দরিদ্র পরিবারের সন্তান মো. আইনুল করিম। বয়স মাত্র ১৩ বছর। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের শাহবাজপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র। দু’টি কিডনীই ডেমেজ হয়ে গেছে ওই কিশোরের। ক্যাথেটার লাগানোর সময় প্রস্রাবের রাস্তা ফেঁটে ছিদ্র হয়ে গেছে। পেট ছিদ্র করে বাইপাসের মাধ্যমে বিকল্প পথে এখন প্রস্রাব করছে। কিশোর আইনুল এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। প্রতিবন্ধি পিতা মো. মাহফুজুল করিমের আয় রোজকার নেই। চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে পারছে না পরিবার। যন্ত্রণায় সর্বক্ষণ বিছানায় ছটফট করছে। আর বাঁচার জন্য আহাজারি ও আকুতি জানাচ্ছে। সমাজ ও দেশের বিত্তবানদের সহায়তা ছাড়া বাঁচার উপায় নেই আইনুলের।
সরজমিনে পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার শাহবাজপুর খন্দকার পাড়ার মাহফুজুল করিম (৬৫)। অবসরপ্রাপ্ত এই ব্যাংক কর্মচারী দুইবার স্ট্রোক করে এখন প্রতিবন্ধি। স্ত্রী, ২ ছেলে ও ২ মেয়েসহ অনেক কষ্টে চলছে তাঁর ৬ সদস্যের পরিবার। নুন আনতে পানতা পুরায় অবস্থা তাদের। এরই মধ্যে গত রমজানে ছেলে আইনুলের কিডনী সমস্যা ধরা পড়ে। ইতিমধ্যে তার দু’টি কিডনীকেই ডেমেজ ঘোষণা করেছেন চিকিৎসক। চোখে সরিষাফুল দেখছেন মাহফুজুল করিম। গোটা পরিবারের কেউ স্বস্থিতে নেই। টেনশন চেপে ধরেছে সকলকে। কারণ একই রোগে কয়েক বছর আগে মাহফুজুল করিমের ২২ বছর বয়সের আরেক ছেলে মারা গিয়েছে। আইনুলের চিকিৎসার ব্যয় সামাল দিতে পারছেন না পরিবার। সপ্তাহে একবার কিডনী দু’টি ডাইলোসিস করতে খরচ হচ্ছে ৪৫০০ টাকা। মাসে ১৮ হাজার টাকা। ঠিকমত আহারের ব্যবস্থা না থাকলেও ডাইলোসিস করতেই হবে ওই কিশোরের। আবার উপর খারার ঘা। ক্যাথেটার লাগানোর সময় প্রস্রাবের রাস্তা ফেঁটে যায় আইনুলের।
পরে পেট ছিদ্র করে বাইপাসের মাধ্যমে বিকল্প পথে চলছে এখন প্রস্রাব। সব মিলিয়ে কিডনী আর প্রস্রাবের রাস্তার যন্ত্রণায় বিছানায় ফটফট করছে কিশোর আইনুল। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়লেও আইনুল এখনো বাঁচার স্বপ্ন দেখছে। আইনুল বুঝতে পারছে তার পিতার আথিক সক্ষমতা শেষ। তাই আইনুল শুয়ে থেকেই তাকে বাঁচানোর জন্য কেউ না কেউ এগিয়ে আসার স্বপ্ন দেখছে। আইনুল দেশের বিত্তবানদের কাছে অনুরোধ করে বলছে, মাত্র ১৩ বছর বয়সে আমি মা বাবা ভাইবোন ও সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে যেতে চাই না। আমার মত কত কিশোর লাফিয়ে বেড়াচ্ছে। খেলছে গাইছে। আমারও তো ইচ্ছে হয় তাদের মত খেলতে ঘুরতে। আপনারা দয়া করে আমাকে বাঁচতে দেন। নিজের সন্তান মনে করে আমার পাশে দাঁড়ান। ইনশাল্লাহ আমি আবার উঠে দাঁড়াব। আমি নাচব খেলব। গত কয়েক মাসে নিজের যা কিছু ছিল সব শেষ করে এখন নি:স্ব হয়ে পড়েছেন মাহফুজুল।
শুধু ভিটেবাড়িটি ছাড়া আর কিছু নেই তার। ঢাকা মেডিকেল, আজগর আলী হাসপাতাল, রাশমনো হাসপাতাল ও সিকেডি হাসপাতালসহ সকল হাসপাতালের চিকিৎসকরাই কিডনী ট্রান্সফারের পরামর্শ দিয়েছেন। মা নাছিমা আক্তার সন্তানকে কিডনী দিতে প্রস’ত। এতে ব্যয় হবে ১৫-২০ লাখ টাকা। বিশাল এই ব্যয়ভার বহন করা নি:স্ব মাহফুজুলের পক্ষে অসম্ভব। তাই মানবিক দিক বিবেচনায় মেধাবী এই ছাত্রের জীবন বাঁচাতে ধনাঢ্য দানশীল, ভিত্তশালী, জনপ্রতিনিধি, শিল্পপতি ব্যক্তিবর্গের সহায়তা প্রয়োজন। দয়া করে কেউ সাহায্যের হাত বাড়ালে- আইনুলের পিতা মো. মাহফুজুল করিমের সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর-১৪২০৯০১০৩২০৯০, সোনালী ব্যাংক পিএলসি, সরাইল শাখা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। বিকাশ ও মুঠোফোন নম্বর-০১৯১১-৩৯৭৬৩২/০১৯১১-৩৯৭৬৩৩। শাহবাজপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সরাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, আইনুল তার মেধার দ্বারা বিদ্যালয় তথা এলাকার জন্য সুনাম বয়ে আনতে সক্ষম। তাকে বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের সকলেরই এগিয়ে আসা উচিত।