ঢাকা ১২:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রচারণা ধান ও চালের অবৈধ মজুদ ঠেকাতে আশুগঞ্জে খাদ্য অধিদপ্তরের অভিযান॥ মিল মালিককে জরিমানা॥ স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোঃ ইসলাম, অগ্নিসংযোগ মামলায় গ্রেফতার টেকসই ভবিষ্যৎ গড়তে ইউপিজি’র অগ্রণী ভূমিকা ২০২৫-এ গোল্ড প্রেসিডেন্ট’ সম্মাননা পেলেন রোটারিয়ান ইঞ্জিনিয়ার কামাল উদ্দীন কারাগারে টাকা ছাড়া মেলেনা বন্দিদের সাক্ষাত পেশাগত অধিকার আদায়ে কাজ করার অঙ্গীকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত কমিটির বিজয়নগরে নিজ বাসা থেকে নিখোঁজ তানভীর জনগুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি প্রদান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিখোঁজ শাফওয়ান হোসেনকে পাওয়া গেছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উল্লাসকর দত্তের ১৩৮তম জন্মদিন পালিত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৩৬:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৩ ১২৯ বার পড়া হয়েছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উল্লাসকর দত্তের ১৩৮তম জন্মদিন পালিত

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

১৩৮তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে বক্তাগণ
উল্লাসকর দত্তের বিপ্লবী ও দেশাত্মবোধের চেতনা বুকে ধারণ করে সকলকে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে

১৬ এপ্রিল ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের মহানপুরুষ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃতিসন্তান, প্রখ্যাত বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের ১৩৮তম জন্মদিন। এ উপলক্ষ্যে ‘উল্লাসকর দত্তের সংগ্রামী জীবন ও স্মৃতি রক্ষার আন্দোলন’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে ‘উল্লাসকর দত্ত স্মৃতি সংসদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া’। গতকাল রোববার বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লাসকর দত্ত স্মৃতি সংসদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-এর সভাপতি, বিশিষ্ট কবি ও গবেষক জয়দুল হোসেন-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপসি’ত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার মো. আ. কুদদূস। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপসি’ত ছিলেন উদীচী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা শাখার উপদেষ্টা কমরেড সাজিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ (সিলেট অঞ্চল)-এর সাংগঠনিক সম্পাদক, বাচিকশিল্পী ও সাংবাদিক মোঃ মনির হোসেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন উল্লাসকর দত্ত স্মৃতি সংসদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম স্বপন। কবিতা আবৃত্তি করেন সাহিত্য একাডেমির সম্পাদকমন্ডলী সদস্য, আবৃত্তিশিল্পী নুসরাত জাহান বুশরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঝিলমিল একাডেমির পরিচালক, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকর্মী মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ। অনুষ্ঠান সমন্বয় করেন উদীচী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস রহমান।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, হঠাৎ করে কেউ বিপ্লবী হয় না। বিপ্লবী হতে গেলে দেশ এবং দেশের মানুষকে ভালোবাসতে হয়। বিপ্লবী হতে গেলে সাহসী হতে হয়। বিপ্লবী হতে গেলে অত্যাচারী শোষক আর বিদেশী শাসনের বিরুদ্ধে নিজের জীবন বাজি রেখে লড়াই-সংগ্রাম করতে হয়। বিপ্লবী উল্লাসকর দত্ত আজীবন তাই করে গেছেন। বক্তারা আরো বলেন গর্বিত পিতার গবির্ত সন্তান উল্লাসকর দত্ত ছোটবেলা থেকেই মানুষ এবং মাতৃভূমিকে ভালোবেসেছেন। তিনি যখন দেখেছেন তার প্রিয় মাতৃভূমি ইংরেজ শাসনের করালগত, তিনি তখন অন্যান্যদের মতো তিনিও ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনে নানান লড়াই-সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি সশস্ত্র বিপ্লবের পক্ষে ছিলেন। কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন সূচতুর ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম ছাড়া পরিপূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়। ব্রিটিশের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে যেয়ে তিনি মামলায় স্বীকার হয়েছেন। দীর্ঘদিন ব্রিটিশদের কারাগারে অবর্ণনীয় নির্যাতন সহ্য করেও দেশ ও বিপ্লবের চেতনা থেকে তিনি একটুও বিরত হননি। বক্তারা বলেন, উল্লাসকর দত্তের এই চেতনা আমাদের সবাইকে ধারণ করতে হবে।

বক্তাগণ আরো বলেন, উল্লাসকর দত্ত একটি অখন্ড ভারত চেয়েছিলেন। একটি স্বাধীন দেশ চেয়েছিলেন। যে দেশে সকল মানুষ ধর্ম, বর্ণ, জাত-পাতের ভেদাভেদ ভুলে সুখে শান্তিতে বসবাস করবে। উলাসকর দত্তের এই মহৎ উদ্দেশ্য আজও সফল হয়নি। তাই উল্লাসকর দত্তের বিপ্লবও শেষ হয়ে যায়নি। এজ্য উল্লাসকর দত্তের বিপ্লবী ও দেশাত্মবোধের চেতনা আমাদের সবাইকে বুকে ধারণ করতে হবে। এবং দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে। বক্তারা সমপ্রতি ধারাবাহিক আন্দোলনের মাধ্যমে উল্লাসকর দত্তের বসত বাড়িটি প্রত্নতত্ত্ব দপ্তরের আওতায় নিয়ে আসায় সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এসময় তারা উল্লাসকর দত্তের বসভিটা বাঘাবাড়িতে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার দাবী জানান। সেমিনার জেলার অর্ধশত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উল্লাসকর দত্তের ১৩৮তম জন্মদিন পালিত

আপডেট সময় : ০৯:৩৬:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৩

১৩৮তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে বক্তাগণ
উল্লাসকর দত্তের বিপ্লবী ও দেশাত্মবোধের চেতনা বুকে ধারণ করে সকলকে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে

১৬ এপ্রিল ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের মহানপুরুষ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃতিসন্তান, প্রখ্যাত বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের ১৩৮তম জন্মদিন। এ উপলক্ষ্যে ‘উল্লাসকর দত্তের সংগ্রামী জীবন ও স্মৃতি রক্ষার আন্দোলন’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে ‘উল্লাসকর দত্ত স্মৃতি সংসদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া’। গতকাল রোববার বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লাসকর দত্ত স্মৃতি সংসদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-এর সভাপতি, বিশিষ্ট কবি ও গবেষক জয়দুল হোসেন-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপসি’ত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার মো. আ. কুদদূস। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপসি’ত ছিলেন উদীচী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা শাখার উপদেষ্টা কমরেড সাজিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ (সিলেট অঞ্চল)-এর সাংগঠনিক সম্পাদক, বাচিকশিল্পী ও সাংবাদিক মোঃ মনির হোসেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন উল্লাসকর দত্ত স্মৃতি সংসদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম স্বপন। কবিতা আবৃত্তি করেন সাহিত্য একাডেমির সম্পাদকমন্ডলী সদস্য, আবৃত্তিশিল্পী নুসরাত জাহান বুশরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঝিলমিল একাডেমির পরিচালক, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকর্মী মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ। অনুষ্ঠান সমন্বয় করেন উদীচী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস রহমান।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, হঠাৎ করে কেউ বিপ্লবী হয় না। বিপ্লবী হতে গেলে দেশ এবং দেশের মানুষকে ভালোবাসতে হয়। বিপ্লবী হতে গেলে সাহসী হতে হয়। বিপ্লবী হতে গেলে অত্যাচারী শোষক আর বিদেশী শাসনের বিরুদ্ধে নিজের জীবন বাজি রেখে লড়াই-সংগ্রাম করতে হয়। বিপ্লবী উল্লাসকর দত্ত আজীবন তাই করে গেছেন। বক্তারা আরো বলেন গর্বিত পিতার গবির্ত সন্তান উল্লাসকর দত্ত ছোটবেলা থেকেই মানুষ এবং মাতৃভূমিকে ভালোবেসেছেন। তিনি যখন দেখেছেন তার প্রিয় মাতৃভূমি ইংরেজ শাসনের করালগত, তিনি তখন অন্যান্যদের মতো তিনিও ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনে নানান লড়াই-সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি সশস্ত্র বিপ্লবের পক্ষে ছিলেন। কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন সূচতুর ইংরেজদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম ছাড়া পরিপূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়। ব্রিটিশের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে যেয়ে তিনি মামলায় স্বীকার হয়েছেন। দীর্ঘদিন ব্রিটিশদের কারাগারে অবর্ণনীয় নির্যাতন সহ্য করেও দেশ ও বিপ্লবের চেতনা থেকে তিনি একটুও বিরত হননি। বক্তারা বলেন, উল্লাসকর দত্তের এই চেতনা আমাদের সবাইকে ধারণ করতে হবে।

বক্তাগণ আরো বলেন, উল্লাসকর দত্ত একটি অখন্ড ভারত চেয়েছিলেন। একটি স্বাধীন দেশ চেয়েছিলেন। যে দেশে সকল মানুষ ধর্ম, বর্ণ, জাত-পাতের ভেদাভেদ ভুলে সুখে শান্তিতে বসবাস করবে। উলাসকর দত্তের এই মহৎ উদ্দেশ্য আজও সফল হয়নি। তাই উল্লাসকর দত্তের বিপ্লবও শেষ হয়ে যায়নি। এজ্য উল্লাসকর দত্তের বিপ্লবী ও দেশাত্মবোধের চেতনা আমাদের সবাইকে বুকে ধারণ করতে হবে। এবং দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে। বক্তারা সমপ্রতি ধারাবাহিক আন্দোলনের মাধ্যমে উল্লাসকর দত্তের বসত বাড়িটি প্রত্নতত্ত্ব দপ্তরের আওতায় নিয়ে আসায় সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এসময় তারা উল্লাসকর দত্তের বসভিটা বাঘাবাড়িতে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার দাবী জানান। সেমিনার জেলার অর্ধশত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।