ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার এক ইউনিয়ন পরিষদের ১২জন সদস্যের মধ্যে ৯জন সদস্য চেয়ারম্যানের দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, পেশি শক্তির দাপট, ভিজিএফ ও ভিজিডির মাল আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে অনাস্থা দিয়েছেন। এই ঘটনায় সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু ছায়েদের বিরুদ্ধে ৯জন সদস্য লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক বরাবর। শুক্রবার (০১ ডিসেম্বর) এ প্রতিবেদককের কাছে এর একটি কপি আসে।
গত ২৭ নভেম্বর করা ওই অভিযোগপত্রে ইউপি সদস্যরা উল্লেখ করেন, ২০২১-২২ অর্থ বছরের ১% এর টাকা নিজে উত্তোলন করিয়া আত্মসাৎ করে জেলা পরিষদ থেকে পাওয়া ৩ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে টিআর/কাবিখার টাকা কাজ না করে আত্মসাৎ করে ফেলেছেন চেয়ারম্যান। সরকারের কৃষি প্রণোদনা সার এবং বীজ কৃষকের মাঝে বিতরণ না করে নিজেই তা লুটপাট করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান ছায়েদ। এছাড়া গ্যাস ফিল্ড হইতে প্রাপ্ত ট্যাক্সের ৪ লক্ষ ১০ হাজার টাকার মধ্যে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা কাজ করে অবশিষ্ট টাকা নিজেই আত্মসাৎ করে ফেলেন। ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ এলাকার জনগণ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে সরকারি কোষাগারে সম্পূর্ণ টাকা জমা না রেখে বেশির ভাগ অংশ টাকা আত্মসাৎ করে খুবই অল্প পরিমাণ টাকা জমা দেয়।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, এলাকার অসহায়-হতদরিদ্র মানুষদের কাছ থেকে জন্মনিবন্ধন আবেদন, সংশোধন পরিবর্তন, পরিবর্ধন বাবদ বিভিন্ন অসুবিধা জটিলতা দেখিয়ে দুই হাজার, তিন হাজার, পাঁচ হাজার টাকা নিয়া জনগনের কাজ করে দেয় এমনকি চাহিদা মত টাকা না পাইলে দীর্ঘদিন অতিবাহিত করে জনগনকে হয়রানি করে। চেয়ারম্যান আবু ছায়েদ নিজ ইচ্ছায় অসৎ উপায়ে টাকা উপার্জন করার লক্ষ্যে ডালিম নামে এক ব্যক্তিকে দিয়ে বিভিন্ন সরকারি অনুদান যেমন প্রেগনেন্সি ভাতা, কৃষি প্রণোদনা, সার, বীজ, ধান বীজ, সরিষাসহ সরকারি টিউবওয়েল, টি.সি.বি পণ্য ইত্যাদি বিক্রি করে উক্ত ব্যক্তি চেয়ারম্যানের যোগসাজসে টাকা উপার্জন করে। এ ব্যাপারে অভিযোগকারীদের একজন সংরক্ষিত ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য নাসরিন আক্তার বলেন, চেয়ারম্যান আবু ছায়েদ নির্বাচিত হওয়ার পর নাটাই উত্তর ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রজেক্ট ও কাজে তিনি স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে গেছেন। অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করা সকল ইউপি সদস্যরা চেযারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতায় অতিষ্ট হয়ে আছেন।
৭নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল হাই বলেন, লিখিত অভিযোগে যা লেখা হয়েছে, তা সামান্য মাত্র। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। সসর্বশেষ বরাদ্ধ পাওয়া টিউবওয়েলও লুট করে খেয়েছেন। তার সাথে আমাদের কাজ করা সম্ভব নয়। তাই আমরা অনাস্থা দিয়েছি। অভিযোগের ব্যাপারে চেয়ারম্যান আবু ছায়েদ বলেন, আমার বিরুদ্দে আনিত অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ইউপি সদস্যরা অহেতুক কারণে এমন করছে৷ ইউপি সদস্যদের নিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।