Dhaka 1:57 am, Wednesday, 6 November 2024
News Title :
আখাউড়ায় জাটকা জব্দ করে বিলানো হলো মাদরাসায় বৈরুতে বিমান হামলায় নিহত নিজামের বাড়িতে আহাজারি সুহিলপুর হারুন-আল রশিদ ডিগ্রী কলেজের নবীনবরণ অনুষ্ঠান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫৫তম জাতীয় সমবায় দিবস পালন ফখরে বাঙ্গাল ইসলামিয়া মাদ্রাসায় হাফেজ সামজিদের জন্যে দোয়ার আয়োজন নবীনগর উপজেলার রতনপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে কর্মী সমাবেশ পলিথিন নিষিদ্ধে জনসচেতনতায় তরী বাংলাদেশ এর লিফলেট বিতরণ নবীনগরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাবেক ১০ মন্ত্রী-এমপির নামে মামলা বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারি সমিতি (বাকাসস) কমিটি গঠন, জাকারিয়া সভাপতি ॥ রুবেল সাধারণ সম্পাদক

ডা: ফৌজিয়া ৭ মাস ধরে নেই কর্মস্থলে সেবা থেকে বঞ্চিত সরাইলবাসী

  • Reporter Name
  • Update Time : 01:04:47 pm, Thursday, 1 December 2022
  • 214 Time View

ফাইল ছবি

মাহবুব খান বাবুল, সরাইল থেকে:

সরাইল হাসপাতালে যোগদানের পর গত ৭ মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত গাইনি কন্সালটেন্ট ডা: ফৌজিয়া আক্তার। যোগদান পত্রটি পাঠিয়েছিলেন গাড়ীর চালকের মাধ্যমে। হাসপাতাল কর্তৃডক্ষ এখনো উনাকে চোখেই দেখেননি। এমনকি চিকিৎসকদের হাজিরা খাতায় এখনো নামই ওঠাননি তিনি। অথচ জেলা শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে বসে রোগী দেখেন দিনরাত। উনার অনুপস্থিতির কারণে গতকাল বুধবারও হাসপাতালে এসে সেবা বঞ্চিত হয়ে ফিরে গেছেন ২০-২৫ জন নারী। ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে দীর্ঘদিন পর চালু হওয়া গর্ভবতী মহিলাদের ওটি টি। বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে সিএসও বলছেন কারণ দর্শানো নোটিশের পর উনার বিরূদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার পক্রিয়া চলছে। সরজমিন ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, গাইনি কন্সালটেন্ট ডা: ফৌজিয়া আক্তার সরাইল হাসপাতালে যোগদান করেছেন গত ২৮ এপ্রিল । তবে স্বশরীরে আসেননি এখনো। যোগদান পত্রটি পাঠিয়েছেন উনার গাড়ী চালককে দিয়ে। গত ৭ মাসের মধ্যে তিনি একদিনও আসেননি সরাইল হাসপাতালে। গাইনি চিকিৎসা সেবা নিতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রতিদিন গড়ে হাসপাতালে আসছেন ২৫-৩০ জন রোগী। চারিদিকে ঘুরে ফিরে অপেক্ষার পর অপেক্ষা করেন। কিন্তু দিন শেষ হয়ে গেলেও ডা: ফৌজিয়ার দেখা মিলে না তাদের ভাগ্যে। এ ভাবে প্রতিমাসে চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হচ্ছে সরাইলের শতাধিক নারী। দীর্ঘদিন পর চালু হয়েছিল সরাইল হাসপাতালে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নির্মিত কোটি টাকা মূল্যের অপারেশন থিয়েটারটি। গত এপ্রিল মাস থেকে আবারও তালা ঝুলছে ওই কক্ষে। গতকাল বুধবার সকালে হাসপাতালে আসা রেহেনা বেগম (৪৫) নামের এক রোগী রাগান্বিত হয়ে ফিরে যাচ্ছেন বাড়িতে। সমস্য কী? জানতে চাইলে ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন, ‘গরীবের বউ সবার ভাবী।’ শুনেছি ফৌজিয়া নামের একজন গাইনি চিকিৎসক সরাইল হাসপাতালে যোগদান করেছেন। উনার চিকিৎসা নিতে ঘুরছি ২ সপ্তাহ ধরে। কিন্তু দেখা মিলছে না। উনি আসেনই না। জানতে পারলাম। তিনি সরাইলে শুধু নামে মাত্র। জেলা শহরের এক প্রাইভেট হাসপাতালে দিনে রাতে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছেন। এর আগে একজন ছিলেন তিনিও মাঝেমধ্যে আসতেন। কিন’ রোগী না দেখে এক জায়গায় বসে গল্প গুজব করে চলে যেতেন। আসলে সরাইলের মানুষকে অনেক কর্মকর্তা বোকা বানিয়ে ধোঁকা দিয়ে আখের ঘুছিয়ে হাঁসতে হাঁসতে চলে যান। সরাইলে না আসলেও গতকাল বেলা ২ টা ১৭ মিনিটে জনৈক রোগী নিশ্চিত করেছেন ডা. ফৌজিয়া জেলা শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে বসে রোগী দেখছেন। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবু হানিফ বলেন, যোগদানের পর তিনি সরাইল আসছেন না। রোগীরা সেবা বঞ্চিত হচ্ছে। বিষয় গুলো শুনেছি। এভাবে চলতে পারে না। উনার ভাল না লাগলে চলে যাবেন। পদ ধরে রেখে সেবা বঞ্ছিত করতে পারেন না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি। এ বিষয়ে জানতে ডা: ফৌজিয়ার মুঠোফোনে (০১৭২০-৯৯০৩৪৩) একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি রিসিভ করেননি। সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচও) ডা. মো. নোমান মিয়া গর্ভবতী মহিলাদের ওটি বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ডা: ফৌজিয়া গত ২৮ এপ্রিল লোক মারফত যোগদান পত্র পাঠিয়েছেন। এখন পর্যন্ত সাপোর্টিং অন্য কোন কাগজ পায়নি। দৈনিক হাজিরা খাতায় উনার নাম এখনো ওঠেনি। উনাকে হাসপাতালে এখনো আমরা দেখিনি। চিকিৎসক সমস্যায় আবারও বন্ধ হয়ে গেছে ওটি। এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সিভিল সার্জন (সিএস) ডা: মো. একরাম উল্লাহ যোগদানের পর থেকে ডা. ফৌজিয়ার অনুপস্থিতির বিষয় স্বীকার করে বলেন, জেলার গত সভায় সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন। আমরা তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছি। এখন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার পক্রিয়া চলছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আখাউড়ায় জাটকা জব্দ করে বিলানো হলো মাদরাসায়

fapjunk
© All rights reserved ©
Theme Developed BY XYZ IT SOLUTION

ডা: ফৌজিয়া ৭ মাস ধরে নেই কর্মস্থলে সেবা থেকে বঞ্চিত সরাইলবাসী

Update Time : 01:04:47 pm, Thursday, 1 December 2022

মাহবুব খান বাবুল, সরাইল থেকে:

সরাইল হাসপাতালে যোগদানের পর গত ৭ মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত গাইনি কন্সালটেন্ট ডা: ফৌজিয়া আক্তার। যোগদান পত্রটি পাঠিয়েছিলেন গাড়ীর চালকের মাধ্যমে। হাসপাতাল কর্তৃডক্ষ এখনো উনাকে চোখেই দেখেননি। এমনকি চিকিৎসকদের হাজিরা খাতায় এখনো নামই ওঠাননি তিনি। অথচ জেলা শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে বসে রোগী দেখেন দিনরাত। উনার অনুপস্থিতির কারণে গতকাল বুধবারও হাসপাতালে এসে সেবা বঞ্চিত হয়ে ফিরে গেছেন ২০-২৫ জন নারী। ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে দীর্ঘদিন পর চালু হওয়া গর্ভবতী মহিলাদের ওটি টি। বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে সিএসও বলছেন কারণ দর্শানো নোটিশের পর উনার বিরূদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার পক্রিয়া চলছে। সরজমিন ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, গাইনি কন্সালটেন্ট ডা: ফৌজিয়া আক্তার সরাইল হাসপাতালে যোগদান করেছেন গত ২৮ এপ্রিল । তবে স্বশরীরে আসেননি এখনো। যোগদান পত্রটি পাঠিয়েছেন উনার গাড়ী চালককে দিয়ে। গত ৭ মাসের মধ্যে তিনি একদিনও আসেননি সরাইল হাসপাতালে। গাইনি চিকিৎসা সেবা নিতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রতিদিন গড়ে হাসপাতালে আসছেন ২৫-৩০ জন রোগী। চারিদিকে ঘুরে ফিরে অপেক্ষার পর অপেক্ষা করেন। কিন্তু দিন শেষ হয়ে গেলেও ডা: ফৌজিয়ার দেখা মিলে না তাদের ভাগ্যে। এ ভাবে প্রতিমাসে চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হচ্ছে সরাইলের শতাধিক নারী। দীর্ঘদিন পর চালু হয়েছিল সরাইল হাসপাতালে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নির্মিত কোটি টাকা মূল্যের অপারেশন থিয়েটারটি। গত এপ্রিল মাস থেকে আবারও তালা ঝুলছে ওই কক্ষে। গতকাল বুধবার সকালে হাসপাতালে আসা রেহেনা বেগম (৪৫) নামের এক রোগী রাগান্বিত হয়ে ফিরে যাচ্ছেন বাড়িতে। সমস্য কী? জানতে চাইলে ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন, ‘গরীবের বউ সবার ভাবী।’ শুনেছি ফৌজিয়া নামের একজন গাইনি চিকিৎসক সরাইল হাসপাতালে যোগদান করেছেন। উনার চিকিৎসা নিতে ঘুরছি ২ সপ্তাহ ধরে। কিন্তু দেখা মিলছে না। উনি আসেনই না। জানতে পারলাম। তিনি সরাইলে শুধু নামে মাত্র। জেলা শহরের এক প্রাইভেট হাসপাতালে দিনে রাতে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছেন। এর আগে একজন ছিলেন তিনিও মাঝেমধ্যে আসতেন। কিন’ রোগী না দেখে এক জায়গায় বসে গল্প গুজব করে চলে যেতেন। আসলে সরাইলের মানুষকে অনেক কর্মকর্তা বোকা বানিয়ে ধোঁকা দিয়ে আখের ঘুছিয়ে হাঁসতে হাঁসতে চলে যান। সরাইলে না আসলেও গতকাল বেলা ২ টা ১৭ মিনিটে জনৈক রোগী নিশ্চিত করেছেন ডা. ফৌজিয়া জেলা শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে বসে রোগী দেখছেন। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবু হানিফ বলেন, যোগদানের পর তিনি সরাইল আসছেন না। রোগীরা সেবা বঞ্চিত হচ্ছে। বিষয় গুলো শুনেছি। এভাবে চলতে পারে না। উনার ভাল না লাগলে চলে যাবেন। পদ ধরে রেখে সেবা বঞ্ছিত করতে পারেন না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি। এ বিষয়ে জানতে ডা: ফৌজিয়ার মুঠোফোনে (০১৭২০-৯৯০৩৪৩) একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি রিসিভ করেননি। সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচও) ডা. মো. নোমান মিয়া গর্ভবতী মহিলাদের ওটি বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ডা: ফৌজিয়া গত ২৮ এপ্রিল লোক মারফত যোগদান পত্র পাঠিয়েছেন। এখন পর্যন্ত সাপোর্টিং অন্য কোন কাগজ পায়নি। দৈনিক হাজিরা খাতায় উনার নাম এখনো ওঠেনি। উনাকে হাসপাতালে এখনো আমরা দেখিনি। চিকিৎসক সমস্যায় আবারও বন্ধ হয়ে গেছে ওটি। এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সিভিল সার্জন (সিএস) ডা: মো. একরাম উল্লাহ যোগদানের পর থেকে ডা. ফৌজিয়ার অনুপস্থিতির বিষয় স্বীকার করে বলেন, জেলার গত সভায় সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন। আমরা তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছি। এখন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার পক্রিয়া চলছে।