহিউদ্দিন পিপিএম বলেন, এখনো মামলার কপি আমাদের কাছে পৌঁছায়নি। পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মামলার আসামী মো.টিটু ভূঞা বলেন, হারেছ পাঠান আমার বেয়াই। তার পরিবারের সাথে আমার মেয়ের সংসার নিয়ে বিরোধ চলছে। এ বিরোধের সুযোগ নিয়ে তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করছেন। আমি কখনো তার কাছ থেকে কোনো প্রকার টাকা গ্রহণ করিনি।