Dhaka ০২:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
News Title :
সাহিত্য একাডেমির বৈশাখী উৎসবের চতুর্থ দিনে মুজিবনগর দিবস পালন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত দেওড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘এক্স স্কাউট রি-ইউনিয়ন’ আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-২৪ সরাইলে চেয়ারম্যান পদে ১১ জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা সরাইলে ২৩ রোগী পেল ১৮৪০০০ টাকা বাবার সেই চিঠি শুধুই মনে —–আল আমীন শাহীন জমে ওঠেছে সরাইলের ঈদ বাজার‘আলিয়া’ নিয়ে টানাটানি সরাইলে ১৪ কেজি গাঁজাসহ ২ কারবারী গ্রেপ্তার ব্রাহ্মণবাড়ি়য়া জেলা কাজী সমিতির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা ও ৩ জনকে জেল প্রদান

চিকিৎসা দেয়ার বৈধতা নেই তবু তিনি চিকিৎসক ঔষধ প্রশাসনের হেয়ালিপনায় ফার্মেসিতে মিলছে স্কফ ও পেথিডাইন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৫৬:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১৭৭ Time View

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। সৃষ্টির পর থেকেই মানুষ নানান ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। রোগ সারাবার জন্য মানুষ নানান রকম চেষ্টা করে থাকে। এক সময় মানুষ কবিরাজি চিকিৎসায় নির্ভর ছিল যা এখনো বিদ্যমান। তবে আধুনিক সভ্যতায় এলোপ্যাথি ঔষধের বিকল্প নেই। আমাদের দেশেও আধুনিক চিকিৎসার প্রসার ঘটেছে বহুকাল আগে থেকে। এলোপ্যাথি চিকিৎসায় পারদর্শী হতে হলে চিকিৎসকগণ চিকিৎসাশাস্ত্র কব্জা করার জন্য নিরলস পরিশ্রমের ফলে অর্জন করার চেষ্টা করে থাকে। এসব চিকিৎসা ব্যবস্থাকে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিজেদের বলয়ে আটকে রেখে সাধারণ মানুষকে বন্দী করে রেখেছে। গ্রামের সহজ সরল মানুষদের বোকা বানানোতে তাদের জুড়ি নেই। অনুমোদিত কাগজপত্র ছাড়াই গ্রামের বাজারগুলোতে ফার্মেসি খুলে ভাওতাবাজি করে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা যায় ফার্মেসি দিতে হলে প্রথমেই তাকে এসএসসি পাস হতে হবে, ফার্মেসি কোর্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সার্টিফিকেট অর্জন করতে হবে, তারপর তাকে ড্রাগ লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে, ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে, ফার্মেসিতে চিকিৎসা সেবা দিতে হলে তাকে ন্যুনতম এলএমএএফ হতে হবে, এছাড়া বিকল্প নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের পয়াগ নরসিংসার বোর্ড অফিস বাজারে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। ইয়াছিন আরাফাত মেডিকেল হলের মালিক ইয়াছিন আরাফাত। তিনি গত তিন বছর যাবৎ অবাধে ফার্মেসি ও চিকিৎসা ব্যবসা করে যাচ্ছেন। তিনি এসএসসি পাস করেননি, তার ঔষধ ফার্মেসি কোর্স করা হয়নি, ড্রাগ লাইসেন্স নেই এবং চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য বৈধ কোন কাগজপত্র নেই, এলএমএএফ কোর্স করা নেই তবুও তিনি নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে তার ফার্মেসিতে অবাধে “স্কফ” নামক মাদকজাত দ্রব্য, ব্যাথানাশক পেথিডাইন ইনজেকশন বিক্রি করছে। নিয়মকানুন না জানার কারণে তিনি মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ হরহামেশাই বিক্রি করে যাচ্ছেন যার ফলে সেবার পরিবর্তে মানুষের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বেশি। ইয়াছিন আরাফাত কবে এসএসসি পাস করেছেন জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন তার মনে নেই। আপনি ফার্মেসি কোর্স করেছেন? এলএমএএফ কোর্স করেছেন? তিনি বলেন কোনটাই করা হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই তার ড্রাগ লাইসেন্স ও ট্রেড লাইসেন্স না পাওয়ার কথা তবু তিনি দাবি করে বলেন এসব কাগজপত্র বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতি (বিসিডিএস) ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখায় জমা দিয়েছেন। সেখানে কেন জমা দিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লাইসেন্স পাওয়ার জন্য। বিসিডিএস কর্তপক্ষ লাইসেন্স দেয়ার এখতিয়ার রাখে না, আপনি কেন সেখানে দিলেন, “স্কফ”, পেথিডাইনসহ মেয়াদোর্ত্তীণ ঔষধ কেন বিক্রি করছেন এসব প্রশ্নে তিনি নিশ্চুপ থাকেন। বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু কাউসার বলেন, উপরোল্লেখিত কাগজপত্র ছাড়া কেউ কোন ফার্মেসি পরিচালনা করার সুযোগ নেই। ইয়াছিন আরাফাত দাবি করেছেন ফার্মেসি ব্যবসা এবং চিকিৎসা সেবা পরিচালনায় লাইসেন্সের জন্য বিসিডিএস অফিসে কাগজপত্র জমা দিয়েছেন, আপনারা কি লাইসেন্স দেয়ার এখতিয়ার রাখেন এমন প্রশ্নের জবাবে আবু কাউছার বলেন, লাইসেন্স দেয়ার সুযোগ আমাদের নেই। ইয়াছিন আরাফাত নামে কোন ব্যক্তি আমাদের এখানে ফার্মেসি কোর্স করেননি, তার কোন কাগজপত্র আমাদের কাছে জমা পড়েনি। বিষয়টি নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. শেখ আহসান উল্লাহ্ বলেন, ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া এবং বিভিন্ন কোর্স না করে ফার্মেসি ও চিকিৎসা সেবা পরিচালনা করা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, মাদকজাত দ্রব্য “স্কফ” এবং পেথিডাইনসহ সকল প্রকার অবৈধ ঔষধ ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ রাখা সম্পূর্ণ বেআইনি। ইয়াছিন আরাফাত গত তিন বছর যাবৎ অবৈধভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছেন তার বিরুদ্ধে আপনাদের পদক্ষেপ কী প্রশ্ন করা হলে তিনি গতানুগতিকভাবেই বলেন, আমরা অচিরেই এসব বিষয়ে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিব। আপনাকে বিষয়টি আরো পনেরো দিন পূর্বে জানানো হয়েছিল সে বিষয়ে আপনারা কোন পদক্ষেপ নেন নি কেন প্রশ্ন করা হলে তিনি জেলা প্রশানের অসহযোগিতার কথা বলেন, তিনি বলেন, আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েও পাইনা তাই আমরা সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নিতে পারিনা।

সোহেল আহাদ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় খবর

সাহিত্য একাডেমির বৈশাখী উৎসবের চতুর্থ দিনে মুজিবনগর দিবস পালন

চিকিৎসা দেয়ার বৈধতা নেই তবু তিনি চিকিৎসক ঔষধ প্রশাসনের হেয়ালিপনায় ফার্মেসিতে মিলছে স্কফ ও পেথিডাইন

Update Time : ০৪:৫৬:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২২

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। সৃষ্টির পর থেকেই মানুষ নানান ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। রোগ সারাবার জন্য মানুষ নানান রকম চেষ্টা করে থাকে। এক সময় মানুষ কবিরাজি চিকিৎসায় নির্ভর ছিল যা এখনো বিদ্যমান। তবে আধুনিক সভ্যতায় এলোপ্যাথি ঔষধের বিকল্প নেই। আমাদের দেশেও আধুনিক চিকিৎসার প্রসার ঘটেছে বহুকাল আগে থেকে। এলোপ্যাথি চিকিৎসায় পারদর্শী হতে হলে চিকিৎসকগণ চিকিৎসাশাস্ত্র কব্জা করার জন্য নিরলস পরিশ্রমের ফলে অর্জন করার চেষ্টা করে থাকে। এসব চিকিৎসা ব্যবস্থাকে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিজেদের বলয়ে আটকে রেখে সাধারণ মানুষকে বন্দী করে রেখেছে। গ্রামের সহজ সরল মানুষদের বোকা বানানোতে তাদের জুড়ি নেই। অনুমোদিত কাগজপত্র ছাড়াই গ্রামের বাজারগুলোতে ফার্মেসি খুলে ভাওতাবাজি করে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা যায় ফার্মেসি দিতে হলে প্রথমেই তাকে এসএসসি পাস হতে হবে, ফার্মেসি কোর্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সার্টিফিকেট অর্জন করতে হবে, তারপর তাকে ড্রাগ লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে, ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে, ফার্মেসিতে চিকিৎসা সেবা দিতে হলে তাকে ন্যুনতম এলএমএএফ হতে হবে, এছাড়া বিকল্প নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের পয়াগ নরসিংসার বোর্ড অফিস বাজারে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। ইয়াছিন আরাফাত মেডিকেল হলের মালিক ইয়াছিন আরাফাত। তিনি গত তিন বছর যাবৎ অবাধে ফার্মেসি ও চিকিৎসা ব্যবসা করে যাচ্ছেন। তিনি এসএসসি পাস করেননি, তার ঔষধ ফার্মেসি কোর্স করা হয়নি, ড্রাগ লাইসেন্স নেই এবং চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য বৈধ কোন কাগজপত্র নেই, এলএমএএফ কোর্স করা নেই তবুও তিনি নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে তার ফার্মেসিতে অবাধে “স্কফ” নামক মাদকজাত দ্রব্য, ব্যাথানাশক পেথিডাইন ইনজেকশন বিক্রি করছে। নিয়মকানুন না জানার কারণে তিনি মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ হরহামেশাই বিক্রি করে যাচ্ছেন যার ফলে সেবার পরিবর্তে মানুষের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বেশি। ইয়াছিন আরাফাত কবে এসএসসি পাস করেছেন জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন তার মনে নেই। আপনি ফার্মেসি কোর্স করেছেন? এলএমএএফ কোর্স করেছেন? তিনি বলেন কোনটাই করা হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই তার ড্রাগ লাইসেন্স ও ট্রেড লাইসেন্স না পাওয়ার কথা তবু তিনি দাবি করে বলেন এসব কাগজপত্র বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতি (বিসিডিএস) ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখায় জমা দিয়েছেন। সেখানে কেন জমা দিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লাইসেন্স পাওয়ার জন্য। বিসিডিএস কর্তপক্ষ লাইসেন্স দেয়ার এখতিয়ার রাখে না, আপনি কেন সেখানে দিলেন, “স্কফ”, পেথিডাইনসহ মেয়াদোর্ত্তীণ ঔষধ কেন বিক্রি করছেন এসব প্রশ্নে তিনি নিশ্চুপ থাকেন। বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু কাউসার বলেন, উপরোল্লেখিত কাগজপত্র ছাড়া কেউ কোন ফার্মেসি পরিচালনা করার সুযোগ নেই। ইয়াছিন আরাফাত দাবি করেছেন ফার্মেসি ব্যবসা এবং চিকিৎসা সেবা পরিচালনায় লাইসেন্সের জন্য বিসিডিএস অফিসে কাগজপত্র জমা দিয়েছেন, আপনারা কি লাইসেন্স দেয়ার এখতিয়ার রাখেন এমন প্রশ্নের জবাবে আবু কাউছার বলেন, লাইসেন্স দেয়ার সুযোগ আমাদের নেই। ইয়াছিন আরাফাত নামে কোন ব্যক্তি আমাদের এখানে ফার্মেসি কোর্স করেননি, তার কোন কাগজপত্র আমাদের কাছে জমা পড়েনি। বিষয়টি নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. শেখ আহসান উল্লাহ্ বলেন, ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া এবং বিভিন্ন কোর্স না করে ফার্মেসি ও চিকিৎসা সেবা পরিচালনা করা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, মাদকজাত দ্রব্য “স্কফ” এবং পেথিডাইনসহ সকল প্রকার অবৈধ ঔষধ ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ রাখা সম্পূর্ণ বেআইনি। ইয়াছিন আরাফাত গত তিন বছর যাবৎ অবৈধভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছেন তার বিরুদ্ধে আপনাদের পদক্ষেপ কী প্রশ্ন করা হলে তিনি গতানুগতিকভাবেই বলেন, আমরা অচিরেই এসব বিষয়ে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিব। আপনাকে বিষয়টি আরো পনেরো দিন পূর্বে জানানো হয়েছিল সে বিষয়ে আপনারা কোন পদক্ষেপ নেন নি কেন প্রশ্ন করা হলে তিনি জেলা প্রশানের অসহযোগিতার কথা বলেন, তিনি বলেন, আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েও পাইনা তাই আমরা সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নিতে পারিনা।

সোহেল আহাদ