ঢাকা ০৩:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোঃ ইসলাম, অগ্নিসংযোগ মামলায় গ্রেফতার টেকসই ভবিষ্যৎ গড়তে ইউপিজি’র অগ্রণী ভূমিকা ২০২৫-এ গোল্ড প্রেসিডেন্ট’ সম্মাননা পেলেন রোটারিয়ান ইঞ্জিনিয়ার কামাল উদ্দীন কারাগারে টাকা ছাড়া মেলেনা বন্দিদের সাক্ষাত পেশাগত অধিকার আদায়ে কাজ করার অঙ্গীকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত কমিটির বিজয়নগরে নিজ বাসা থেকে নিখোঁজ তানভীর জনগুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি প্রদান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিখোঁজ শাফওয়ান হোসেনকে পাওয়া গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ‌উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র শাফওয়ান হোসেন(শাওন) নিখোঁজ বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় ইঞ্জিনিয়ার শ্যামলকে ফুলেল শুভেচ্ছা

প্রদিপ নিভে যাওয়া পরিবারটি দেখলো আলোর মুখ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:০২:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩ ১৪৭ বার পড়া হয়েছে

প্রদিপ নিভে যাওয়া পরিবারটি দেখলো আলোর মুখ

আজকের জার্নাল অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌর এলাকার মঝিকাড়া গ্রামের রিস্কা চালক অরুণ মিয়ার থাকার কোন জায়গা নেই। স্ত্রী ও দুই প্রতিবন্ধী ছেলে নিয়ে পরের বাড়িতে একটি একচালা ছাউনি ভাড়া নিয়ে কোন রকমে জীবন চালিয়ে যাচ্ছিল। বড় ছেলের নাম মোছেন মিয়া(১৪)ছোট ছেলের নাম আবির (১২)। জন্মের পর টাইফয়েড জ্বরে তার ছোট ছেলে আবিরের বাম পা বিকলাঙ্গ হয়ে যায়, আর বড় ছেলে মোছেন মিয়া জন্মের পরেই বাক প্রতিবন্ধী ও হাত পা বিকলাঙ্গ। আবিরের পায়ে একটি রড দিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলে তার জীবন। রিস্কা চালিয়ে অল্প আয়ের সংসারে তিন বেলা ভাত জোগাড় করতে পারতো না অরুন, ছেলেদের চিকিৎসা তো দুরের কথা। এরই মাঝে ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস জীবন যুদ্ধে চলা অবস্থায় হঠাৎ একদিন আবিরের দাদা,দাদি,বাবাসহ পরপর তিন দিনে তিনজনের মৃত্যু দেখে ওই প্রতিবন্ধী দুই শিশু। বেঁচে থাকার আলো নিভে যায় তাদের। আবির পা খুড়িঁয়ে ভিক্ষা করে মা ভাইয়ের খাবার যোগার করত। সম্প্রতি এই পরিবারের হৃদয়বিদারক এই কাহিনী সমাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তা দেখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামূল ছিদ্দিক এই অসহায় প্রতিবন্ধী পরিবারটি পাশে দাড়াঁলেন। তাদের হাতে তুলে দেন পাঁচ মাসের খাদ্য সামাগ্রী ও নগদ অর্থ। আর আবিরকে অপারেশন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে এনে জিননদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেনীতে ভর্তি করে দেন এবং মাথা গুঁজার ঠাই হিসাবে প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ন প্রকল্পে জিনদপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের জমিসহ একটি আধাপাকা ঘর উপহার দিলেন। আবির জানান,লেখাপড়া করে বড় হয়ে আমি স্যারের মত হবো। আমিও মানুষের সেবা করবো, স্যার যেভাবে মানুষকে উপকার করে আমিও তেমন ভাবে মানুষের উপকার করবো। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। জিনোদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার বলেন,তার দায়িত্ব আমাদের ইউএনও মহোদয় নিয়েছেন। আবির লেখাপড়ায় খুব মনোযোগী, আমরাও তার লেখাপড়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ খেয়াল রাখছি।
এই মানবিক বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল ছিদ্দিক বলেন,সমাজে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হচ্ছে। যে পরিবারটিকে সহায়তা প্রদান করা হলো সেই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিসহ তিন দিনে তিনজন মারা গেছেন। আমরা চেয়েছি পারিবারটির জন্য স্থায়ীভাবে কিছু একটা করে দিতে।এখন তারা সমাজের মূল স্রোতে ফিরে এসেছে। আবিরের মা শিউলী বেগমকে সেলাই প্রশিক্ষণ ও গাভী পালনের প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

প্রদিপ নিভে যাওয়া পরিবারটি দেখলো আলোর মুখ

আপডেট সময় : ০২:০২:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌর এলাকার মঝিকাড়া গ্রামের রিস্কা চালক অরুণ মিয়ার থাকার কোন জায়গা নেই। স্ত্রী ও দুই প্রতিবন্ধী ছেলে নিয়ে পরের বাড়িতে একটি একচালা ছাউনি ভাড়া নিয়ে কোন রকমে জীবন চালিয়ে যাচ্ছিল। বড় ছেলের নাম মোছেন মিয়া(১৪)ছোট ছেলের নাম আবির (১২)। জন্মের পর টাইফয়েড জ্বরে তার ছোট ছেলে আবিরের বাম পা বিকলাঙ্গ হয়ে যায়, আর বড় ছেলে মোছেন মিয়া জন্মের পরেই বাক প্রতিবন্ধী ও হাত পা বিকলাঙ্গ। আবিরের পায়ে একটি রড দিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলে তার জীবন। রিস্কা চালিয়ে অল্প আয়ের সংসারে তিন বেলা ভাত জোগাড় করতে পারতো না অরুন, ছেলেদের চিকিৎসা তো দুরের কথা। এরই মাঝে ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস জীবন যুদ্ধে চলা অবস্থায় হঠাৎ একদিন আবিরের দাদা,দাদি,বাবাসহ পরপর তিন দিনে তিনজনের মৃত্যু দেখে ওই প্রতিবন্ধী দুই শিশু। বেঁচে থাকার আলো নিভে যায় তাদের। আবির পা খুড়িঁয়ে ভিক্ষা করে মা ভাইয়ের খাবার যোগার করত। সম্প্রতি এই পরিবারের হৃদয়বিদারক এই কাহিনী সমাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তা দেখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামূল ছিদ্দিক এই অসহায় প্রতিবন্ধী পরিবারটি পাশে দাড়াঁলেন। তাদের হাতে তুলে দেন পাঁচ মাসের খাদ্য সামাগ্রী ও নগদ অর্থ। আর আবিরকে অপারেশন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে এনে জিননদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেনীতে ভর্তি করে দেন এবং মাথা গুঁজার ঠাই হিসাবে প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ন প্রকল্পে জিনদপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের জমিসহ একটি আধাপাকা ঘর উপহার দিলেন। আবির জানান,লেখাপড়া করে বড় হয়ে আমি স্যারের মত হবো। আমিও মানুষের সেবা করবো, স্যার যেভাবে মানুষকে উপকার করে আমিও তেমন ভাবে মানুষের উপকার করবো। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। জিনোদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার বলেন,তার দায়িত্ব আমাদের ইউএনও মহোদয় নিয়েছেন। আবির লেখাপড়ায় খুব মনোযোগী, আমরাও তার লেখাপড়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ খেয়াল রাখছি।
এই মানবিক বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল ছিদ্দিক বলেন,সমাজে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হচ্ছে। যে পরিবারটিকে সহায়তা প্রদান করা হলো সেই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিসহ তিন দিনে তিনজন মারা গেছেন। আমরা চেয়েছি পারিবারটির জন্য স্থায়ীভাবে কিছু একটা করে দিতে।এখন তারা সমাজের মূল স্রোতে ফিরে এসেছে। আবিরের মা শিউলী বেগমকে সেলাই প্রশিক্ষণ ও গাভী পালনের প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।