Dhaka 7:49 pm, Saturday, 27 July 2024
News Title :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল মুগ্ধতা ছড়িয়েছে ভারতের আবৃত্তি সংস্থা শ্রুতির শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা নবীনগরে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান তিন শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ তরী বাংলাদেশ বিজয়নগর উপজেলা আহবায়ক কমিটি গঠন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির ১৮ সদস্যকে সংবর্ধণা প্রদান মেসার্স সরকার কনস্ট্রাকশনে একজনকে নিয়োগ দেয়া হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত সরাইলে ৭০ লক্ষাধিক টাকা কর আদায় ৩ কর্মকর্তাকে অভিনন্দন স্মারক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারী উদ্যোক্তাদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ল্যাপটপ প্রদান গুজবরোধে সাইবার আইন কাজে লাগানো বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার কথা জানালেন নেদারল্যান্ডের উপ-রাষ্ট্রদূত

ছিনতাইয়ের টাকা বন্টনের দ্বন্ধেই খুন হয়েছে সারোয়ার

  • Reporter Name
  • Update Time : 05:39:50 pm, Monday, 1 April 2024
  • 98 Time View

সরাইলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বন্ধুকে খুন, গ্রেপ্তার ২

মাহবুব খান বাবুল, সরাইল থেকেঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নরসিংসার গ্রামের নুরূ মিয়ার ছেলে জসিম উদ্দিন (৩৭) পেশাদার অটোরিকশা চুার/ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছিনতাইয়ের কাজে ভাড়া যায় সে। বিজয়নগরের আল আমিন (৩৩) ও খাঁটিহাতা গ্রামের লাল খাঁ ওরফে সারোয়ার (২৬) একই চক্রের সদস্য। তারা তিন জনে মিলেই সরাইলের বিভিন্ন জায়গায় অটোরিকশা ছিনতাই করতো। সম্প্রতি একটি রিকশা চুরির পর বিক্রি টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়েই সারোয়ারের সাথে তাদের দ্বন্ধ হয়। আর এই দ্বদ্ধের কারণেই সারোয়ারকে নির্মমভাবে ছুরিকাঘাত করে খুন করেছে আল আমিন ও জসিম। গত শনিবার তারা আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই নুর নবী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, সারোয়ার হত্যার পর গ্রেপ্তারকৃত আল আমিন ও জসিমকে গ্রেপ্তার করে সরাইল থানা পুলিশ। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরূত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সেই সাথে তারা সারোয়ার হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে নেপথ্যের কারণও ব্যাখ্যা করেছে আদালতে। মূলত তারা তিন জনই অটোরিকশা ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। জসিম বর্তমানে সরাইল সদরের সৈয়দটুলা গ্রামের হাফিজটুলায় বসবাস করছে। আল আমিন বড্ডাপাড়ায় হাফিজ উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকে। তারা তিন জনের চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অটোরিকশা চুরি/ ছিনতাই করছে। গত দুই মাস আগে তারা সরাইলের রবিন মিয়ার গ্যারেজ থেকে একটি অটোরিকশা চুরি করে। ওই রিকশাটি ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে। এর মধ্যে ২০ হাজার টাকা তিন জনে ভাগ করে নেয়। বাকি ২০ হাজার টাকা জসিম ও আল আমিনের কাছে থেকে যায়। বাকি ২০ হাজার ভাগ চাই সারোয়ার। দেম দিচ্ছি বলে সারোয়ারকে ঘুরাতে থাকে জসিমরা। এক পর্যায়ে সারোয়ার বাকি টাকার ভাগ দ্রূত না দিলে রিকশা চুরির বিষয়টি ফাঁস করে দিবে বলে আল আমিনকে হুমকি দেয়।

তারা ভাবে এক চুরির ঘটনা জানাজানি হলে এই পর্যন্ত যত চুরি/ছিনতাই করেছে সব বেরিয়ে যাবে। আর তখনই চুরি ফাঁস করা রোধে পরিকল্পনা করতে থাকে আল আমিন আর জসিম। শুধু ফাঁস রোধ নয়, তারা চির দিনের জন্য স্বাক্ষীকে শেষ করার পরিকল্পনা আটে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গত শুক্রবার তারা সারোয়ারকে আল আমিনের বাসায় দাওয়াত করে। রাত ৯টার পর সারোয়ারসহ তিনজন এক সাথে অটোরিকশায় করে সরাইলের উদ্যেশ্যে রওনা দেয়। বড্ডা পাড়ায় আল আমিনের বাসায় খাওয়া শেষ করে হাঁটতে রাস্তায় বের হয়। রাত তখন ১০ টা ২০ মিনিট। তারা তিনজনই নাথপাড়া কামার হাটি এলাকার নির্জন স’ানে। সেখানে বাকি ২০ হাজার টাকার ভাগের কথা বলায় সারোয়ারের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ায় আল আমিন। এক পর্যায়ে পূর্ব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে কোমর থেকে ছুরা বের করে আল আমিন সারোয়ারের বুকে হাতে ও পেছনের দিকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে।

এ সময় আল আমিনকে সহায়তা করে জসিম। রক্তাক্ত অবস’ায় সারোয়ার মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ছুরাটি জসিমের হাতে দিয়ে ঘটনাস’ল থেকে সটকে পড়ে আল আমিন। সারোয়ারের আর্তচিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন দৌঁড়ে এসে ঘটনাস’ল থেকে ছুরাসহ জসিমকে আটক করেন। আর সারোয়ারকে নিয়ে যান সরাইল উপজেলা স্বাস’্য কমপ্লেক্সে। কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন সারোয়ার আরো আগেই মারা গেছেন। জসিমের দেয়া তথ্যানুসারে ঘটনার রাতেই আল আমিনকে গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশ। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, ওরা তিনজনই পেশাদার অটোরিকশা ছিনতাই চক্রের সদস্য। এরা এখানে অতীতে ঘটে যাওয়া একাধিক ছিনতাই ও হত্যার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে প্রশাসন। মূলত চুরি করা রিকশার টাকার বন্টনের বিরোধেই সারোয়ারকে খুন করেছে আল আমিন আর জসিম। তাদের বিরূদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় খবর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল

fapjunk
© All rights reserved ©
Theme Developed BY XYZ IT SOLUTION

ছিনতাইয়ের টাকা বন্টনের দ্বন্ধেই খুন হয়েছে সারোয়ার

Update Time : 05:39:50 pm, Monday, 1 April 2024

মাহবুব খান বাবুল, সরাইল থেকেঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নরসিংসার গ্রামের নুরূ মিয়ার ছেলে জসিম উদ্দিন (৩৭) পেশাদার অটোরিকশা চুার/ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছিনতাইয়ের কাজে ভাড়া যায় সে। বিজয়নগরের আল আমিন (৩৩) ও খাঁটিহাতা গ্রামের লাল খাঁ ওরফে সারোয়ার (২৬) একই চক্রের সদস্য। তারা তিন জনে মিলেই সরাইলের বিভিন্ন জায়গায় অটোরিকশা ছিনতাই করতো। সম্প্রতি একটি রিকশা চুরির পর বিক্রি টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়েই সারোয়ারের সাথে তাদের দ্বন্ধ হয়। আর এই দ্বদ্ধের কারণেই সারোয়ারকে নির্মমভাবে ছুরিকাঘাত করে খুন করেছে আল আমিন ও জসিম। গত শনিবার তারা আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই নুর নবী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, সারোয়ার হত্যার পর গ্রেপ্তারকৃত আল আমিন ও জসিমকে গ্রেপ্তার করে সরাইল থানা পুলিশ। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরূত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সেই সাথে তারা সারোয়ার হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে নেপথ্যের কারণও ব্যাখ্যা করেছে আদালতে। মূলত তারা তিন জনই অটোরিকশা ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। জসিম বর্তমানে সরাইল সদরের সৈয়দটুলা গ্রামের হাফিজটুলায় বসবাস করছে। আল আমিন বড্ডাপাড়ায় হাফিজ উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকে। তারা তিন জনের চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অটোরিকশা চুরি/ ছিনতাই করছে। গত দুই মাস আগে তারা সরাইলের রবিন মিয়ার গ্যারেজ থেকে একটি অটোরিকশা চুরি করে। ওই রিকশাটি ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে। এর মধ্যে ২০ হাজার টাকা তিন জনে ভাগ করে নেয়। বাকি ২০ হাজার টাকা জসিম ও আল আমিনের কাছে থেকে যায়। বাকি ২০ হাজার ভাগ চাই সারোয়ার। দেম দিচ্ছি বলে সারোয়ারকে ঘুরাতে থাকে জসিমরা। এক পর্যায়ে সারোয়ার বাকি টাকার ভাগ দ্রূত না দিলে রিকশা চুরির বিষয়টি ফাঁস করে দিবে বলে আল আমিনকে হুমকি দেয়।

তারা ভাবে এক চুরির ঘটনা জানাজানি হলে এই পর্যন্ত যত চুরি/ছিনতাই করেছে সব বেরিয়ে যাবে। আর তখনই চুরি ফাঁস করা রোধে পরিকল্পনা করতে থাকে আল আমিন আর জসিম। শুধু ফাঁস রোধ নয়, তারা চির দিনের জন্য স্বাক্ষীকে শেষ করার পরিকল্পনা আটে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গত শুক্রবার তারা সারোয়ারকে আল আমিনের বাসায় দাওয়াত করে। রাত ৯টার পর সারোয়ারসহ তিনজন এক সাথে অটোরিকশায় করে সরাইলের উদ্যেশ্যে রওনা দেয়। বড্ডা পাড়ায় আল আমিনের বাসায় খাওয়া শেষ করে হাঁটতে রাস্তায় বের হয়। রাত তখন ১০ টা ২০ মিনিট। তারা তিনজনই নাথপাড়া কামার হাটি এলাকার নির্জন স’ানে। সেখানে বাকি ২০ হাজার টাকার ভাগের কথা বলায় সারোয়ারের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ায় আল আমিন। এক পর্যায়ে পূর্ব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে কোমর থেকে ছুরা বের করে আল আমিন সারোয়ারের বুকে হাতে ও পেছনের দিকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে।

এ সময় আল আমিনকে সহায়তা করে জসিম। রক্তাক্ত অবস’ায় সারোয়ার মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ছুরাটি জসিমের হাতে দিয়ে ঘটনাস’ল থেকে সটকে পড়ে আল আমিন। সারোয়ারের আর্তচিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন দৌঁড়ে এসে ঘটনাস’ল থেকে ছুরাসহ জসিমকে আটক করেন। আর সারোয়ারকে নিয়ে যান সরাইল উপজেলা স্বাস’্য কমপ্লেক্সে। কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন সারোয়ার আরো আগেই মারা গেছেন। জসিমের দেয়া তথ্যানুসারে ঘটনার রাতেই আল আমিনকে গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশ। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, ওরা তিনজনই পেশাদার অটোরিকশা ছিনতাই চক্রের সদস্য। এরা এখানে অতীতে ঘটে যাওয়া একাধিক ছিনতাই ও হত্যার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে প্রশাসন। মূলত চুরি করা রিকশার টাকার বন্টনের বিরোধেই সারোয়ারকে খুন করেছে আল আমিন আর জসিম। তাদের বিরূদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।