Dhaka 11:18 am, Sunday, 13 October 2024
News Title :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডায়াবেটিক সমিতির কমিটি গঠন ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইন কলেজের পক্ষ থেকে সাবেক মন্ত্রী হারুন আল রশিদকে ফুলেল শুভেচ্ছা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশ্ব শিশু দিবসে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নারী ও যুব অধিকার অর্জনে সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় সেবা প্রদানকারীদের সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভূয়া সাংবাদিক ও অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধে কমিটি গঠন প্রাইম বাংলা নিউজ: জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল লিখিত চুক্তি করেও ধার নেয়া টাকা নেয়নি মর্মে অস্বীকার, সরাইলে ভুক্তভোগীর আদালতে মামলা দায়ের ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস পালিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রফেসর ডাঃ ইব্রাহিম এর ৩৫ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত

উৎকোচ ছাড়া মিলে না কৃষি যন্ত্র! ক্ষুদ্ধ আওয়ামীলীগ নেতারা

  • Reporter Name
  • Update Time : 09:25:15 am, Sunday, 13 November 2022
  • 90 Time View

কৃষি যন্ত্র-ফাইল ছবি

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ

কৃষি ও কৃষকের স্বার্থে সরকার ভর্তুকি ও সময় দিয়ে আমন মৌসুমে কৃষকদের দিচ্ছেন কম্বাইন হারভেষ্টার, সিডার, পাওয়ার থ্রেসার নামের যন্ত্র। সহজে স্বল্প সময়ে ধান কেটে জমিতেই ধান ছুঁড়ার সুবিধা রয়েছে এই যন্ত্রে। কিন্তু সরাইলের একাধিক কৃষক বলছেন, মোটা অংকের উৎকোচ ছাড়া মিলে না এই যন্ত্র। টাকা দিলে কৃষক নয় যে কেউই পাচ্ছেন এই যন্ত্র। বারপাইকা গ্রামের কৃষক আবুল কাসেম গতকাল বলেই ফেললেন যন্ত্রটি পেতে অফিস খরচ দিতে হয়েছে দেড় লাখ টাকা। কেউ রেহায় পেয়েছে বলে মনে হয়নি। উৎকোচের টাকা ২-৩ ভাগে ভাগাভাগির খবরও চাউর হচ্ছে কৃষকদের মুখে। কর্তৃপক্ষ বলছেন, উৎকোচ নয়। কিছু অফিস খরচ নিয়ে থাকেন অফিস সহকারী আসাদুজ্জামান। এমন সব অনিয়মের বিরূদ্ধে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতারাও। অনুসন্ধানে একাধিক কৃষক ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সরকার অনেক মূল্যবান এই যন্ত্র বিতরণে কৃষকদের উল্লেখযোগ্য সুবিধা দিচ্ছেন। নামমাত্র ডাউন পেমেন্ট নিয়ে যন্ত্র দিচ্ছেন। মাসিক কিস্তির সুবিধা দিয়ে লম্বা সময়ে টাকা দিচ্ছেন কৃষকরা। নিশ্চিন্তে স্বল্প সময়ে আরাম আয়েশে ধান কাটছেন। জমিতেই ছুঁড়ছেন ধান। অন্যের জমির ধান কেটে টাকা কামায় করছেন। প্রতি বছরের আমন মৌসুমে সরাইল উপজেলায় ৩০-৩৩ জন কৃষককে দেয়া হয় এই যন্ত্র। কিন্তু যন্ত্র পাওয়ার তালিকা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। শুক্রবার সকালে সরাইলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৩-১৮ নম্বর ক্রমিকের ৬ জন কৃষককে কম্বাইন হারভেষ্টার প্রদান করা হয়েছে। বিতরণ শেষে অরূয়াইল ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের কৃষক আবুল কাসেম বলেন, যন্ত্রটি পেতে কত জায়গায় যেতে হয়েছে বলতে পারব না। তবে প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে দেড় লাখ টাকা উৎকোচ দিতে হয়েছে। উনারা বলেছেন এটা নাকি অফিস খরচ। ১-১২ নম্বর সিরিয়ালের কাউকে না দিয়ে ১৩ নম্বর থেকে ৬ জনকে কেন দিলেন? বুঝলাম না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো একাধিক কৃষক বলেন, যদিও যন্ত্র গুলো সরকার কৃষকের জন্য দিচ্ছেন। প্রকৃত কৃষক পাচ্ছে কিনা সেইটা কি কেউ খতিয়ে দেখেছেন? চাহিত উৎকোচের বিনিময়ে যে কেউ বাগিয়ে নিচ্ছেন যন্ত্র। একই ব্যক্তি কৌশলে অন্য নাম ব্যবহার করে উৎকোচ দিয়ে যন্ত্র নিচ্ছেন। এলাকায় ও এলাকার বাহিরে সুবিধা বুঝে বিক্রিও করে দিচ্ছেন। গত দুই বছরের বিতরণকৃত যন্ত্র গুলোর কয়টি এলাকায় আছে? এই তথ্য কি কৃষি অফিসের কাছে আছে? উৎকোচের টাকা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাসহ ২-৩ ভাগে ভাগ হয়ে আসছে। এ তালিকায় রয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের পদধারী প্রভাবশালী নেতাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দফতরের একাধিক ব্যক্তি জানান, যন্ত্র প্রাপ্তির জন্য নিজ ইউনিয়নের ব্লক সুপারভাইজার স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্র লাগে। সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নিজের ইচ্ছায় শুক্রবার বন্দের দিন বিতরণ করে ফেলেছেন। পরে পেছনের তারিখে তাদের স্বাক্ষর নিবেন। অফিস সহকারী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, অফিস খরচ ও ষ্ট্যাম্পের জন্য কেউ খুশি হয়ে দিলে ১/ দেড় হাজার টাকা নিয়ে থাকি। এ বিষয়ে সরাইল সদর ইউপি আ’লীগের আহবায়ক মো. কায়কোবাদ বলেন, কৃষকের জন্য ভর্তুকি দিলেও সরকারের প্রচার নেই। প্রকৃত কৃষক যন্ত্র পাচ্ছে না। সুবিধা পেয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়িকে দেয়া হচ্ছে। বঞ্ছিত হচ্ছে কৃষক। উপজেলা আ’লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট আব্দুর রাশেদ বলেন, উৎকোচের বিনিময়ে মনগড়া মত যন্ত্র গুলি বিতরণ করছেন। সরকারের কথা বলছেন না। প্রকৃত কৃষকরা বারবার বঞ্ছিত হচ্ছে। তারা যন্ত্র গুলোর ধারে কাছেও আসতে পারছে না। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. একরাম হোসেন বলেন, ১৩ থেকে ১৮ নম্বর পর্যন্ত এমপি মহোদয়ের অনুমোদন করানো। তাই তাদেরকে প্রথম দিতে হয়েছে। বড় অংকের টাকা লেনদেনের বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে আমি কোম্পানীর কাছ থেকে একটা অনারিয়াম পেয়ে থাকি। কৃষক পরিচয়ের সকল কাগজপত্র যাচাইবাচাই করেই দিয়ে থাকি। ব্যবসা ভাল হলে। চাহিদা থাকলে একই কৃষক একাধিকবার যন্ত্র পেতে পারে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডায়াবেটিক সমিতির কমিটি গঠন

fapjunk
© All rights reserved ©
Theme Developed BY XYZ IT SOLUTION

উৎকোচ ছাড়া মিলে না কৃষি যন্ত্র! ক্ষুদ্ধ আওয়ামীলীগ নেতারা

Update Time : 09:25:15 am, Sunday, 13 November 2022

মাহবুব খান বাবুলঃ সরাইল থেকেঃ

কৃষি ও কৃষকের স্বার্থে সরকার ভর্তুকি ও সময় দিয়ে আমন মৌসুমে কৃষকদের দিচ্ছেন কম্বাইন হারভেষ্টার, সিডার, পাওয়ার থ্রেসার নামের যন্ত্র। সহজে স্বল্প সময়ে ধান কেটে জমিতেই ধান ছুঁড়ার সুবিধা রয়েছে এই যন্ত্রে। কিন্তু সরাইলের একাধিক কৃষক বলছেন, মোটা অংকের উৎকোচ ছাড়া মিলে না এই যন্ত্র। টাকা দিলে কৃষক নয় যে কেউই পাচ্ছেন এই যন্ত্র। বারপাইকা গ্রামের কৃষক আবুল কাসেম গতকাল বলেই ফেললেন যন্ত্রটি পেতে অফিস খরচ দিতে হয়েছে দেড় লাখ টাকা। কেউ রেহায় পেয়েছে বলে মনে হয়নি। উৎকোচের টাকা ২-৩ ভাগে ভাগাভাগির খবরও চাউর হচ্ছে কৃষকদের মুখে। কর্তৃপক্ষ বলছেন, উৎকোচ নয়। কিছু অফিস খরচ নিয়ে থাকেন অফিস সহকারী আসাদুজ্জামান। এমন সব অনিয়মের বিরূদ্ধে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতারাও। অনুসন্ধানে একাধিক কৃষক ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সরকার অনেক মূল্যবান এই যন্ত্র বিতরণে কৃষকদের উল্লেখযোগ্য সুবিধা দিচ্ছেন। নামমাত্র ডাউন পেমেন্ট নিয়ে যন্ত্র দিচ্ছেন। মাসিক কিস্তির সুবিধা দিয়ে লম্বা সময়ে টাকা দিচ্ছেন কৃষকরা। নিশ্চিন্তে স্বল্প সময়ে আরাম আয়েশে ধান কাটছেন। জমিতেই ছুঁড়ছেন ধান। অন্যের জমির ধান কেটে টাকা কামায় করছেন। প্রতি বছরের আমন মৌসুমে সরাইল উপজেলায় ৩০-৩৩ জন কৃষককে দেয়া হয় এই যন্ত্র। কিন্তু যন্ত্র পাওয়ার তালিকা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। শুক্রবার সকালে সরাইলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৩-১৮ নম্বর ক্রমিকের ৬ জন কৃষককে কম্বাইন হারভেষ্টার প্রদান করা হয়েছে। বিতরণ শেষে অরূয়াইল ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের কৃষক আবুল কাসেম বলেন, যন্ত্রটি পেতে কত জায়গায় যেতে হয়েছে বলতে পারব না। তবে প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে দেড় লাখ টাকা উৎকোচ দিতে হয়েছে। উনারা বলেছেন এটা নাকি অফিস খরচ। ১-১২ নম্বর সিরিয়ালের কাউকে না দিয়ে ১৩ নম্বর থেকে ৬ জনকে কেন দিলেন? বুঝলাম না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো একাধিক কৃষক বলেন, যদিও যন্ত্র গুলো সরকার কৃষকের জন্য দিচ্ছেন। প্রকৃত কৃষক পাচ্ছে কিনা সেইটা কি কেউ খতিয়ে দেখেছেন? চাহিত উৎকোচের বিনিময়ে যে কেউ বাগিয়ে নিচ্ছেন যন্ত্র। একই ব্যক্তি কৌশলে অন্য নাম ব্যবহার করে উৎকোচ দিয়ে যন্ত্র নিচ্ছেন। এলাকায় ও এলাকার বাহিরে সুবিধা বুঝে বিক্রিও করে দিচ্ছেন। গত দুই বছরের বিতরণকৃত যন্ত্র গুলোর কয়টি এলাকায় আছে? এই তথ্য কি কৃষি অফিসের কাছে আছে? উৎকোচের টাকা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাসহ ২-৩ ভাগে ভাগ হয়ে আসছে। এ তালিকায় রয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের পদধারী প্রভাবশালী নেতাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দফতরের একাধিক ব্যক্তি জানান, যন্ত্র প্রাপ্তির জন্য নিজ ইউনিয়নের ব্লক সুপারভাইজার স্বাক্ষরিত একটি প্রত্যয়নপত্র লাগে। সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নিজের ইচ্ছায় শুক্রবার বন্দের দিন বিতরণ করে ফেলেছেন। পরে পেছনের তারিখে তাদের স্বাক্ষর নিবেন। অফিস সহকারী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, অফিস খরচ ও ষ্ট্যাম্পের জন্য কেউ খুশি হয়ে দিলে ১/ দেড় হাজার টাকা নিয়ে থাকি। এ বিষয়ে সরাইল সদর ইউপি আ’লীগের আহবায়ক মো. কায়কোবাদ বলেন, কৃষকের জন্য ভর্তুকি দিলেও সরকারের প্রচার নেই। প্রকৃত কৃষক যন্ত্র পাচ্ছে না। সুবিধা পেয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়িকে দেয়া হচ্ছে। বঞ্ছিত হচ্ছে কৃষক। উপজেলা আ’লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট আব্দুর রাশেদ বলেন, উৎকোচের বিনিময়ে মনগড়া মত যন্ত্র গুলি বিতরণ করছেন। সরকারের কথা বলছেন না। প্রকৃত কৃষকরা বারবার বঞ্ছিত হচ্ছে। তারা যন্ত্র গুলোর ধারে কাছেও আসতে পারছে না। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. একরাম হোসেন বলেন, ১৩ থেকে ১৮ নম্বর পর্যন্ত এমপি মহোদয়ের অনুমোদন করানো। তাই তাদেরকে প্রথম দিতে হয়েছে। বড় অংকের টাকা লেনদেনের বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে আমি কোম্পানীর কাছ থেকে একটা অনারিয়াম পেয়ে থাকি। কৃষক পরিচয়ের সকল কাগজপত্র যাচাইবাচাই করেই দিয়ে থাকি। ব্যবসা ভাল হলে। চাহিদা থাকলে একই কৃষক একাধিকবার যন্ত্র পেতে পারে।