Dhaka 4:46 pm, Saturday, 18 May 2024
News Title :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ম্যারাথন প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত বিএনপির আমলে ঋণ খেলাপির তালিকা সবচেয়ে বেশি ছিল : আইনমন্ত্রী দাঙ্গা ভুলে শান্তির দাবীতে সরাইলে শিশু শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন সরাইলে আ’লীগ নেতাসহ ৩০ নদী দখলদার চিহ্নিত ১৫ দিনের মধ্যে উচ্ছেদের নোটিশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত সরাইলে শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহণে স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতামূলক কর্মশালা বিজয়নগরে ভূমিদস্যু ইউনুসের অত্যাচারে টিকতে না পেরে থানায় অভিযোগ আশুগঞ্জে দুর্নীতি বিরোধী রচনা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত সরাইলে অগ্নিকান্ডে ১৫ দোকান পুড়ে ছাঁই দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি সরাইলের হেমেন্দ্র এখন মো. হিমেল

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন রাত পোহালেই ভোট লড়াই হবে দ্বিমুখী,নেপথ্যে–

  • Reporter Name
  • Update Time : 08:10:12 pm, Saturday, 6 January 2024
  • 41 Time View

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন রাত পোহালেই ভোট

মাহবুব খান বাবুল, সরাইল থেকেঃ
অনেক আলোচনা সমালোচনার আসন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ)। এই আসনে এক বছরে অনুষ্ঠিত হয়েছে তিনটি জাতীয় নির্বাচন। সর্বশেষ উপনির্বাচনের গন্ধ না যেতেই আবারও জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৪ খ্রি.। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর থেকে এই আসনে এমপি পদে কাগজে কলমে ৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। ভোটের মাঠে পোষ্টার, লিফলেট, উঠান বৈঠক, পথসভা ও মিছিলে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৪ জন প্রার্থীকে। লাঙ্গল ছাড়া নেই কোন জাতীয় প্রতীক। কড়া নাড়ছে নির্বাচনের দিনক্ষণ। রাত পোহালেই ভোট। সবশেষে সাধারণ ভোটার থেকে শুরূ করে বিভিন্ন সেক্টরের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের ধারণা এই আসনে লড়াইটা হবে দ্বিমূখী। নেপথ্যে রয়েছে নানা কারণ ও সমীকরণ। দু’জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী। একজন হচ্ছেন মহাজোটের সাবেক এমপি জাপা’র রওশন পন্থী নেতা জিয়াউল হক মৃধা (ঈগল)। আরেকজন হচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহসভাপতি মঈন উদ্দিন মঈন (কলারছড়া)।

সরজমিন অনুসন্ধান, দলীয় ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় এই আসনে মনোনয়নপত্র জমা থেকে প্রত্যাহার পর্যন্ত নানা নাটকীয়তা চোখে পড়েছে। মনোনয়নপত্র ক্রয়, জমা আর প্রত্যাহারে কেমন জানি একটা হ-য-ব-র-ল অবস্থাও দেখা গেছে। সর্বশেষ এই আসনের নির্বাচিত বর্তমান এমপি অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুর নৌকা প্রতীক প্রত্যাহার ভোটারসহ সকল মহলকে অবাক করেছে। দলীয় সিদ্ধান্ত মাথা পেতে মেনে নিয়েছেন সাজু। জাপা’র এড. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া ও এড. আব্দুল হামিদ দুইজনই এই আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিলে থমকে যায় ভোটাররা। রেজাউল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনেও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। পরে দলের সিদ্ধান্তে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন মহাজোটের মনোনয়নে এই আসনে দুইবার নির্বাচনে অংশ নেয়া এড. আব্দুল হামিদ। রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ ভাবনায় পড়ে যায়। তাহলে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী কে? নৌকা বিহীন মাঠে কে হবে আ’লীগের জোট বা শরিক।

এলাকায় আবারও আলোচনায় আসেন জামাই-শ্বশুর। তাহলে লড়াইটা কী হবে জামাই শ্বশুরে? না তা হয়নি। সরাইল ও আশুগঞ্জ আ’লীগ ও অঙ্গসংগঠনের একাংশের নেতা কর্মীরা ঝুঁকে পড়েন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আ’লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈনের দিকে। কিছু সময় পর সরাইল উপজেলা আ’লীগের সভাপতি এড. নাজমুল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম আশুগঞ্জ এলাকার একটি হোটেলে সভা ডাকেন। সেখানে সরাইল উপজেলার ৯ ইউনিয়নের ১৭ জন সভাপতি সম্পাদক হাজির হয়। ওই সভায় বলা হয় বিশেষ কারণে আ’লীগকে জাপার রওশন পন্থী নেতা মৃধার (ঈগল) পক্ষে কাজ করতে হবে। ৫ ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ একমত পোষণ করলেও বেঁকে বসেন ৪ ইউপি আ’লীগের নেতারা। সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্তের কথা বলে সভা শেষ করে আ’লীগ। পাল্লা ভারী হতে থাকে মৃধা ও মঈনের। আ’লীগের এক সময়ের মহাজোট তথা প্রধান শরিক দল জাপার (জিএম কাদের) রেজাউলের পাল্লায় আ’লীগের কারো দেখা মিলে না। উল্টো লাঙ্গলের পোষ্টারে কেন ‘মহাজোটের সমর্থিত প্রার্থী’ লেখা হলো তা নিয়ে সমালোচনায় নামেন স্থানীয় আ’লীগ। কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়েন রেজাউল।

এ বিষয়ে জাপা’র কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও মহাজোট নেত্রীর কাছে রেজাউল কর্তৃক নালিশের বিষয়টিও চাউর হচ্ছিল নির্বাচনী মাঠে। ২৮ ডিসেম্বরের পর ঘোষণা দিয়ে গোটা নির্বাচনী এলাকার আওয়ামী লীগের একাংশ মৃধার পক্ষে মাঠে নেমে পড়েন। আরেক অংশ নেমে পড়েন মঈন উদ্দিনের পক্ষে। সভা সেমিনার জনসংযোগে ব্যস্ত হয়ে পড়েন উভয় শিবির। মৃধার সাথে রয়েছে জাতীয় পার্টির একাংশের নেতা কর্মী। মৃধা সরাইল-অরূয়াইল সড়ক নির্মাণসহ ১০ বছরে নির্বাচনী এলাকার নানা উন্নয়ন, ভদ্র ও সততাকে তুলে ধরে ভোট চাইছেন। আর মঈন উদ্দিন হারিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের আসনে ৭৫ হাজারেরও অধিক ভোট পেয়েও জিততে জিততে হেরে যাওয়াসহ চেয়ারে না থেকেও মানুষের জন্য কাজ করার চিত্র তুলে ধরছেন ভোটারদের কাছে। বাকি পাঁচ প্রার্থীর কারো পক্ষে প্রকাশ্যে নেই আ’লীগ। তবে জাপা’র একাংশের স্থানীয় নেতা কর্মী লাঙ্গলের পক্ষে কাজ করছেন।

এরশাদ পাগল সাধারণ মানুষের একটা অংশও সায় দিয়েছে জাপা’র ডাকে। সব মিলিয়ে এই মূহুর্তে এখানকার সাধারণ ভোটার ও সচেতন মহলের ধারণা হচ্ছে ঈগল আর কলারছড়ার মধ্যে হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। কেই কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান। এই দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাউকেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। তবে সকলের প্রত্যাশা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। সমাজকর্মী মো. রওশন আলী বলেন, ৭ প্রার্থীর মধ্যে মূল লড়াইটা হবে ঈগল আর কলার মধ্যে। তবে গত বৃহস্পতিবার ঈগলের মিছিলে মানুষের জোয়ার প্রতিপক্ষকে কিছুটা হলেও ভাবনায় ফেলেছে। সরাইল মহিলা কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সাবেক সভাপতি ও প্রেসক্লাবের আহবায়ক মো. আইয়ুব খান বলেন, এই মূহুর্তে নিশ্চিত করে বলা যায় ৭ তারিখে এই আসনের লড়াইটা হবে মৃধা আর মঈন উদ্দিনের মধ্যে। ভোটের মাঠের অবস্থা পরিস্কার বলছে কলা আর ঈগলের খেলার ফলাফর হবে-‘এনিবডি গেইম।’ মৃধার আজকের এই অবস্থান আওয়ামী লীগের সহযোগিতায়। এখনো আ’লীগের সহায়তায়ই তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন। মঈন উদ্দিন ছাত্র রাজনীতি থেকে আজকের এই অবস’ানে ওঠে এসেছেন। দলে তার তার অনেক ত্যাগ রয়েছে।

এখন মৃধা মঈন উদ্দিনের লড়াই দেখতেই চেয়ে আছে সরাইল আশুগঞ্জের মানুষ। প্রসঙ্গত: জিয়াউল হক মৃধা ২০০৮ ও ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে মহাজোট মনোনিত লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে এই আসনে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালেও আ’লীগ এই নৌকা প্রতীক না দিয়ে এই আসনে মহাজোটের প্রধান শরিক জাপাকে ছেড়ে দেয়। ওই নির্বাচনে মৃধার মেয়ের জামাতা রেজাউল ইসলামকে এই আসনে দেয়া হয়েছিল লাঙ্গল প্রতীক। তবে সুবিধা করতে না পেরে মাত্র ২ দিন আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান রেজাউল। ওই নির্বাচনে মৃধা ও মঈন উদ্দিন দুইজনই ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তারা পরাজিত হয়েছিলেন বিএনপি’র প্রার্থী উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার কাছে। এই আসনের অপর প্রার্থীরা হচ্ছেন- ৫ বারের সাবেক এমপি ও প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে মাইনুল হাসান তুষার (সোনালী আঁশ)। এনপিপি’র রাজ্জাক হোসেন (আম), ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান প্রয়াত মুফতি আমিনী হুজুরের ছেলে আবুল হাসানাত আমিনী (মিনার) ও তরিকত ফেডারেশনের ছৈয়দ জাফরূল কুদ্দুছ (ফুলের মালা)।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় খবর

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ম্যারাথন প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন রাত পোহালেই ভোট লড়াই হবে দ্বিমুখী,নেপথ্যে–

Update Time : 08:10:12 pm, Saturday, 6 January 2024

মাহবুব খান বাবুল, সরাইল থেকেঃ
অনেক আলোচনা সমালোচনার আসন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ)। এই আসনে এক বছরে অনুষ্ঠিত হয়েছে তিনটি জাতীয় নির্বাচন। সর্বশেষ উপনির্বাচনের গন্ধ না যেতেই আবারও জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৪ খ্রি.। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর থেকে এই আসনে এমপি পদে কাগজে কলমে ৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। ভোটের মাঠে পোষ্টার, লিফলেট, উঠান বৈঠক, পথসভা ও মিছিলে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৪ জন প্রার্থীকে। লাঙ্গল ছাড়া নেই কোন জাতীয় প্রতীক। কড়া নাড়ছে নির্বাচনের দিনক্ষণ। রাত পোহালেই ভোট। সবশেষে সাধারণ ভোটার থেকে শুরূ করে বিভিন্ন সেক্টরের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের ধারণা এই আসনে লড়াইটা হবে দ্বিমূখী। নেপথ্যে রয়েছে নানা কারণ ও সমীকরণ। দু’জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী। একজন হচ্ছেন মহাজোটের সাবেক এমপি জাপা’র রওশন পন্থী নেতা জিয়াউল হক মৃধা (ঈগল)। আরেকজন হচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহসভাপতি মঈন উদ্দিন মঈন (কলারছড়া)।

সরজমিন অনুসন্ধান, দলীয় ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় এই আসনে মনোনয়নপত্র জমা থেকে প্রত্যাহার পর্যন্ত নানা নাটকীয়তা চোখে পড়েছে। মনোনয়নপত্র ক্রয়, জমা আর প্রত্যাহারে কেমন জানি একটা হ-য-ব-র-ল অবস্থাও দেখা গেছে। সর্বশেষ এই আসনের নির্বাচিত বর্তমান এমপি অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুর নৌকা প্রতীক প্রত্যাহার ভোটারসহ সকল মহলকে অবাক করেছে। দলীয় সিদ্ধান্ত মাথা পেতে মেনে নিয়েছেন সাজু। জাপা’র এড. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া ও এড. আব্দুল হামিদ দুইজনই এই আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিলে থমকে যায় ভোটাররা। রেজাউল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনেও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। পরে দলের সিদ্ধান্তে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন মহাজোটের মনোনয়নে এই আসনে দুইবার নির্বাচনে অংশ নেয়া এড. আব্দুল হামিদ। রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ ভাবনায় পড়ে যায়। তাহলে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী কে? নৌকা বিহীন মাঠে কে হবে আ’লীগের জোট বা শরিক।

এলাকায় আবারও আলোচনায় আসেন জামাই-শ্বশুর। তাহলে লড়াইটা কী হবে জামাই শ্বশুরে? না তা হয়নি। সরাইল ও আশুগঞ্জ আ’লীগ ও অঙ্গসংগঠনের একাংশের নেতা কর্মীরা ঝুঁকে পড়েন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আ’লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈনের দিকে। কিছু সময় পর সরাইল উপজেলা আ’লীগের সভাপতি এড. নাজমুল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম আশুগঞ্জ এলাকার একটি হোটেলে সভা ডাকেন। সেখানে সরাইল উপজেলার ৯ ইউনিয়নের ১৭ জন সভাপতি সম্পাদক হাজির হয়। ওই সভায় বলা হয় বিশেষ কারণে আ’লীগকে জাপার রওশন পন্থী নেতা মৃধার (ঈগল) পক্ষে কাজ করতে হবে। ৫ ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ একমত পোষণ করলেও বেঁকে বসেন ৪ ইউপি আ’লীগের নেতারা। সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্তের কথা বলে সভা শেষ করে আ’লীগ। পাল্লা ভারী হতে থাকে মৃধা ও মঈনের। আ’লীগের এক সময়ের মহাজোট তথা প্রধান শরিক দল জাপার (জিএম কাদের) রেজাউলের পাল্লায় আ’লীগের কারো দেখা মিলে না। উল্টো লাঙ্গলের পোষ্টারে কেন ‘মহাজোটের সমর্থিত প্রার্থী’ লেখা হলো তা নিয়ে সমালোচনায় নামেন স্থানীয় আ’লীগ। কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়েন রেজাউল।

এ বিষয়ে জাপা’র কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও মহাজোট নেত্রীর কাছে রেজাউল কর্তৃক নালিশের বিষয়টিও চাউর হচ্ছিল নির্বাচনী মাঠে। ২৮ ডিসেম্বরের পর ঘোষণা দিয়ে গোটা নির্বাচনী এলাকার আওয়ামী লীগের একাংশ মৃধার পক্ষে মাঠে নেমে পড়েন। আরেক অংশ নেমে পড়েন মঈন উদ্দিনের পক্ষে। সভা সেমিনার জনসংযোগে ব্যস্ত হয়ে পড়েন উভয় শিবির। মৃধার সাথে রয়েছে জাতীয় পার্টির একাংশের নেতা কর্মী। মৃধা সরাইল-অরূয়াইল সড়ক নির্মাণসহ ১০ বছরে নির্বাচনী এলাকার নানা উন্নয়ন, ভদ্র ও সততাকে তুলে ধরে ভোট চাইছেন। আর মঈন উদ্দিন হারিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের আসনে ৭৫ হাজারেরও অধিক ভোট পেয়েও জিততে জিততে হেরে যাওয়াসহ চেয়ারে না থেকেও মানুষের জন্য কাজ করার চিত্র তুলে ধরছেন ভোটারদের কাছে। বাকি পাঁচ প্রার্থীর কারো পক্ষে প্রকাশ্যে নেই আ’লীগ। তবে জাপা’র একাংশের স্থানীয় নেতা কর্মী লাঙ্গলের পক্ষে কাজ করছেন।

এরশাদ পাগল সাধারণ মানুষের একটা অংশও সায় দিয়েছে জাপা’র ডাকে। সব মিলিয়ে এই মূহুর্তে এখানকার সাধারণ ভোটার ও সচেতন মহলের ধারণা হচ্ছে ঈগল আর কলারছড়ার মধ্যে হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। কেই কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান। এই দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাউকেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। তবে সকলের প্রত্যাশা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। সমাজকর্মী মো. রওশন আলী বলেন, ৭ প্রার্থীর মধ্যে মূল লড়াইটা হবে ঈগল আর কলার মধ্যে। তবে গত বৃহস্পতিবার ঈগলের মিছিলে মানুষের জোয়ার প্রতিপক্ষকে কিছুটা হলেও ভাবনায় ফেলেছে। সরাইল মহিলা কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সাবেক সভাপতি ও প্রেসক্লাবের আহবায়ক মো. আইয়ুব খান বলেন, এই মূহুর্তে নিশ্চিত করে বলা যায় ৭ তারিখে এই আসনের লড়াইটা হবে মৃধা আর মঈন উদ্দিনের মধ্যে। ভোটের মাঠের অবস্থা পরিস্কার বলছে কলা আর ঈগলের খেলার ফলাফর হবে-‘এনিবডি গেইম।’ মৃধার আজকের এই অবস্থান আওয়ামী লীগের সহযোগিতায়। এখনো আ’লীগের সহায়তায়ই তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন। মঈন উদ্দিন ছাত্র রাজনীতি থেকে আজকের এই অবস’ানে ওঠে এসেছেন। দলে তার তার অনেক ত্যাগ রয়েছে।

এখন মৃধা মঈন উদ্দিনের লড়াই দেখতেই চেয়ে আছে সরাইল আশুগঞ্জের মানুষ। প্রসঙ্গত: জিয়াউল হক মৃধা ২০০৮ ও ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে মহাজোট মনোনিত লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে এই আসনে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালেও আ’লীগ এই নৌকা প্রতীক না দিয়ে এই আসনে মহাজোটের প্রধান শরিক জাপাকে ছেড়ে দেয়। ওই নির্বাচনে মৃধার মেয়ের জামাতা রেজাউল ইসলামকে এই আসনে দেয়া হয়েছিল লাঙ্গল প্রতীক। তবে সুবিধা করতে না পেরে মাত্র ২ দিন আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান রেজাউল। ওই নির্বাচনে মৃধা ও মঈন উদ্দিন দুইজনই ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তারা পরাজিত হয়েছিলেন বিএনপি’র প্রার্থী উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার কাছে। এই আসনের অপর প্রার্থীরা হচ্ছেন- ৫ বারের সাবেক এমপি ও প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে মাইনুল হাসান তুষার (সোনালী আঁশ)। এনপিপি’র রাজ্জাক হোসেন (আম), ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান প্রয়াত মুফতি আমিনী হুজুরের ছেলে আবুল হাসানাত আমিনী (মিনার) ও তরিকত ফেডারেশনের ছৈয়দ জাফরূল কুদ্দুছ (ফুলের মালা)।