ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধানের মোকাম পরিদর্শন করেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক

0
335

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার মেঘনা নদীর বিওসি ঘাটে অবস্থিত পূর্বাঞ্চলের হাওরের সবচেয়ে বড় ধানের হাটে স্বাভাবিকের চেয়ে ধানের দাম কিছুটা বেড়েছে। গত জানুয়ারি মাসের প্রথম থেকেই ধানের দরে ঊর্ধ্বগতি। মূলত হাটে ধানের সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ধানের দর বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে বুধবার দুপুরে (০৯ ফেব্রুয়ারি) ধানের মোকাম পরিদর্শন করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী। এ সময় তিনি প্রান্তিক কৃষক ধানের বেপারী, আড়তদার ও চালকল মালিকদের সঙ্গে কথা বলেন। হাট সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় বর্তমানে আশুগঞ্জ ধানের মোকামে প্রতিদিন গড়ে ২৫/৩০ হাজার মণ ধান বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে বিআর-২৮ ধান বিক্রি হচ্ছে ১৩৫০ থেকে ১৩৬০ টাকা দরে, বিআর-২৯ মণপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১২৫০ টাকায়। আর বিআর-৪৯ জাতের ধান বিক্রি হচ্ছে ১১৭০ থেকে ১১৮০ টাকা দরে। প্রত্যেক জাতের ধানে মণপ্রতি ২০-৩৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলে জানিয়েছেন চালকল মালিকরা। এর ফলে ধান থেকে চাল তৈরিতেও মিল মালিকদের খরচ বাড়ছে। আশুগঞ্জ ধানের মোকাম পরিদর্শন শেষে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, জেলা খাদ্য বিভাগ থেকে ধান এবং চালের বাজার নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। মূলত এখন ধানের মৌসুম না হওয়ায় হাটে ধানের সরবরাহ তুলনামূলক কম। সেজন্য বাজারদরে ঊর্ধ্বগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। তারপরও আমরা মনিটরিং করা হচ্ছে- কেউ যেন কৃত্রিমভাবে দাম না বাড়াতে পারে। এসময় উপস্থিত ছিলেন আশুগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক চিন্তা মনি তালকুদার, চলাচল ও সংরক্ষন কর্মকর্তা আবদুল হান্নান, আশুগঞ্জ খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম মইনুল খায়র খসরু, খাদ্য পরিদর্শক উম্মে মাছুরা আক্তার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অটো মেজর এন্ড হাসকিং মিল মালিক সভাপতি বাবুল আহমেদ, আশুগঞ্জ উপজেলা অটো মেজর এন্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি সভাপতি মো. জুবায়ের হায়দার বুলু প্রমুখ। উল্লেখ্য: ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, সুনামগঞ্জ, সিলেট ও হবিগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার হাওরাঞ্চলের উৎপাদিত ধানের সবচেয়ে বড় হাট বসে আশুগঞ্জ উপজেলার মেঘনা নদীর বিওসি ঘাটে। ওই হাটকে বলা হয় দেশের পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ধানের মোকাম। আর এই মোকামকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ২৯৩টি চাতালকল গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র আশুগঞ্জে রয়েছে ২২২টি চাতালকল। বাকি ৭১টি চাতাল মিল গুলো জেলার অন্য উপজেলা গুলোতে অবস্থিত। বিওসি ঘাটের ধানের মোকামই এসব চাতালকলে ধানের যোগান দেয়। প্রতি বছর বোর ও আমন মৌসুমে জেলার চালকলগুলোর সাথে চাল সংগ্রহের জন্য চুক্তি করে খাদ্য বিভাগ। এবারও জেলার আমন মৌসুমে ১৭৪টি চালকলের সাথে ১৪,২৪০ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের চুক্তি হয়েছে। আর জেলার সবকটি উপজেলার ১ হাজারেরও বেশি কৃষকের কাছ থেকে ২,৭৩৪ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রতি কেজি চাল নেওয়া হচ্ছে ৪০ টাকা দরে। আর ধান কেনা হচ্ছে প্রতি কেজি ২৭ টাকায়। গত বছরের ৭ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম চালবে চলতি মাসের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে বুধবার পর্যন্ত চাল ১৩,৬৬৫ ও ধান ১,৯৬৫ মেট্রিক টন সংগ্রহ করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here