মাহবুব খান বাবুল: সরাইল থেকে:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে “বঙ্গবন্ধুর দর্শন, সমবায়ে উন্নয়ন” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ শনিবার ৫১তম জাতীয় সমবায় দিবস উদ্যাপনের আলোচনা সভায় সমবায়ীদের অবমূল্যায়নের অভিযোগ ওঠেছে। সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম অডিটরিয়ামের আলোচনা সভায় উপজেলার ৫০ টি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির পাঁচ শতাধিক সদস্য উপস্থিত থাকলেও কাউকে কথা বলার সুযোগ না দেওয়ায় ক্ষুদ্ধ হন দায়িত্বশীলরা। নিরাশ হন উপস্থিত সদস্যরাও। সরাইল নাসিরনগর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি শ্রী দূর্গাচরণ দাস সভায় প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথির সামনে প্রকাশ্যে এ বিষয়ের ক্ষোভ প্রকাশ ও প্রতিবাদ করেন। সময় সংক্ষিপ্ততার কথা বলে তাকে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এতে মোটেও সন্তুষ্ট নন দূর্গাচরণ দাস। সরজমিনে দেখা যায়, পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুসারে সকাল ১১টায় অনুষ্ঠান শুরূর কথা থাকলেও প্রধান অতিথি আসেন সাড়ে ১১টায়। পোনে ১২টায় উত্তোলন হয় জাতীয় ও সমবায় পতাকা। মাওলানা শেখ মো. আমান উল্লাহ’র কুরআন তেলাওয়াত ও সুরঞ্জন দাসের গীতা পাঠের মাধ্যমে সভা শুরূ হয়। উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মওদুদ আহমদ-এর সঞ্চালনায় নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের (৩১২) সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম। বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবু হানিফ, সরাইল বিআরডিবি’র চেয়ারম্যান আবু কাউছার ঠাকুর ও প্রধান অতিথি। উপসি’ত বিভিন্ন সমবায় সমিতির পাঁচ শতাধিক সদস্যের কোন প্রতিনিধিকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি। তাই ২/১ জন প্রতিনিধিসহ অনেকেই বলতে শুরূ করেন আমাদেরকে ডেকে এনে এমন একটি গুরূত্বপূর্ণ দিবসে মনের কথা বলতে দিল না। অতীতে কোন অনুষ্ঠানে তো এমন ঘটনা ঘটেনি। আমাদের এই অনুষ্ঠানে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্য ও সরাইল নাসিরনগর (৪৫টি সমিতির সংঘঠন) মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি শ্রী দূর্গাচরণ দাস ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির প্রতিনিধি ও সদস্যরাই এই দিবসের প্রাণ। গত ৩০ বছর ধরে এ জাতীয় অনুষ্ঠান দেখছি। আমাদের সুখ দু:খ, সরকারের প্রশংসনীয় সুবিধা, করণীয় সমূহ ও ভবিষ্যতে আরো কি পদক্ষেপ নিলে ভাল হবে এই কথা বলে থাকি। দরিদ্র অসহায় নিম্ন আয়ের জেলে কুমারদের মনের কথা বলে আসছি। আজকে এমন একটি গুরূত্বপূর্ণ দিবসে কেন আমাদের কাউকে কথা বলতে দিলেন না? এর পেছনে কোন ষড়যন্ত্র আছে কিনা জানি না। তবে সমবায়ীদের মনের কথা না বলতে পারায় আমার কলিজাটা জ্বলে ছারখার হয়ে যাচ্ছে। এভাবে আমাদেরকে অবমূল্যায়ন করা হবে ভাবিনি। মাত্র ৩-৪ জনের বক্তব্যের মাধ্যমেই জাতীয় দিবসের সভা শেষ করে দিলেন? বছরে মাত্র একটি দিনের অনুষ্ঠানে এত তাড়াহুড়া কেন? কর্তৃপক্ষ সময় সংক্ষিপ্ততার কথা বললেও আমরা এটা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছি না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মওদুদ আহমদ বলেন, আসলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছিল অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করতে হবে। আর বিআরডিবি’র চেয়ারম্যান আবু কাউছার ঠাকুর তো বক্তব্য দিয়েছেন।